মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

কক্সবাজার কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে এবার ঈদুল ফিতরের জামাত হবে ২ টি। প্রথম জামাত হবে সকাল ৮ টায়। প্রথম জামাতে ইমামতি করবেন কক্সবাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সুদীর্ঘ ৩৩ বছরের খতিব আল্লামা মাহমুদুল হক। দ্বিতীয় জামাত হবে সকাল ৯ টায়। দ্বিতীয় জামাতে ইমামতি করবেন কক্সবাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম ও কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দান জামে মসজিদের খতিব মাওলানা সোলাইমান কাসেমী।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান এর সভাপতিত্বে ঈদুল ফিতর উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এক প্রস্তুতি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

কক্সবাজার পৌরসভা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে জেলার প্রধান ঈদুল ফিতরের জামাতের প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। সম্মানিত মুসল্লীরা সাবলীল ও সুন্দরভাবে যাতে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করতে পারেন সেজন্য ২টি জামাতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিটি জামাতে ৮ হাজারের বেশী মুসল্লী নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বৃষ্টির কথা মাথায় রেখে প্যান্ডেলে ত্রিপল লাগানো সহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে ৫ টি গেইট দিয়ে মুসল্লীরা প্রবেশ করতে পারবেন। ঈদগাহ ময়দানে ঈদুল ফিতরের জামাতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন, আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সার্বক্ষনিক নজরদারিতে থাকবেন। কোন মুসল্লী অসুস্থ হলে যাতে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা সেবা দেওয়া যায়, সেজন্য মেডিকেল টিম প্রস্তুত থাকবে। স্টেডিয়াম, হাসপাতাল সড়ক ও জেলা পরিষদ মোড়ে আর্চওয়ে অর্থাৎ নিরাপত্তা গেইট বসানো হবে। কক্সবাজার জেলা পুলিশের উদ্যোগে ২ স্থরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

কক্সবাজার পৌর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ময়দানে মুসল্লীদের জন্য পর্যাপ্ত সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। অত্যাধিক তাপমাত্রার কথা চিন্তা করে প্যান্ডেলে ১৫০ টির বেশি ফ্যান লাগানো হয়েছে। তাছাড়া ১০টি স্ট্যান্ড ফ্যান ও ১০টি এয়ারকুলারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ৫টি গেইট থেকে মুসল্লীরা ময়দানে প্রবেশের সময় প্রত্যেককে এক বোতল আতর, ৫০০ মি:লি: মিনারেল পানি, খেজুর এবং টিস্যু উপহার দেওয়া হবে। ময়দানে তথ্য ও মনিটরিং সেল সার্বক্ষনিক কাজ করবে। মুসল্লীদের গাড়ী পার্কিং এর জন্য বীর শ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়াম খুলে দেওয়া হবে। প্রিপ্যারেটরী হাইস্কুলের পাশে মুসল্লীদের জন্য অজুর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

ঈদগাহে ময়দানে প্যান্ডেল নির্মাণ ও অন্যান্য কাজের দায়িত্ব প্রাপ্ত এস.এম ডেকোরেটর্স এর সত্বাধিকারী কমল দাশ সাধন জানান, ১৮-২০ ফুট উচ্চতা সম্পন্ন বিশাল প্যান্ডেলের আয়তন প্রায় ৬০ হাজার বর্গফুট। প্যান্ডেল নির্মাণ সহ আনুষঙ্গিক কাজ ইতিমধ্যে শতকরা প্রায় ৯৫ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার ৯ এপ্রিল সন্ধ্যায় শাওয়াল মাসের চাঁদ উদিত হলে অবশিষ্ট কাজ কয়েকঘন্টার মধ্যে শেষ করা হবে। আর যদি মঙ্গলবার চাঁদ উদয় না হয়, বুধবার ১০ এপ্রিল চাঁদ উদয় হওয়ার আগেই ঈদগাহ ময়দানের সকল কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে কমল দাশ সাধন জানিয়েছেন।

কক্সবাজার বিদ্যুৎ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সুত্রে জানা গেছে, কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে সার্ক্ষনিক নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মাহবুবুর রহমান চৌধুরী, কাউন্সিলর হেলাল উদ্দিন কবির, দায়িত্বশীল কর্মকর্তা এবং কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কক্সবাজার কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানের প্রস্তুতি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন। পরিদর্শনকালে তাঁরা কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদুল ফিতরের জামাত এর সার্বিক প্রস্ততি দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

এদিকে, ঈদুল ফিতর উদযাপন বিষয়ক প্রস্তুতি সভায় কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো: ইয়ামিন হোসেনকে আহবায়ক করে ১১ সদস্য বিশিষ্ট ঈদুল ফিতরের জামাত সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে একটি ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন, কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র অথবা তাঁর প্রতিনিধি, জেলা পুলিশের সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের জেএম শাখার সহকারী কমিশনার, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ পরিচালক, জেলা তথ্য অফিসার, বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল আবছার, কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সভাপতি, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক, কক্সবাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ডা: মাহবুবুর রহমান, জেলা ইমাম সমিতির সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক। ব্যবস্থাপনা কমিটি কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিতব্য ঈদুল ফিতরের জামাতের সার্বিক প্রস্তুতি মনিটরিং করছেন বলে জানিয়েছেন।