সিবিএন ডেস্ক:
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে অবস্থিত রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পগুলোর জন্য ২ হাজার কোরবানির পশু বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ১ হাজার ৬৩৫টি গরু এবং ৪২৯টি ছাগল। এসব পশু সংশ্লিষ্ট ক্যাম্প ইনচার্জদের (সিআইসি) মাধ্যমে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মাঝে বিতরণ করা হবে।
বুধবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ শামসুদ্দোজা। তিনি বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, প্রতিটি ক্যাম্পবাসী যেন কোরবানির মাংস পায়। আরও কিছু পশু বরাদ্দ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তা এলে বাকি ক্যাম্পগুলোতেও বিতরণ করা হবে।”
সারাদেশের মতো রোহিঙ্গা শরণার্থীরাও ঈদের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা কোরবানির পশু সরবরাহ, মাংস বিতরণ এবং ঈদ উৎসবের সুশৃঙ্খল আয়োজন নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছে। এতে শরণার্থী ক্যাম্পগুলোতে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে। শিশুরা পেয়েছে নতুন পোশাক, ঘরবাড়ি পরিষ্কার করে তৈরি হচ্ছে ঈদের দিনের জন্য।
কুতুপালং ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নারী আছিয়া খাতুন বলেন, “আমার ছেলে-মেয়েরা নতুন জামা পেয়েছে। এবার ঈদের মতো ঈদ লাগছে। ঘর পরিষ্কার করেছি, রান্নার প্রস্তুতি নিচ্ছি। কোরবানির মাংস পেলে সবাই মিলে ভাগ করে খাব। শিশুরা খুব খুশি।”
থাইংখালী ক্যাম্পের আয়াত উল্লাহ বলেন, “আমাদের মতো সাধারণ রোহিঙ্গাদের জন্য কোরবানির মাংস এক বিরাট আশীর্বাদ। বছরের অন্য সময়ে গরুর মাংস খাওয়া হয় না বললেই চলে। ঈদের এই সময়টায় যখন বাচ্চারা মাংসের জন্য মুখিয়ে থাকে, তাদের সেই আনন্দটাই ঈদের প্রকৃত সৌন্দর্য।”
জানা গেছে, ক্যাম্পে বসবাসরত কিছু সচ্ছল রোহিঙ্গা নিজেরাও ব্যক্তিগতভাবে কোরবানির পশু কিনেছেন। স্থানীয় প্রশাসন তাদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে।
উপজেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব সাদমান জামি চৌধুরী জানান, আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থার সহায়তায় কোরবানির পশু বরাদ্দের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগির পাশাপাশি মানবিক সহায়তা ও সামাজিক সহাবস্থানের দৃষ্টান্ত স্থাপন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
কমিশনার মোহাম্মদ শামসুদ্দোজা বলেন, “রোহিঙ্গাদের যেন ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত না হতে হয়, সে লক্ষ্যেই এই বরাদ্দ। আমরা নিশ্চিত করতে চাই, প্রতিটি ক্যাম্পের বাসিন্দা যেন কোরবানির মাংস পায়।”