গত এপ্রিল মাসে অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া মোট ২৯৬টি ভুল তথ্য শনাক্ত করেছে বাংলাদেশের ফ্যাক্টচেকিং সংস্থা রিউমার স্ক্যানার। সংস্থাটির অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এ গুজব ও বিভ্রান্তিকর তথ্যগুলোর বড় একটি অংশ জাতীয় ও রাজনৈতিক বিষয়ে।
রিউমার স্ক্যানারের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ফ্যাক্টচেক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, জাতীয় বিষয়ক গুজবই সবচেয়ে বেশি—১০১টি। এর পর রয়েছে রাজনৈতিক (৯৫টি), আন্তর্জাতিক (৩৮টি), ধর্মীয় (২৭টি), প্রতারণা (১০টি), খেলা (৯টি), শিক্ষা (৭টি), ও বিনোদন-সাহিত্য (৮টি)।
তথ্যভিত্তিক বিভ্রান্তি সবচেয়ে বেশি—১৩৮টি ঘটনা, ভিডিও-ভিত্তিক ১০৫টি এবং ছবি-ভিত্তিক ৫৩টি। শনাক্ত হওয়া ভুল তথ্যগুলোর মধ্যে ১৮০টি ছিল সরাসরি মিথ্যা, ৬৬টি বিভ্রান্তিকর এবং ৪৮টি বিকৃত তথ্য হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
এপ্রিলে সবচেয়ে বেশি ভুল তথ্য ছড়িয়েছে ফেসবুক প্ল্যাটফর্মে—২৭৬টি। এছাড়া ইউটিউবে ৫৪টি, ইনস্টাগ্রামে ৪৮টি, এক্সে ৪৪টি, টিকটকে ২৪টি এবং থ্রেডসে ১৩টি ভুল তথ্য ছড়ানোর প্রমাণ মিলেছে।
গণমাধ্যমও ছিল এই গুজবের বাইরে নয়। অন্তত ১৪টি ঘটনায় দেশের একাধিক গণমাধ্যমে ভুল তথ্য প্রচারের নজির পাওয়া গেছে।
চলমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে ২৯টি গুজব ছড়ানো হয়েছে, যার ৮৩ শতাংশই ছিল নেতিবাচক। এছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টা ও প্রেস সচিবকে নিয়েও গুজব ছড়ানো হয়।
বিএনপিকে ঘিরে এপ্রিলে ১৩টি অপতথ্য ছড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে দলীয় নেতাদের—তারেক রহমান (২টি), মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (৯টি), ও খালেদা জিয়াকে (১টি) ঘিরে গুজব রয়েছে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে নিয়ে ১৬টি ও বাংলাদেশ পুলিশকে নিয়ে ৯টি ভুল তথ্য ছড়ানো হয়েছে।
এআই দিয়ে তৈরি ১৯টি ভুয়া কনটেন্ট ও ৩টি ডিপফেক ভিডিও শনাক্ত করেছে সংস্থাটি।
এছাড়া ফিলিস্তিন, কাশ্মীর ও ঢাকার সুন্নি মহাসমাবেশ ঘিরে যথাক্রমে ৩৮টি, ১১টি এবং ৫টি ভুল তথ্য শনাক্ত করা হয়েছে।
সবশেষে, স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক ২৫টি সংবাদমাধ্যমের নাম ও লোগো ব্যবহার করে ৬২টি গুজব ছড়ানোর প্রমাণও পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে রিউমার স্ক্যানার।