ইন্দোনেশিয়ার ২৬ বছর বয়সী এক যুবক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিচিত হয়ে বিয়ে করেছিলেন আদিন্দা কানজাকে। কিন্তু বিয়ের ১২ দিন পর ওই যুবক জানতে পারেন, তার স্ত্রী আসলে একজন ছদ্মবেশী পুরুষ।

হংকং থেকে প্রকাশিত ইংরেজি সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

আদিন্দা কানজা নামের ওই নারী ছদ্মবেশী পুরুষের সঙ্গে ওই যুবকের পরিচয় হয় ২০২৩ সালে, একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। প্রকৃত পরিচয় প্রকাশ না করে ওই যুবক নিজেকে পরিচয় দিয়েছেন একে হিসেবে।

তিনি জানিয়েছেন, তারা যখন প্রথমবার দেখা করেন, সে সময় আদিন্দা কানজা ঐতিহ্যবাহী ইসলামি পোশাক পরেছিলেন। সে সময় তার মুখমণ্ডলের পুরোটাই নেকাবে ঢাকা ছিল।

তবে সে সময় একে বিষয়টিকে খুব একটা পাত্তা দেননি। বরং ইসলামের প্রতি তার প্রেমিকার নিবেদন দেখে মনে মনে খুশি হয়েছিলেন। একপর্যায়ে একে আদিন্দা কানজার প্রেমে পড়ে যান এবং বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। এ সময় আদিন্দা কানজা জানান, এই দুনিয়ায় তার পরিবারের কেউ বেঁচে নেই। তাই তারা খুব সাদামাটাভাবে বিয়ে করেন। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারা হয় একের বাড়িতে।

বিয়ের পরই বাঁধে মূল বিপত্তি। বিয়ের পরও আদিন্দা কানজা নেকাবের আড়ালে তার চেহারা লুকাতে থাকেন। এমনকি একের পরিবারের সদস্যদের সামনেও তিনি তার নেকাব সরাতে প্রত্যাখ্যান করেন। এমনকি বিয়ের পর মাসিক বা পিরিয়ডের দোহাই দিয়ে একের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনেও অস্বীকৃতি জানান।

আদিন্দা কানজার এমন সন্দেহজনক আচরণের ১২ দিন পর একে তার স্ত্রীর ব্যাপারে খোঁজখবর করতে শুরু করেন এবং জানতে পারেন যে, আদিন্দার বাবা-মা উভয়েই জীবিত আছেন। তবে তারা জানতেন না, তাদের সন্তান একের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে। তদন্তের একপর্যায়ে একে জানতে পারেন, আদিন্দা কানজা আসলে একজন পুরুষ এবং তার পুরো নামের অদ্যাক্ষরগুলো হলো ইএসএইচ এবং তিনি ২০২০ সাল থেকেই নারীদের মতো পোশাক পরে চলাফেরা করতেন।

পরে একে আদিন্দা কানজাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে আদিন্দা জানান, তিনি একেকে বিয়ে করেছেন মূলত তার পরিবারের সম্পত্তি হাতিয়ে নিতে। এ বিষয়ে পুলিশ বলেছে, ‘আপনি যদি তাদের বিয়ের ছবি দেখেন তাহলে দেখবেন, আদিন্দা দেখতে একেবারে সত্যিকারের নারীদের মতো। তার কণ্ঠস্বরও নারীদের মতো। তাই তাকে পুরুষ বলে সন্দেহ করার কোনো কারণ ছিল না।’

পুলিশ আরও জানিয়েছে, আদিন্দার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ আনা হয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার আইন অনুসারে প্রতারণার অভিযোগে তার চার বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।