যে পথ ধরে মহানবী (স.) ১৪ শত বছর আগে হিজরত করেছিলেন, সে পথ অনুসরণ করেই মক্কা থেকে মদিনায় পৌঁছেছেন সৌদি ক্রীড়াবিদ বদর আল-শাইবানি। ১২ দিনের এই ভ্রমণে তিনি পাড়ি দিয়েছেন প্রায় ৫০০ কিলোমিটার পথ। খবর আরব নিউজ।

ঐতিহাসিক হিজরতের ঘটনাটিকে সবার সামনে তুলে ধরতেই এ সফর করেছেন বলে জানান শায়বানি। তিনি বলেন, এ ১২ দিনে আমি প্রতিদিন গড়ে অন্তত ৪০ কিলোমিটার করে হেঁটেছি। রাসূল (স.) ও হযরত আবু বকরের (রা.) অবস্থানের সেই স্মৃতিবিজড়িত ১২টি স্থান পরিদর্শন করেন তিনি।

শায়বানি বলেন, আমার দীর্ঘ যাত্রায় সাওর পর্বতের এই হেরা গুহায় অবস্থানের সময়টি ছিল সবচেয়ে স্মরণীয়। কারণ মক্কা থেকে মদিনায় হিজরতের পথে কোরাইশ অনুসন্ধানকারীদের দৃষ্টির আড়ালে থাকতে সফরসঙ্গীসহ রাসূল (স.) হেরা গুহাতেই এসে আশ্রয় নিয়েছিলেন। পবিত্র কোরআনেও এই ঘটনার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।

শায়বানি বলেন, আমি কখনোই ভুলব না যে, আল্লাহর নবী হিজরতের সময় যে জায়গায় আশ্রয় নিয়েছিলেন ঠিক একই স্থানে আমিও ছিলাম। বিষয়টি আমার কাছে অবিশ্বাস্য রকমের রোমাঞ্চ ও আনন্দদায়ক ছিল। সেখানে পৌঁছে আমি অত্যন্ত আনন্দিত ও আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলাম।

আল-শায়বানি বলেন, ১২ দিনের দীর্ঘ সফরের জন্য আমি পাঁচ বছর ধরে পরিকল্পনা করেছি। তবে আমার কাছে এই সফর নিশ্চিতভাবেই অনেক বেশি কিছু।

ক্রীড়াবিদ বদর আল শায়বানি মাউন্ট এভারেস্টসহ সাত মহাদেশের সর্বোচ্চ শৃঙ্গে আরোহণ করেছেন। সৌদি আরবের ষষ্ঠ ব্যক্তি হিসেবে তিনি মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেন।

৬২২ সালে মহানবীর (স.) ও তাঁর সাহাবিদের ওপর কাফেরদের অত্যাচার অনেক বেড়ে গেলে আল্লাহর নির্দেশে তারা মক্কা থেকে সরে যান। মহানবী (স.) হযরত আবু বকরকে (রা.) সাথে নিয়ে মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করেন। ইসলামের ইতিহাসে সেটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় দখল করে আছে।

সৌদি সরকার ১৪শ বছর আগের হিজরতের সেই পথ চিহ্নিত ও নথিভুক্ত করতে কাজ করছে। এরইমধ্যে রিহলাত মুহাজির নামের একটি সংস্থার তত্ত্বাবধানে এই উদ্যোগের প্রথম অংশ সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে চলছে মাইগ্রেশন রুটটি নথিভুক্ত করার কাজ। একই সঙ্গে ঐতিহাসিক এই পথে পর্যটকদের ভ্রমণ নির্দেশনা দিতে প্রশিক্ষণ কার্যক্রমও চলছে।

হিজরতের পথ নিয়ে বিশেষজ্ঞ ও গবেষকদের নিয়ে কাজ করছে সংস্কৃতি ও জাদুঘর বিষয়ক সামায়া ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানিও। তারা মক্কা নগরীর উপকণ্ঠে অবস্থিত সাওর পর্বতের গুহা থেকে শুরু করে মদিনার মসজিদে কুবা পর্যন্ত ৪০টি স্পট চিহ্নিত করে এই পথ নির্ধারণ করেন। এছাড়া ঐতিহাসিক এই পথ পর্যটকদের কাছে তুলে ধরতে সম্প্রতি মক্কায় দ্য জাবালে সাওর কালচারাল সেন্টার উদ্বোধন করা হয়।