ইলিশ আহরণের ভরা মৌসুমের শেষ মুহূর্তেও উপকূলে ইলিশের দেখা না পেয়ে হতাশ কক্সবাজারের জেলেরা। ১২ অক্টোবর থেকে টানা ২২ দিনের জন্য বন্ধ হচ্ছে সমুদ্রে ইলিশ আহরণ। বন্ধের সময় সংসার কীভাবে চলবে তা নিয়ে চিন্তিত জেলেরা।

গত শুক্রবার শহরের নুনিয়াছটা ফিশারিগাটে গিয়ে দেখা যায়, সাগর থেকে মাছ আহরণ করে ফিরছে ৩০ থেকে ৩৫ ট্রলার। ৫০ থেকে ২০০টির বেশি ইলিশ কেউ পায়নি। তবে কিছু ট্রলার কয়েক মণ মাইট্যা, চাপা, রুপচাঁদা, কামিলাসহ আরো কিছু সামুদ্রিক মাছ পেয়েছে।

এদিকে সমুদ্রের উত্তাল-পাতাল অবস্থায় জেলেরা চেষ্টা করেও ইলিশ আহরণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে এফবি সোহেল ট্রলারের জেলে আবদুল মাবুদ (৫২) বলেন, সাগর উত্তাল থাকায় গভীর সাগরে গিয়ে ইলিশ আহরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। সমুদ্রে টানা পাঁচ দিন জাল ফেলে তাঁরা মাত্র ১৭০টি ইলিশ ধরতে পেরেছেন।

গত ১৪ আগস্ট থেকে কক্সবাজার উপকূলে জেলেদের জালে ধরা পড়ে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। মৎস্য বিভাগের তথ্যমতে, স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে ওই সময় কক্সবাজার থেকে অন্তত ৮ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন ইলিশ চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে সরবরাহ করা হয়। কিন্তু ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে বৈরী পরিবেশের কারণে ইলিশের তেমন নাগাল পাচ্ছেন না জেলেরা।

শহরের ফিশারিঘাটসহ টেকনাফ, সেন্ট মার্টিন, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, চকরিয়া, পেকুয়ায় দৈনিক ২০০ মেট্রিক টন ইলিশ আহরণ করা হলেও বেশির ভাগ ইলিশ ট্রলারে করে সরাসরি চাঁদপুর নিয়ে বেচাবিক্রি হচ্ছে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বদরুজ্জামান বলেন, ভারী বর্ষণ টানা কয়েক দিন চলতে থাকলে গভীর সাগর থেকে ইলিশ উপকূলের দিকে ছুটে আসবে, কিন্তু তত দিনে ইলিশ আহরণে ২২ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়ে যেতে পারে।

ফিশারিঘাট মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির উপদেষ্টা ও ইলিশ ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদীন বলেন, গত সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিকেও এই মৎস্য অবতরণকেন্দ্র প্রতিদিন ৬ থেকে ৭ টন ইলিশ ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে সরবরাহ করেছে। কিন্তু এখন দিনে দুই টন ইলিশও সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। ইলিশ আহরণ কমে যাওয়ায় ফিশারিঘাটের পাঁচ শতাধিক ইলিশ ব্যবসায়ী বিপাকে পড়েছেন।

কক্সবাজার ফিশিংবোট মালিক সমিতির সভাপতি মুজিবুর রহমান বলেন, ১২ অক্টোবর থেকে আগামী ২ নভেম্বর পর্যন্ত টানা ২২ দিন সাগরে ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছ আহরণ বন্ধ থাকবে। বন্ধের আগের কয়েক দিনে ইলিশ ধরা না পড়লে লাখো জেলে বিপাকে পড়বেন।

 

-প্রথম আলো