জে. জাহেদ, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:

চট্টগ্রামে পুলিশ হেফাজতে সাবেক দুদক কর্মকর্তা ছৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর মৃত্যুর ঘটনায় আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

হত্যার অভিযোগ এনে মামলাটিতে চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খাইরুল ইসলামসহ মোট নয়জনকে আসামি করা হয়েছে।

ওসিকে বাদীর আবেদনটি নিয়মিত মামলা হিসেবে রুজুর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে এই মামলা তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই’) নির্দেশ দেন আদালত।

সোমবার (১৬ অক্টোবর’) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুননেছার আদালতে মামলাটি দায়ের করেন নিহত শহীদুল্লাহর স্ত্রী ফৌজিয়া আনোয়ার।

ওসি খাাইরুল ছাড়া মামলার অন্য আসামিরা হলেন, চান্দগাঁও থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. ইউসুফ, এএসআই সোহেল রানা, থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মবিনুল হক, থানা এলাকার বাসিন্দা এসএম আসাদুজ্জামান (৫২), মো. জসীম উদ্দীম (৩৭), মো. লিটন (৪৮), রনি আক্তার তানিয়া (২৬) ও কলি আক্তার (১৯)

মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ’) আইনে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। আদালত চান্দগাঁও থানায় মামলাটি রেকর্ডের নির্দেশ দিয়েছেন। এরপর পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আবদুর রশীদ বলেন, আদালত ভুক্তভোগীর অভিযোগটিকে নিয়মিত মামলা হিসেবে রুজু করে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ভুক্তভোগী শহীদুল্লাহ দুদকের সাবেক উপ-পরিচালক (ডিডি’) ছিলেন। ২০১৮ সালে তিনি অবসর নেন। তিনি নগরের চান্দগাঁও থানার এক কিলোমিটার এলাকায় থাকতেন। সেখানে জমি নিয়ে স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে তার বিরোধ চলছিল। এর জের ধরে গত ২৯ আগস্ট শহীদুল্লাহ ও তার শ্যালক মোহাম্মদ কায়সার আনোয়ারের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন রনি আক্তার তানিয়া নামের এক নারী। মামলার অভিযোগ শুনে বিচারক ওইদিনই অপরাধ আমলে নিয়ে অভিযুক্ত দুজনের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন।

ওই সমন সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী হারুন অর রশীদ গায়েব করে ফেলেন। কিন্তু তার নামে কেন মামলন হলোনা সে প্রশ্ন অধরা থেকে যায়। ফলে মামলার আসামি শহীদুল্লাহ ও কায়সার আদালতে হাজির হওয়ার কোনো সমন পাননি। এরপর মামলার পরবর্তী তারিখ দেন আদালত। ওই তারিখে মামলার বাদী হাজির না হওয়ায় তার আইনজীবী সময়ের আবেদন করেন। কিন্তু ওইদিনই আদালত দুই আসামির বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি করেন। এরপর গত ৩ অক্টোবর রাতে শহীদুল্লাহকে আদালতের ওয়ারেন্ট দেখিয়ে গ্রেপ্তার করে চান্দগাঁও থানা পুলিশ।

থানায় নেওয়ার পর অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তারা অন্যান্য বিবাদীদের যোগসাজশে শহীদুল্লাহকে নির্যাতন করেন। এমনকি তাকে পরিবারের লোকজন ওষুধ দিতে চাইলেও থানার পুলিশ কর্মকর্তারা সেগুলো পৌঁছাতে দেননি। একপর্যায়ে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে শহীদুল্লাহ মারা যান।