অনলাইন ডেস্ক:

ইলন মাস্কের স্পেসএক্স কোম্পানিতে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে যোগ দিয়েছে বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত কিশোর কাইরান কাজী।

চাকরি পাওয়ার পর ব্যবসা ও চাকরির সামাজিক মাধ্যম লিংকডইনে কাইরান লিখেছে, ‘পৃথিবীর সেরা কোম্পানিতে আমি প্রকৌশলী হিসেবে যোগ দিতে যাচ্ছি; কোম্পানির স্টারলিংক প্রকৌশলীদের দলে যোগ দিচ্ছি আমি। এরা বিশ্বের সেই বিরল কোম্পানিগুলোর একটি, যারা বয়সের মতো পুরোনো মানদণ্ড দিয়ে যোগ্যতা বিবেচনা করেনি।’

লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস সূত্রে জানা গেছে, কাইরান কাজী বাংলাদেশি বাবা-মা মুস্তাহিদ কাজী ও জুলিয়া কাজীর সন্তান। সে দুই বছর বয়সেই পূর্ণ বাক্য বলতে পারত। কিন্ডারগার্টেন স্কুলে ভর্তি হওয়ার পর সে রেডিওতে শোনা গল্প বন্ধুদের কাছে বলত।

তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় তার কাছে স্কুলের পড়াশোনা খুবই সহজ মনে হয়। তখন তাকে ক্যালিফোর্নিয়ার এক কমিউনিটি কলেজে ভর্তি করা হয়। সেখান পাঠ্যপুস্তক তার কাছে শিক্ষণীয় বলে মনে হয়। এরপর ১১ বছর বয়সে সে সান্তা ক্লারা বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হয়।

কাইরান কাজীর লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্যানুসারে জানা গেছে, গত বছর সে ব্ল্যাকবার্ড ডট এআই নামের এক সাইবার ইন্টেলিজেন্স ফার্মে চার মাস মেশিন লার্নিংয়ের ইন্টার্ন হিসেবে কাজ করেছে। সেখানে সে সামাজিক মাধ্যমের আধেয় ভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে কি না, তা শনাক্তের পরিসংখ্যানগত পদ্ধতি তৈরি করে।

এবিসি ৭ নিউজকে কাজী বলেছে, ‘অনেকে মনে করে, আমি শৈশব থেকে বঞ্চিত হচ্ছি; কিন্তু আমার মনে হয় না বিষয়টি ঠিক। সেই মনোভাব থাকলে আমি এত দিনে মাধ্যমিক স্কুলে থাকতাম।’ কাইরান এক সাক্ষাৎকারে বাংলা শেখার আগ্রহও প্রকাশ করেছে।

কাইরানের মা জুলিয়া চৌধুরী কাজী ওয়াল স্ট্রিটের একজন কর্মী। তিনি ছেলেকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোর বে এলাকায় থাকেন। জুলিয়ার বাড়ি বাংলাদেশের মৌলভীবাজারে। কাইরানের বাবা মুস্তাহিদ কাজী যুক্তরাষ্ট্রে একজন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করেন। তাঁর বাড়ি বাংলাদেশের মানিকগঞ্জে বলে জানা গেছে।

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, কাইরান ও তাঁর মা ক্যালিফর্নিয়ার প্লিজানটন থেকে ওয়াশিংটনের রেডমন্ডে স্থানান্তরিত হওয়ার পরিকল্পনা করছেন। কেননা, কাইরানের অফিস রেডমন্ডে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, কাইরানের মা মৌলভীবাজারের জুলিয়া শপিং সিটির স্বত্বাধিকারী। তার নামে তার নানা মৌলভীবাজার শহরে প্রতিষ্ঠা করেছেন কাইরান রেস্টুরেন্ট।

কাইরানের নানা প্রয়াত সাংবাদিক ও অ্যাডভোকেট গজনফর আলী চৌধুরী ছিলেন ষাটের দশকে দক্ষিণ সিলেটের বরেণ্য ন্যাপ নেতা। নব্বইয়ের দশকে দৈনিক সংবাদ যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশ শুরু হয় গজনফর আলী ও সৈয়দা হাসনা বেগম দম্পতির হাত ধরেই।

কাইরানের নানি ষাটের দশকের ছাত্রনেত্রী ও বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের সাবেক এমপি সৈয়দা হাসনা বেগম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘জুলাই থেকে কাইরান কাজে যোগ দেবে। নিঃসন্দেহে কাইরান আমাদের গর্ব, মৌলভীবাজার তথা বাংলাদেশের গর্ব।’

এ বিষয়ে জুলিয়া চৌধুরী কাজী ছেলে কাইরানের জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।