সাইফুল ইসলাম বাবুল

নিরীহ পথিকের মত দেখেছি, ভূলেছি ,আবার মনে করেছি যে, ভূমি সংস্কারের প্রয়োজন আছে। সমুদ্র পাহাড় যুগৎপথ আছে, পেকুয়ায় পাহাড় তো হওয়ার কথা বৃক্ষস্থল – অভয়ারণ্য। এখন চলছে অপরিকল্পিত দখল – বেদখল বৃক্ষ নিধন সহ প্রকৃতি সংহারী কাজ। দু একটা খাল আছে তাও দখলে চলে যাচ্ছে । নদী ভরাট ,নাব্যতা নষ্ট তা হলেতো বন্যা হবেই । জমির লবনাক্ততা বৃদ্ধিও শস্য উৎপাদন ব্যাহত। লবন যদিও শিল্প হিসাবে গন্য। তার কোন যথাযথ দেখভাল করার কেউ নেই।

আমাদের পেকুয়ায় জন্মেছে অনেক আলোকিত মানুষ তারা কবে মায়ের নীড় ছাড়ল পরিযায়ী পাখির মত, জানা নেই ,কালে ভাদ্রে আসে। আবার নিরুদ্ধেশ তারা মনে করে এ জনপদ এখন চেরনোবিল। পারমানবিক দূর্ঘটনার পরে মনুষ্য বসতি সরিয়ে নিলে উক্ত এলাকা জীবজন্তর আশ্রয়ে পরিনত হয়। মানুষের দৃষ্টিতে ভয়াল । ভাল মানুষ গুলো এলাকায় জাতির মানস গঠনে ভূমিকা রাখেন তাই আমাদের প্রয়োজন তাদের ডাকা। কথায় বলে যেখানে গুনিজনের কদর নাই সেখানে গুনিজন জন্মায় না। সুন্দর অবকাঠামোয় নির্মিত আমাদের শান্তিময় পেকুয়ায় আমরা আলোকিত মানুষদের বেশী বেশী চাই ,আপনারা আসুন,আমরা আপনাদের অপেক্ষায় ।

প্রান্তিক চাষী যাদের মাথার ঘাম পায়ে ফেলে লবন উৎপাদন। মৌসুম শেষে তারা নি:স্ব। ফুলে ফেঁফেঁ উঠে মধ্য স¦ত্ব ভোগী, সরবরাহ কারী , লগ্নিকারি। অথচ সারা দেশে লবনের চাহিদা মিঠানোর জন্য পেকুয়ার লবন চাষীদের ও অবদান আছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন বেডীবাধ গুলো বর্ষা আসলেই নদী- সাগরে বিলীন হয়। তখন নিদারুন কষ্টে দিন যাপন করে উপকূলের মানুষ। টেকসই বাধ নির্মান এখনো স্বপ্ন। অরক্ষিত উপকূল, অবস্থাপন্ন মানুষের বসবাস তবে প্রান্তিক জনগোষ্টি দারিদ্রতার দিকে ধাবমান। সূন্দর অবকাঠামোয় নির্মীত কিন্তু শান্তিময় নয়। আলোকিত মানুষ আছে। তবে ঘরে বাতি দেয় না। কথাগুলো বলছি আক্ষেপে। একটু ফিরে তাকান আপনার সোনালী শৈশবের দিকে । আপনার উত্তর প্রজন্মকে বলুন । জাতীয় গননায় কক্সবাজার জেলায় শিক্ষার হার কম আবার জেলায় পেকুয়া সর্বনিম্মে। সমৃদ্ধ জনপদ উর্বর ভূমি ,ধান হয়,মাছ হয়, লবন হয়। তবে শিক্ষার হার কম। বিস্তৃর্ণ মাঠ,খাল, নদী নালা,তবে বন্যা ও সামুদ্রিক জোয়ারে ভেসে যায় ।

আমার উৎস পিছনের জনপদে। বিশ্রাম বিনোদন মানুষের অন্যতম মৌল মানবিক চাহিদা একসময় প্রত্যেক গ্রামে খেলার মাঠ ছিল। চলত হা-ডু-ডু,দাঁডিয়া বান্ধা,ফুটবল,ভলিবল, গোল্লাছুট ইত্যাদি খেলা। জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও সদিচ্ছার অভাবে মাঠগুলো সংকুচিত, অথবা বিলীন, নেই কোন পার্ক কিংবা বিশ্রাম,বিনোদন কেন্দ্র। পেকুয়ায় অনেক দৃষ্টি নন্দন জায়গা আছে সেখানে বিনোদনের চাহিদা মিটানোর মত অবস্থান আছে। ফিরাতে হবে খেলার মাঠ। গডে তুলতে হবে সংস্কৃতি র্চ্চার কেন্দ্র। ক্রীড়া ,সংস্কৃতি বিনোদন যুব মানস গঠনে বিরাট ভূমিকা রাখে। স্বাস্থ্যবান জাতি গঠনে তার বিকল্প নাই। এসবের অভাবে কিশোর থেকে যুবসমাজ উচ্ছন্নে যাচ্ছে। কেউ মাদকাসক্ত, কেউ বখাটে, কেউ ইভটিজার।

পাবলিক লাইব্রেরী স্থাপন করে ক্ষুদ্র পরিষরে হলে ও পাঠভ্যাস গডে তুলতে হবে। সাথে থাকবে মুরব্বিয়ানা । ইতিবাচক দিক হচ্ছে ইদানিং পেকুয়ায় নির্বাচিত সমাজ কমিটি দেখা যাচ্ছে। ঐ কমিটির কর্তা ব্যক্তিরা অবশ্যই সমাজিক মুরিব্বিয়ানায় অংশ গ্রহন করবেন । সন্দেহ ভাজন চলা ফেরায় প্রশ্ন করবেন। অন্যায় দেখলে প্রতিরোধ করবেন। ঘরোয়া সালিশ করবেন। এভাবে সামাজিকতা তথা বিয়ে, মেজবান ইত্যাদি সমাজিক অনুষ্টানে পুরোহিত্য দেখাবেন।

আমরা ছোটবড় আবাল বৃদ্ধ বনিতা সবাই সামাজিক হিসাবে গডে উঠব । আর আমরা না থাকলেও তোমরা সেখানে আমাদের খুঁজে পাবে। কথা গুলো লিখার সময় সবকিছু গুচিয়ে লিখতে পারিনাই। জানি না কতটুকু সঠিক বলেছি। যদি সঠিক হয় তবে মনে করব সত্যের কাছাকাছি থেকেছি ।