ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক: চিকিৎসা শেষে বাসায় ফেরার পর মাত্র ছয় দিনের ব্যবধানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গত ১৩ নভেম্বর ফের হাসপাতালে ভর্তির পর সিসিইউতে রাখা হয়েছে। এরপর থেকেই তাকে বিদেশে নেয়ার অনুমতি চেয়ে তার পরিবার আবারও সরকারের কাছে চিঠি দিয়েছে। কিন্তু সরকারে পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো সাড়া না পাওয়ায় পদত্যাগের ইঙ্গিত দিয়েছেন দলটির সংসদ সদস্যরা।

বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) জাতীয় সংসদে বিএনপির সাংসদ গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করে বলেন, মানবিক কারণে খালেদা জিয়াকে দুয়েকদিনের মধ্যে জামিন দিয়ে বিদেশে পাঠানো হোক। নচেৎ কিছু একটা হয়ে গেলে এর দায়ভার আওয়ামী লীগকে আজীবন বহন করতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা ৬ জন (বিএনপি দলীয়) এ সংসদে আছি। আমাদের দলীয় সিদ্ধান্ত এমনও হতে পারে, ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) যদি চরম অবস্থায় চলে যায়, তাহলে আমাদের এই সংসদে থাকা সম্ভব নাও হতে পারে। আমি এটাকে শর্ত দিচ্ছি না। এ সময় তার মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এ সময় বুধবার (১৭ নভেম্বর) সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যেরও সমালোচনা করেন তিনি। গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ বলেন, জামিনের বিষয়ে আইনমন্ত্রীর ৪০১ ধারার দীর্ঘ বক্তব্য শুনেছি। গতকাল (বুধবার) প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুনলাম। যা সব দৈনিক পত্রিকায় শিরোনাম হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য নির্বাহী ক্ষমতায় যা করার ছিল তা করেছি। বাকিটুকু আইনের ব্যাপার। বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে নিজের ওপর হামলা-ষড়যন্ত্রের ঘটনাগুলো তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এত বড় অমানবিক যে তাকেও (খালেদা জিয়া) আমরা মানবিকতা দেখিয়েছি।

এ সময় দণ্ডপ্রাপ্ত কয়েকজন নেতার বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার কথাও সংসদকে জানান সিরাজ।

এর আগে দলটির আরেক সংসদ সদস্য মোশারফ হোসেন বলেন, আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া কিডনি, লিভার, ফুসফুস, উচ্চ রক্তচাপসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। প্রধানমন্ত্রী অনেক মানবতা দেখিয়েছেন। আরেকটু মানবতা আমরা প্রত্যাশা করি।

পরে এ বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, আমি এটা নিয়ে পুনরায় কথা বলতে চাই না। আইন যা বলেছে সেই মতে, প্রধানমন্ত্রী মানবিক কারণে নির্দেশ দিয়েছেন। যদিও সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত রেখে জামিন দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের আইনের বইয়ে এটা নাই। ওনারা যদি দেখাতে পারেন। তাহলে আমরা বিবেচনা করতে পারি। কিন্তু ওনারা দেখাতে পারবেন না। আর বিবেচনার প্রশ্নও আসে না।

তিনি বলেন, ওনারা বলেছেন, আ স ম আবদুর রবকে চিকিৎসার জন্য জার্মান পাঠিয়েছিলেন। সেটা কোন ধারায় হয়েছে জানি না। তখন সামরিক আইন ছিল। সেই ধারা তো ফৌজদারি কার্যবিধির সঙ্গে চলে না। ওনারা যথেচ্ছা করেছেন। আজ আইনের শাসন যেখানে আছে, সেখানে আমরা যথেচ্ছা করতে পারি না।

মন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সঠিকভাবে করা হচ্ছে। সেই চিকিৎসায় সন্তুষ্ট কি অসন্তুষ্ট সেটা ওনাদের ব্যাপার। কিন্তু ৪০১ ধারায় নিষ্পত্তি হওয়া বিষয়ে আবেদন করার সুযোগ নেই। ওনারা আমাকে যতখুশি গালি দিতে পারেন কিন্তু তাতে আমার কিচ্ছু যায় আসে না। আমি আইন মোতাবেক চলব।

এদিকে খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার দাবিতে গণঅনশনের ডাক দিয়েছে বিএনপি। শনিবার (২০ নভেম্বর) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত রাজধানীসহ সারাদেশে অনশন করবে দলটির নেতাকর্মীরা।
– আরটিভি