বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল – বিএনপি চেয়ারপার্সন উপদেষ্টা কমিটির সদস্য, বিশিষ্ট জনস্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞ ড. জিয়াউদ্দিন হায়দার বুধবার কক্সবাজারে ব্র্যাক কর্তৃক বাস্তবায়িত ও ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের আর্থিক সহায়তাপ্রাপ্ত PLEASE (Plastic Waste Recycling for Livelihood, Environment and Sustainability Enhancement) প্রকল্প পরিদর্শন করেছেন।
তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিএনপির বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির বিশেষ সহকারী ও গবেষক ড. সাইমুম পারভেজ। পরিদর্শন শেষে তিনি কক্সবাজার প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
কক্সবাজার জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক ইউসুফ বদরী সামগ্রিক বিষয়ে সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করেন।
‘PLEASE’ প্রকল্পটি বাংলাদেশের অন্যতম উদ্ভাবনী ও পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ, যার মূল লক্ষ্য প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে টেকসই অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে রূপান্তর করা। প্রকল্পটি সচেতনতা বৃদ্ধি, বর্জ্য পৃথকীকরণ, নিরাপদ নিষ্পত্তি এবং পুনর্ব্যবহারের মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও স্থানীয় অর্থনীতিকে গতিশীল করার একটি অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে।
ড. হায়দার বলেন,
“বিএনপি তার ৩১ দফা রাষ্ট্র মেরামতের এজেন্ডাতে পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলাকে বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়েছে। এই এজেন্ডার অন্তর্ভুক্ত অন্যতম প্রতিশ্রুতি হলো—দেশব্যাপী বর্জ্য সংগ্রহ, পৃথকীকরণ, নিরাপদ নিষ্পত্তি ও পুনর্ব্যবহারের একটি সমন্বিত জাতীয় ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা।”
তিনি আরও বলেন,
“বর্তমান বাংলাদেশে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রায় অদৃশ্য—রাস্তা, নদী ও খালের পাশে অগণিত বর্জ্য ফেলায় পরিবেশ দূষণ বাড়ছে, রোগবালাই ছড়াচ্ছে, আর অর্থনীতি হারাচ্ছে তার উৎপাদনশীল শক্তি। তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি এই অচলাবস্থা ভেঙে দেবে। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়তে চাই যেখানে প্রতিটি নাগরিকের অংশগ্রহণে বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তর করা হবে।”
তিনি উল্লেখ করেন, PLEASE প্রকল্পের অভিজ্ঞতা থেকে বাংলাদেশ অনেক কিছু শিখতে পারে। এই মডেলটি প্রমাণিতভাবে কার্যকর হলে সেটি দেশব্যাপী সম্প্রসারণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা সম্ভব হবে। কক্সবাজারের এই মডেল হতে পারে টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জাতীয় দৃষ্টান্ত।
সফরকালে ড. হায়দার প্রকল্পে কর্মরত নারী ও তরুণ কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাঁদের উদ্যোগ ও উদ্যমের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন,
“এই প্রকল্পের মাধ্যমে স্থানীয় জনগণ বিশেষত নারী ও তরুণেরা বিকল্প আয়ের সুযোগ পাচ্ছে। একদিকে পরিবেশ রক্ষা হচ্ছে, অন্যদিকে তৈরি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থান—এটাই টেকসই উন্নয়নের প্রকৃত রূপ।”
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়ে তিনি বলেন,
“বিএনপি সরকার গঠন করলে প্রতিটি পৌরসভা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র স্থাপন করা হবে, যেখানে স্থানীয় সরকার, বেসরকারি খাত ও জনগণ একসঙ্গে কাজ করবে। এভাবেই আমরা একটি ‘Green Bangladesh’ গড়ে তুলব—যেখানে পরিবেশ, স্বাস্থ্য ও অর্থনীতি একে অপরের পরিপূরক হবে।”
ড. হায়দার তাঁর বক্তব্যে আরও বলেন,
“তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপির রাষ্ট্র মেরামতের এজেন্ডা শুধু রাজনৈতিক সংস্কার নয়—এটি একটি সমন্বিত জাতীয় পুনর্জাগরণের রূপরেখা। যেখানে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, খাদ্য, পরিবেশ, কর্মসংস্থান এবং ডিজিটাল রূপান্তর পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত থাকবে। সেই লক্ষ্যেই আমরা মাঠে নেমেছি, শিখছি, পর্যবেক্ষণ করছি, এবং সফল মডেলগুলো ভবিষ্যতের রাষ্ট্র পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করছি।”
তিনি আশা প্রকাশ করেন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা, প্রযুক্তি, স্থানীয় উদ্ভাবন ও জনগণের অংশগ্রহণের সমন্বয়ে বাংলাদেশ একদিন দক্ষিণ এশিয়ার পরিবেশ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় উদাহরণ হবে।
মতবিনিময় অনুষ্ঠানে কক্সবাজার প্রেস ক্লাবের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ সিনিয়র সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ, ইকরাম চৌধুরী টিপু, মোরশেদ উর রহমান খোকন, মানিক, বেদার উপস্থিত ছিলেন।
