তেল বিক্রির ক্ষেত্রে পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা প্রাপ্ত দেশের তেল কিনে চীন জ্বালানি খরচ কমিয়েছে। এ যেন এক আশীর্বাদ। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত দেশগুলো থেকে তেল কিনে চীন এ বছর ১০ বিলিয়ন বা ১ হাজার কোটি ডলার বাঁচিয়েছে।
পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা রাশিয়া, ভেনেজুয়েলা ও ইরানের মতো দেশ থেকে চীনের মতো পশ্চিমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলো কম দামে তেল কিনতে পারছে, যদিও চীন প্রায়ই এ ধরনের একপক্ষীয় নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করে থাকে।
জাহাজের গতিবিধি পর্যবেক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান ভরটেক্সা ও কেপলারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে ইরান, রাশিয়া ও ভেনেজুয়েলা থেকে সমুদ্রপথে দৈনিক ২৭ লাখ ৬৫ হাজার ব্যারেল তেল আমদানি করেছে চীন।
জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চীনের আমদানিকৃত তেলের প্রায় চার ভাগের এক ভাগ এই তিন দেশ থেকে আমদানি করেছে। ২০২২ সালের একই সময়ে তারা এই তিন দেশ থেকে মোট আমদানির ২১ শতাংশ এবং ২০২০ সালে করেছিল ১২ শতাংশ আমদানি করেছিল। এতে পিছিয়ে পড়েছে মধ্যপ্রাচ্য, পশ্চিম আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলো।
কম দামে তেল আমদানি করে চীন লাভবান হচ্ছে। এতে চীনের তেল পরিশোধনাগারগুলোর উৎপাদনের পাশাপাশি মুনাফাও বেড়েছে।
কম দামে তেল কিনে চীন বিভিন্নভাবে লাভবান হয়েছে। এতে চীনের তেল পরিশোধনাগারগুলোর উৎপাদন ও মুনাফা বেড়েছে। অন্যদিকে কম দামে বেশি পরিমাণ তেল কেনার কারণে চীনের তেল পরিশোধনাগারগুলো যেমন বেশি উৎপাদন করতে পারছে, তেমনি পণ্যের উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় বিশ্ববাজারে তার প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বেড়েছে।
নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত দেশগুলোও চীনের এই তেল কেনার কারণে লাভবান হচ্ছে। চীন তেল না কিনলে সব দেশের পরিস্থিতির আরও অবনতি হতো।।
এক বিবৃতিতে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, চীন একপক্ষীয় নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে। চীনের স্বাভাবিক ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রতি অন্যদের সম্মান দেখানো উচিত, সেই সঙ্গে তার সুরক্ষাও দরকার।
এদিকে ভরটেক্সা ও কেপলারের তথ্যানুসারে, জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত রাশিয়ার কাছ থেকে চীন দিনে ১৩ লাখ ব্যারেল তেল কিনেছে। এটা সমুদ্রপথের হিসাব। একই সঙ্গে তারা পাইপলাইনে দৈনিক আট লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত এসপো তেল আমদানি করেছে।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বরের হিসাব বলছে, রাশিয়া থেকে চীনের তেল আমদানি আগের বছরের তুলনায় দৈনিক চার লাখ ব্যারেল বেড়েছে। একই সময়ে ভারতেও রাশিয়ার তেল রপ্তানি বেড়েছে।
রাশিয়ার তেল আমদানি করে চীন ৪৩৪ কোটি ডলার বাঁচিয়েছে। এ ছাড়া ভেনেজুয়েলার তেল কিনে ব্যারেলপ্রতি ১০ ডলার এবং ইরানের তেল কিনে প্রতি ব্যারেলে ১৫ ডলার বাঁচিয়েছে দেশটি।
