১১ জেলেসহ ১টি ট্রলার ফেরত
আব্দুস সালাম, টেকনাফ:
সেন্টমার্টিন দ্বীপের অদূরে মাছ ধরতে যাওয়া বাংলাদেশি মাছ ধরার ট্রলারকে লক্ষ্য করে গুলি করেছে মিয়ানমারের নৌ-বাহিনী। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে এক জেলের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে আরো দুই জেলে। এ ঘটনায় ৬০ মাঝি-মাল্লাসহ ৬টি মাছ ধরার ট্রলার অপহরণ করে মিয়ানমারে নিয়ে গেছে নৌবাহিনী।
গতকাল বুধবার ( ৯ অক্টোবর) দুপুরে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার শাহপরীর দ্বীপের বাসিন্দাদের মালিকাধীন একটি ট্রলারে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ওসমান গণি শাহপরীর দ্বীপের কোনারপাড়া এলাকার বাচাঁ মিয়ার ছেলে। তিনি শাহপরীরদ্বীপের বাজারপাড়া এলাকার সাইফুল কম্পানির মালিকাধিন ট্রলারের জেলে। আহত ২ জেলেও ওই ট্রলারের। তবে তাদের নাম ঠিকানা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ট্রলার মালিকরা জানিয়েছেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণ পশ্চিমের মৌলভীর শিল নামের বঙ্গোপসাগরের মোহনায় এই ঘটনা ঘটে।
ধরে নিয়ে যাওয়া ৬টি ট্রলারের মালিক হলেন, শাহপরীর দ্বীপের মিস্ত্রীপাড়ার মুসলিম মিয়ার ছেলে মতিউর রহমান, মৃত আলী হোছনের ছেলে আবদুল্লাহ, তাঁর ভাই আতা উল্লাহ,উত্তরপাড়ার ছৈয়দ মাঝির ছেলে মো. আছেম।
এই ৬টি ট্রলারে ৬০ জন মাঝি মাল্লা রয়েছে।
ট্রলার মালিক সাইফুল জানিয়েছেন, সাগরে মাছ ধরার সময় হঠাৎ করে মিয়ানমারের নৌ বাহিনীর সদস্যরা ধাওয়া করে গুলি বর্ষণ করে। এরপর ৬টি ট্রলারসহ মাঝি-মাল্লাদের ধরে নিয়ে মিয়ানমারে নিয়ে যায়। যেখানে তার মালিকাধীন ট্রলারে গুলিবিদ্ধ
৩ জনের মধ্যে একজন মারা যায়। বৃহস্পতিবার ওই ট্রলারটি ছেড়ে দিয়েছে। নিহত এবং আহত জেলেদের নিয়ে শাহপরীরদ্বীপের উদ্দেশ্যে কোস্টগার্ডের তত্ত্বাবধানে ১টি ট্রলারসহ মৃত ব্যক্তির লাশসহ ১১ জন জেলে নিয়ে কিছুক্ষণ আগে জেটিতে অবতরণ করেছে।
ট্রলার মালিক মতিউর রহমান জানান, ধরে নিয়ে যাওয়া ট্রলার ও মাঝি মাল্লাদের সাথে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। নিহতকে নিয়ে ট্রলারটি ঘাটে পৌঁছলে বিস্তারিত জানা যাবে।
এ ব্যাপারে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী জানিয়েছেন, বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গতকাল বিকাল দুপুর আড়াই টার দিকে সেন্টমার্টিন দ্বীপ ও মিয়ানমার মধ্যবর্তী বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশ অংশে বাংলাদেশে মাছ ধরার নৌকায় মিয়ানমারের নৌবাহিনী গুলি করে এবং ৬টি ট্রলার ৫০-৬০ জন জেলেসহ আটক করে। গুলির ঘটনায় ১জন ওসমান গনি নামে জেলে নিহত হয়েছেন এবং দুজন আহত হয়েছে। ঘটনার বিষয়ে জেলেদের পরিবারের সদস্যরা বৃহস্পতিবার সকালে জেনে আমাকে অবগত করে।পরবর্তীতে দুপুরে মিয়ানমার নৌবাহিনী বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের নিকট ১টি নৌকাসহ জেলেদের হস্তান্তর করে। বর্তমানে কোস্টগার্ডের তত্ত্বাবধানে ১টি নৌকাসহ মৃত ব্যক্তির লাশসহ ১১ জন জেলে নিয়ে কিছুক্ষণ আগে শাহপরীরদ্বীপ জেটিতে অবতরণ করেছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ অন্যান্য ৫টি ট্রলারসহ অন্যান্য জেলেদের ছাড়েনি। এবিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
কোস্টগার্ডের শাহপরীরদ্বীপের দায়িত্বরত কর্মকর্তা (নাম প্রকাশ না করে) বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন মারা গেছেন। দুই জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। ট্রলারটি জেটিঘাটে এসে পৌছাঁছে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।