মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

হত্যার অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আবদুল্লাহ আল মামুন ১ জনকে ফাঁসি ও ৪ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করেছেন। এছাড়া একই মামলার রায়ে অপর ৩ জন আসামীকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়। বৃহস্পতিবার ১৩ জানুয়ারি এ রায় প্রদান করা হয়েছে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের এডিশনাল পিপি এডভোকেট মোজাফফর আহমদ হেলালী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ হলো : ২০০২ সালের ২৯ জুলাই রাত আড়াইটার দিকে কক্সবাজার সদর উপজেলার লারপাড়া কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের দক্ষিণ পাশে ক্যাফে হায়দার হোটেলের নিকটে জনৈক শাহাবুদ্দিনের একটি গাড়ি আসামীরা ভিন্ন চাবি ব্যবহার করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে শাহাবুদ্দিনের বড় ভাই আক্তার উদ্দিন তাতে বাঁধা দেন। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে তুমুল বাকবিতন্ডা হয়। পরে এক ঘন্টা পর রাত সাড়ে ৩ টার দিকে আসামীরা এসে আক্তার উদ্দিন (৩৫) কে গুলি করে হত্যা করে।

এ ঘটনায় উখিয়ার রত্নাপালং এর জমির উদ্দিনের পুত্র আব্বাস উদ্দিন বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার এসটি মামলা নম্বর : ৫০/২০০৩ ইংরেজি। জিআর মামলা নম্বর : ২৪৮/২০০২ ইংরেজি।

অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারী দেলোয়ার হোসাইন জানান, ২০০৩ সালের ৩ জুন মামলাটির চার্জ গঠন করা হয়। মামলার চার্জশীট ভুক্ত ২০ জন সাক্ষীর মধ্যে আইও, চিকিৎসক সহ ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ, জেরা, আসামীদের আত্মপক্ষ সমর্থন, যুক্তিতর্ক সহ সকল বিচারিক কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। রায় ঘোষনার নির্ধারিত দিনে বৃহস্পতিবার ১৩ জানুয়ারি কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আবদুল্লাহ আল মামুন মামলার ৮ জন আাসমীর মধ্যে ফৌজদারী দন্ডবিধির ৩০২ এবং ৩৪ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে ১ জনকে ফাঁসি ও ৪ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করে রায় ঘোষনা করেন। দন্ডপ্রাপ্ত আসামী ৫ জনের প্রত্যেককে ১ লক্ষ টাকা অর্থদন্ড প্রদান এবং অনাদায়ে আরো অতিরিক্ত ১ বছর বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া একই মামলার রায়ে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় ৩ জন আসামীকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়। ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত আসামি আবদুল খালেক ও যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামী আমির হামজা জেল হাজতে রয়েছে। বিজ্ঞ বিচারক আবদুল্লাহ আল মামুন রায় ঘোষনার সময় তারা আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।

অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারী দেলোয়ার হোসাইন আরো জানান, মামলায় ফাঁসির আদেশ প্রাপ্ত আসামী কক্সবাজার সদর উপজেলার চান্দের পাড়ার কালু মাঝির পুত্র আবদুল খালেক (৩৫)। যাদেরকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেওয়া হয় তারা হলো : মোহাম্মদ কাজল, আমির হামজা, সলিম উল্লাহ ও আবদুল গাফফার। যারা বেকসুর খালাস পেয়েছেন তারা হচ্ছে-আবদুল জলিল, আশফাকুর রহমান মিল্কী, ওবায়দুল হক।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অতিরিক্ত পিপি এডভোকেট মোজাফফর আহমদ হেলালী।