কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার ধর্মপুর গ্রামে মাটি খননের সময় বেরিয়ে এলো লাল ইটের এক প্রাচীন দেয়াল। ধারণা করা হচ্ছে, শতবর্ষ কিংবা তারও আগে নির্মিত কোনো জমিদার বাড়ি বা প্রশাসনিক ভবনের ধ্বংসাবশেষ এটি।

সম্প্রতি ধর্মপুরের চারা বাড়ি এলাকায় জমির মাটি সমান করার সময় শ্রমিকরা খুঁজে পান অস্বাভাবিকভাবে শক্ত ইটের গাঁথুনি। স্থানীয় বাসিন্দা মো. জসিম উদ্দিন জানান, “প্রথমে ভেবেছি পুরনো কোনো ভিটা, কিন্তু ইটের ধরন দেখে বোঝা যায় এটি সাধারণ কিছু নয়।” ইটগুলো অনেকটা মুঘল আমলের স্থাপনায় ব্যবহৃত ইটের মতো।

খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে আসে কুমিল্লা আঞ্চলিক প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের একটি দল। শুরু হয়েছে প্রাথমিক খনন ও অনুসন্ধান কাজ।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক ড. মোছা. নাহিদ সুলতানা জানান, “এটি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। খনন কাজ শেষ হলে বিস্তারিত জানানো হবে। পুরো এলাকা পর্যবেক্ষণ করে পূর্ণাঙ্গ খনন পরিকল্পনা নেওয়া হবে।”

স্থানীয় ইতিহাসবিদ ও গবেষকদের মতে, এই আবিষ্কার কুমিল্লার রাজবংশ ও ত্রিপুরা অঞ্চলের সংযুক্ত ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হতে পারে।

ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের প্রভাষক সুমি আক্তার বলেন, “এই অঞ্চল ছিল ত্রিপুরা ও বাংলার মধ্যবর্তী গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এমন আবিষ্কার সেই সংযোগের প্রমাণ দেবে।”
গবেষক আহসানুল কবির মনে করেন, “সপ্তম শতক থেকেই এই অঞ্চলে রাজবংশের শাসন ছিল। ধর্মপুরের আবিষ্কার সেসব ইতিহাসের নতুন সূত্র হয়ে উঠতে পারে।”

ধর্মপুরের ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, “আমরা চাই প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এখানকার নিদর্শনগুলো সংরক্ষণ করুক। ভবিষ্যতে এটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবেও গড়ে উঠতে পারে।”