এম এনাম হোসেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত :
আয়েশা আহমেদ মেধাবী ও জ্বলজ্বলে তারকার মতো আলোকিত একটি নাম। যে নামের উজ্বল্যে আলোকিত হয়েছে আমাদের প্রিয় দেশ। মহিমান্বিত করেছে প্রবাসের একখণ্ড বাংলাদেশকে। গৌরবান্বিত করেছে তার মা-বাবাকে। সতের বছরের আবুধাবি প্রবাসী এই তরুণী আমেরিকা ভিত্তিক আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ‘Breakthrough Junior Challenge 2017 বিজ্ঞানসংক্রান্ত ভিডিও প্রতিযোগিতার প্রি-ফাইনাল রাউন্ডে উত্তীর্ণ হয়েছে। সমগ্র পৃথিবীর আট হাজারেরও অধিক অংশগ্রহনকারীদের মধ্য থেকে মাত্র ঊনত্রিশ জন যোগ্য প্রার্থী এই পর্যায়ে রয়েছে। বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে আয়েশা মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা অঞ্চল থেকে দুইজন বিজয়ীর একজন।

মনেপ্রাণে বাংলাদেশের এই সন্তান আয়েশার পছন্দের বিষয় গণিত, মহাকাশ ও পদার্থবিদ্যা। বিজ্ঞানের প্রতি তার অগাধ আগ্রহ। তিনি এই বিষয়ে খুব ছোটবেলা থেকে লেখালেখি করে আসছেন। ইংরেজি তার প্রথম ভাষা হলেও বাংলা সাহিত্যের প্রতি যথেষ্ট অনুরাগ রয়েছে। বিজ্ঞান অন্তপ্রাণ আয়েশা সাহিত্যেও কম নয়। ইংরেজি কবিতা লিখে আর আবৃত্তি করে এখানকার অনেক প্রতিযোগিতায় তিনি বিজয়ী হয়েছেন। আয়েশা প্রখ্যাত ‘টেডটক’এর সাথেও জড়িত। ওর ‘টেডটক’ বক্তৃতা এখানে অনেক সুনাম কুড়িয়েছে।
আয়েশা মা-বাবার একমাত্র সন্তান। বাবা মুনীর আহমেদ শাহাবুদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে সপরিবারে বসবাস করছেন। তিনি একজন উচ্চপদস্থ ব্যাংক কর্মকর্তা এবং প্রশিক্ষক।
অনলাইনে আপনাদের ভোট আয়েশাকে জনপ্রিয়তার যাচাইয়ে শীর্ষে পৌঁছে দিতে পারে। আপনারা ফেসবুকে ওর ভিডিওর লিংকে গিয়ে লাইক করুন। এটাই ভোট হিসেবে গণ্য হবে। ওর ভিডিওটি আপনাদের টাইমলাইনে ইচ্ছে করলে শেয়ার করতে পারেন। আয়েশা আমাদের বাংলাদেশের প্রতিনিধি। বিশ্বখ্যাত এই প্রতিযোগিতায় সে আমাদের লাল-সবুজের মানচিত্র। ওর বিজয় আমাদের বিজয়। ২ নভেম্বরের মাঝে দিতে হবে এই লিংকে- এই লিংকে ভোট দিন।

আয়েশা জন্মলগ্ল থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে থাকেন। ছোটবেলা থেকে তিনি খুব মেধাবী ছাত্রী| এই বছর ২০১৭ সালে সে একাধারে এ লেভেল (ব্রিটিশ কারিকুলাম) এবং এপি (আমেরিকান কারুকুলাম) অত্যন্ত কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হয়েছেন| আয়েশা কম্পিউটার সাইন্স বিষয়ে পড়াশুনা করায় আগ্রহী| তার ইচ্ছা বিজ্ঞান ও মানবতার জন্য নিজেকে নিয়োজিত করতে| আয়েশা’র HTML, C, JAVA, এবং Python ইতাদি প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়াজে সম্যক ধারণা আছে| ও ইংরেজি ভাষায় কবিতা লিখে,এখানে চারবার বিজয়ী হয়েছে|
আয়েশা গ্রেড ১২এ ওর স্কুলে ‘হেড অফ রোবোটিক্স ক্লাব’ ছিলো| ও গ্রেড ১১এ আবুধাবী আন্ত:স্কুল বিজ্ঞান মেলায় প্রথম স্থান অধিকার করেছিলো। সে তার জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাকে অন্যের কাছে পৌঁছে দিতে চায়|

বই পড়া এবং শিক্ষা ভিত্তিক ভিডিও দেখা আয়েশার সখ| এগুলি তার বাবার কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পেয়েছেন| কখনো কোনো গৃহ শিক্ষক ছিলো না তার।সপ্তম শ্রেণী পর্যন্ত ওর বাবার কাছে শিখত, তারপর ও নিজে নিজেই পড়ত। এমনকি তার সহপাঠীরাও তার কাছে পড়ত বলে জানা গেছে|
আয়েশা তার এই সাফল্যে খুব খুশী।এই প্রতিবেদককে সে বলেন ওর এই যাত্রা মাত্র শুরু, সে জীবনে অনেক দূর যেতে চায় এবং এই সাফল্যের ধারাবহিকতা রাখতে ও এই অর্জনের জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন। জীবনের খুব কম সময় তিনি বাংলাদেশে থেকেছে| তারপরও নিজের দেশের প্রতি ওর অগাধ টান| তার পৈতৃকভিটে বরিশাল। দেশের দারিদ্রতা নিয়ে যুদ্ধ করতে স্বপ্ন দেখেন আয়েশা।