সিবিএন ডেস্ক:

কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের সাবেক সিনিয়র জেল সুপার শাহজাহান আহমেদ ও তার স্ত্রী খন্দকার নুরুন নাহার লোটাসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে আড়াই কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা হয়েছে।

বুধবার (১৮ অক্টোবর) দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কুমিল্লা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক পাপন কুমার সাহা বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

আসামিরা হলেন- টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার থানার এলাচিপুর এলাকার পারেশ আলী মিয়ার ছেলে শাহজাহান আহমেদ (৫৮) ও তার স্ত্রী খন্দকার নুরুন নাহার লোটাস (৫২)।

শাহজাহান আহমেদ ২০২০ সালের ২৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে সিনিয়র জেল সুপার ছিলেন। বর্তমানে তিনি কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১ এর সিনিয়র জেল সুপার (চলতি দায়িত্ব) পদে কর্মরত আছেন। দুদক কুমিল্লা সমন্বিত জেলা কার্যালয় সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।

দায়েরকৃত মামলার অভিযোগে বলা হয়, শাহজাহান আহমেদ ১৯৮৭ সালে বস্ত্র অধিদপ্তরে ড্রাফটসম্যান পদে যোগদান করেন। পরবর্তীতে তিনি ১৯৯১ সালে ডেপুটি জেলার পদে আত্তীকৃত হন এবং বর্তমানে তিনি কাশিমপুর কারাগারে সিনিয়র জেল সুপার পদে চলতি দায়িত্বে কর্মরত আছেন। তিনি ১৯৯২ সালের ২০ জুন খন্দকার নুরুন নাহার লোটাসকে বিয়ে করেন। তিনি পেশায় গৃহিণী।

মামলায় আরো উল্লেখ করা হয়, দুদকের অনুসন্ধানে শাহজাহান আহমেদের নিজ নামে স্থাবর-অস্থাবরসহ ১ কোটি ৩০ লাখ ১৯ হাজার ২৬৩ টাকার সম্পদের মালিকানা পাওয়া যায়। উক্ত সম্পদ অর্জনের বিপরীতে তার মোট আয় পাওয়া যায় ৫৮ লাখ ১০ হাজার ৪১ টাকা। অর্থাৎ ৭২ লাখ ৯ হাজার ২২২ টাকার সম্পদের বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি। অপরদিকে অনুসন্ধানে নুরুন নাহার লোটাসের নামে অর্জিত ১ কোটি ৪৮ লাখ ৯৮ হাজার ৭৩ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি। দুদকের কাছে প্রথমদিকে ব্যবসার কথা উল্লেখ করা হলেও ব্যবসার কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হন। দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন তিনি ব্যবসা থেকে কোনো উপার্জন করেননি। অর্থাৎ ওই সব সম্পদ স্বামীর দুর্নীতির টাকায় অর্জন করেছেন।

দুদকের এই মামলা ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছেন শাহজাহান আহমেদ। তিনি বলেন, মামলার অভিযোগ সঠিক নয়। যেহেতু মামলা হয়েছে তাই এসব অভিযোগ আইনীভাবেই মোকাবেলা করব।

দুদক কুমিল্লা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. ফজলুর রহমান জানান, ২ কোটি ২১ লাখ ৭ হাজার ২৯৫ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে শাহজাহান আহমেদ ও তার স্ত্রী নুরুন নাহার লোটাসের বিরুদ্ধে দুদক আইন-২০০৪ এর ২৭ (১) এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। তদন্তকালে তাদের আরও জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ পাওয়া গেলে তা মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।