আব্দুস সালাম,টেকনাফ(কক্সবাজার) :
কক্সবাজারের টেকনাফ সেন্টমার্টিনদ্বীপের পরিবেশ,প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সুরক্ষা ও ইকোট্যুরিজম উন্নয়নে কর্মপরিকল্পনাসহ ১৩টি সুপারিশ বাস্তাবায়নে নিদের্শ দেয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।জেলার বিভিন্ন সংস্থার পাঠানো প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে অর্ধশত সম্ভাব্য সুপারিশ থেকে চুড়ান্ত শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে স্থানীয় আবাসিক হোটেলের সম্মেলন কক্ষে অংশিজনের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) মো.নাসিম আহমেদ।
সভায় বক্তব্য রাখেন-জেলা সহকারী পুলিশ সুপার (ট্রাফিক)এম, এম, রকীব উর রাজা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভেজ চৌধুরী,পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাঈদা পারভীন, সেন্টমার্টিন ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান, ইউপি সদস্য সৈয়দ আলম ও খোরশিদ আলম প্রমুখ।সভায় দ্বীপের আরও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

১৩টি সুপারিশগুলো হলো-সেন্টমার্টিনে সকল প্রকার অবকাঠামো ও সম্প্রসারন বন্ধ থাকবে,তবে প্রধানমন্ত্রীর সম্মত ব্যতিত (স্থানীয়দের ইকোলজিক্যালি বসতঘর ও হাসপাতাল ছাড়া কোনো অবকাঠামো করা যাবে না, পরিষ্কার-পরিছন্নতা ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সুয়ারেজ ব্যবস্থাপনা, শব্দ ও বায়ু দূষণ রোধ, জোনিং ও সংরক্ষিত এলাকা নির্মাণ,হোটেল-মোটেল ও রেস্ট হাউস, যান চলাচল ব্যবস্থাপনা,১০হাজার ম্যানগ্রোভ ও কেয়ারি বেষ্টনি বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচি,জমি ব্যবহার নীতিমালা, জেটি ব্যবস্থাপনা,পর্যটক জাহাজ পরিবহন,আইনশৃঙ্খলা রক্ষা।এসব সুপারিশে বিস্তারিত উল্লেখ করে বাস্তবায়নে অধীনস্থ সংস্থাদের নিজ নিজ দায়িত্ব দ্রুত পালনের নির্দেশ দেয় প্রতিবেদনে।
তবে এর আগে গত মাসের মাঝামাঝি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সেন্টমার্টিনকে রক্ষাথে একটি বৈঠক অনুষ্টিত হয়।সেখানে দ্বীপ রক্ষায় কঠোর ১৩টি সম্ভাব্য সুপারিশ বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন সংস্থাকে নির্দেশ পালনে প্রতিবেদন দেওয়া হয়।

জেলা প্রশাসক কার্যালয় সূত্রে জানায়,সেন্টমার্টিন রক্ষায় নতুন হোটেল ও অবকাঠামো বন্ধসহ গত ২০ জানুয়ারী মাসে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে একটি সভা অনুষ্টিত হয়।প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে মহাপরিচালক-২ (অতিরিক্ত সচিব)-এর স্বাক্ষরিত ১৩টি সম্ভাব্য সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নে নির্দেশ দেয়।এই নির্দশনা পেয়ে সুপারিশ বাস্তবায়নে পরিবেশ অধিদপ্তর, কউক (কক্সবাজার উন্নয়ন কৃতপক্ষ),জেলা পুলিশ, বিআইডব্লিউটিএ মৎস অধিদপ্তর, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোড, কোস্টগার্ড, জেলা-উপজেলা পরিষদসহ সকল সংস্থা বাস্তাবায়নে মাঠে কাজ শুরু করছে।এসব কার্যক্রম বাস্তবায়নে মনিটরিং করবেন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়।

সেন্টমার্টিন ইউপির চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে সেন্টমাটিনবাসি সহায়তা করবে। স্থানীয়দের আয়-রোজগারের বিষয়টি মাথায় রাখা অত্যন্ত জরুরি।এখানে নতুন করে ভবন না হোক আমরাও চাই ।কারণ দ্বীপ না বাচঁলে, দ্বীপের বাসিন্দাগুলো থাকবে কোথায় ? সম্প্রতি সময়ে জেলা প্রশাসকের কাছে দ্বীপবাসির পক্ষে থেকে বেশ কিছু সুপারিশ দেওয়া হয়েছে।সেগুলো যাতে চুড়ান্ত নীতিমালায় অন্তভুক্ত করা হয়,সেটি সরকারের কাছে দাবি স্থানীয়দের।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও)পারভেজ চৌধুরী বলেন, সেন্টমার্টিন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে বৈঠকের সিদ্ধান্ত বাস্তাবায়নে কাজ চলছে।বিশেষ করে,এখানে যাতে নতুন করে কোনো ভবন নির্মাণ করতে না পারে সেজন্য নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো নাসিম আহমেদ বলেন,সেন্টমার্টিনের জীববৈচিত্র্য রয়েছে।বিভিন্ন ভৌগলিক কারণে এ দ্বীপটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।ভবন নির্মাণসহ বিভিন্ন কারণে এ দ্বীপটি অতিঝুঁকিতে রয়েছে।সরকার চাই খুব দ্রুত সেন্টমাটিনকে ভালো ম্যানেজমেন্ট করতে।তারই লক্ষ্যে গত মাসের মাঝামাঝি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্টিত সভায় দ্বীপ রক্ষায় বেশ কিছু সুপারিশ বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত হয়।তারই সুত্র ধরে,সেন্টমাটিনে সরেজমিনে সুপারিশ বাস্তবায়নে অংশিজনের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে।তাছাড়া ইকোট্যুরিজমসহ দ্বীপকে ঘিরে সরকারের যে মহাপরিকল্পনা রয়েছে।সেটি বাস্তবায়নের কার্যক্রম চলছে।