👉 ইসরাইল থেকে মুক্তির পর জামায়াত ছাড়লেন মুশতাক আহমদ

বিদেশ ডেস্ক:
পাকিস্তানের সাবেক সিনেটর মুশতাক আহমদ জামায়াত-ই-ইসলামি থেকে পদত্যাগ করেছেন। তবে তিনি স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, এই সিদ্ধান্তের পেছনে দলের সঙ্গে কোনো ব্যক্তিগত বিরোধ বা মনোমালিন্য নেই।

শুক্রবার (১০ অক্টোবর) জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

ইসরাইলি হেফাজত থেকে মুক্তি পেয়ে দেশে ফেরার পর বৃহস্পতিবার এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে মুশতাক আহমদ বলেন, মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও সাংবিধানিক অধিকারের পক্ষে স্বাধীনভাবে কাজ করার জন্য তিনি নিজস্ব রাজনৈতিক পরিসর গড়ে তুলতে চান।

তিনি জানান, ‘আমি আনুষ্ঠানিকভাবে জামায়াত-ই-ইসলামি থেকে পদত্যাগ করেছি। ১৯ সেপ্টেম্বর গ্লোবাল সমুদ ফ্লোটিলায় যাত্রাপথে থাকাকালীন আমি পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি।’ তবে দলটি এখনো তার পদত্যাগ আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করেনি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

দলের ভেতরে নীতিনিষ্ঠ অবস্থান ও নাগরিক স্বাধীনতার পক্ষে সোচ্চার ভূমিকায় পরিচিত এই নেতা বলেন, পদত্যাগ তার জীবনের একটি আবেগঘন সিদ্ধান্ত। ‘সেদিন রাতে আমি কেঁদেছিলাম, যেমন কেঁদেছিলাম আমার মা মারা যাওয়ার রাতে,’ বলেন মুশতাক।

তিনি আরও জানান, এখনই তিনি কোনো রাজনৈতিক দলে যোগ দিচ্ছেন না। কারণ তার মতে, ‘রাজনৈতিক সংগঠনের কাঠামোর ভেতরে অনেক সীমাবদ্ধতা থাকে, কখনও কখনও স্বাধীনভাবে কাজ করাই প্রয়োজন।’

মুশতাক আহমদ বলেন, তিনি মানবাধিকার, গণতন্ত্র, স্বাধীন গণমাধ্যম, ড. আফিয়া সিদ্দিকীর মুক্তি, ফিলিস্তিনের ন্যায়বিচার এবং পাকিস্তানের প্রদেশগুলোর সাংবিধানিক অধিকার নিয়ে কাজ চালিয়ে যেতে চান।

তিনি স্বীকার করেন, জামায়াতের ভেতরে কিছু বিষয়ে মতপার্থক্য ছিল, তবে তা ব্যক্তিগত বিরোধে রূপ নেয়নি। ‘দলের ভেতরে কিছু বিষয়ে ভিন্নমত ছিল, কিন্তু আমার কারও সঙ্গে কোনো রাগ বা শত্রুতা নেই,’ বলেন তিনি।

জামায়াতের আমির হাফিজ নাঈমুর রহমান সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘হাফিজ নাঈমুর রহমান একজন নেতা; তাঁর সঙ্গে আমার কোনো মতবিরোধ নেই। আমি চাই, আমার আর জামায়াতের মধ্যে কোনো সমস্যা না থাকুক, আর আমার কারণে দলটিরও কোনো সমস্যার সৃষ্টি না হোক।’

পদত্যাগের পাশাপাশি মুশতাক আহমদ একটি নতুন জনআন্দোলনের উদ্যোগের কথাও জানান। তিনি বলেন, ‘আমি সারা পাকিস্তানে এক লাখ ফিলিস্তিন কমিটি গঠনের পরিকল্পনা নিয়েছি, যাতে সাধারণ মানুষ ফিলিস্তিনের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হতে পারে।’

ইসরাইলি বাহিনীকে ‘কাগুজে বাঘ’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, গ্লোবাল সমুদ ফ্লোটিলায় যাত্রা ও পরবর্তীতে ইসরাইলে আটক অবস্থায় তিনি যে পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিলেন, তা ছিল ধৈর্য ও বিশ্বাসের এক কঠিন পরীক্ষা।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বিলম্বিত প্রতিক্রিয়ার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘গাজায় যুদ্ধবিরতি যদি দুই বছর আগে হতো, সেটাই হতো প্রকৃত সাফল্য। এখনকার এই ফলাফলের কৃতিত্ব হামাসেরই, কারণ তাদের সংগ্রাম অদম্য।’