মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

# উখিয়া উপজেলায় ভোটার : ১,৬৭,৯৪৬
# টেকনাফ উপজেলায় ভোটার : ২,০০,০৭০
# আসনে হিজড়া ভোটার : ৫ জন
# ১০৭ কেন্দ্রে মোট বুথ সংখ্যা : ৭০৯

সদ্য প্রকাশিত ভোটার তালিকা অনুযায়ী কক্সবাজার জেলায় মোট ভোটার ১৮ লক্ষ ১৪ হাজার ৮৬৩ জন। তারমধ্যে, পুরুষ ভোটার ৯ লক্ষ ৫৭ হাজার ৮১৬ জন এবং মহিলা ভোটার ৮ লক্ষ ৫৭ হাজার ৪১ জন। জেলায় হিজড়া ভোটার রয়েছে মাত্র ৬ জন। কক্সবাজার-৪ সংসদীয় আসন (উখিয়া-টেকনাফ) এ মোট ভোটার ৩ লক্ষ ৬৮ হাজার ১৬ জন। তারমধ্যে, পুরুষ ভোটার ১ লক্ষ ৮৮ হাজার ৫৫৭ জন, মহিলা ভোটার ১ লক্ষ ৭৯ হাজার ৪৫৪ জন এবং হিজড়া ভোটার ৫ জন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘লক্ষী আসন’ খ্যাত এ আসনে মোট ভোটার ছিলো ৩ লক্ষ ২৬ হাজার ৯৭১ জন। এ আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চেয়ে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটার বেড়েছে ৪১ হাজার ৪৫ জন। জেলার ৪টি সংসদীয় আসনের মধ্যে সর্বনিন্ম সংখ্যক ভোটার রয়েছে কক্সবাজার-৪ আসনে।

কক্সবাজারের জেলা নির্বাচন অফিস সুত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনের জাতীয় আসন নম্বর ২৯৭ এবং জেলা আসন নম্বর কক্সবাজার-৪। ভৌগোলিকভাবে আসনটি দেশের সর্বদক্ষিণে, মায়ানমার সীমান্তবর্তী, আলোচিত সেন্টমার্টিন দ্বীপ নিয়ে গঠিত হওয়ায় এ আসনটির গুরুত্ব খুব বেশি। এ আসনে রয়েছে প্রায় ১৫ লক্ষ রোহিঙ্গা শরনার্থীর অবস্থান। পৃথিবীর সর্ববৃহৎ শরনার্থী ক্যাম্প এ আসনেই অবস্থিত। সীমান্ত দিয়ে মাদক সহ বিভিন্ন পণ্য হরদম চোরাচালান হয় এ আসনের উপর দিয়ে। রোহিঙ্গা শরনার্থী ব্যবস্থাপনার কারণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি থাকে এ আসনের দিকে। ‘লক্ষী আসন’ হিসাবে পরিচিত এই আসনে যে রাজনৈতিক দলের মনোনীত প্রার্থী নির্বাচনে বিজয়ী হন, সে রাজনৈতিক দলই সাধারণত সরকার গঠন করে থাকে বলে জণখ্যাতি রয়েছে।

জেলা নির্বাচন অফিস এর তথ্য মতে, এ আসনের ৩ লক্ষ ৬৮ হাজার ১৬ জন ভোটারের মধ্যে উখিয়া উপজেলার ভোটার সংখ্যা ১ লক্ষ ৬৭ হাজার ৯৪৬ জন। তারমধ্যে, পুরুষ ভোটার ৮৬ হাজার ৫০০ জন, মহিলা ভোটার ৮১ হাজার ৪৪৪ জন এবং হিজড়া ভোটার ২ জন। টেকনাফ উপজেলার ভোটার সংখ্যা ২ লক্ষ ৭০ জন। তারমধ্যে, পুরুষ ভোটার ১ লক্ষ ২ হাজার ৫৭ জন, মহিলা ভোটার ৯৮ হাজার ১০ জন এবং হিজড়া ভোটার ৩ জন।

কক্সবাজার-৪ আসনে মোট ভোট কেন্দ্র ১০৭ টি। তারমধ্যে, উখিয়া উপজেলায় ভোট কেন্দ্র ৪৭ টি। টেকনাফ উপজেলায় ভোট কেন্দ্র ৬০ টি। এ আসনের বিগত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট কেন্দ্র ছিলো ১০৪ টি। এ আসনে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তাবিত ১০৭ টি ভোট কেন্দ্রে মোট বুথ সংখ্যা ৭০৯ টি। তারমধ্যে, পুরুষ বুথ ৩৪৩ টি এবং মহিলা বুথ ৩৬৬ টি। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সাথে সরকার একইদিনে গণভোট করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ভোট কেন্দ্র গুলোতে বুথ সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সুত্র জানিয়েছে।

স্বাধীনতা উত্তর কক্সবাজার-৪ আসনে সাবেক সংসদ সদস্যবৃন্দ :

কক্সবাজার মহকুমা থাকাকালে এ আসনটি চট্টগ্রাম-১৮ আসন নামে পরিচিত ছিল। তখন আসনটিতে উখিয়া, টেকনাফ উপজেলার সাথে রামু উপজেলাও সংযুক্ত ছিলো। পূর্বের চট্টগ্রাম-১৮ আসনে ১৯৭৩ সালে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ওসমান সরওয়ার আলম চৌধুরী ও ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শাহজাহান চৌধুরী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে ১৯৮৪ সালে কক্সবাজার মহকুমা থেকে জেলায় উন্নীত হলে অন্যান্য আসনের সাথে কক্সবাজার-৪ আসনটির ভৌগোলিক এলাকা পূনর্বিন্যাস করে উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলা নিয়ে এ লক্ষী আসনটি গঠিত হয়। তখন থেকে ১৯৮৬ সালে অনুষ্ঠিত তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি হতে আবদুল গফুর চৌধুরী, ১৯৮৮ সালে অনুষ্ঠিত চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল গণি, ১৯৯১ সালে অনুষ্ঠিত পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি হতে শাহজাহান চৌধুরী, ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারীতে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি হতে শাহজাহান চৌধুরী, ১৯৯৬ সালের জুন মাসে অনুষ্ঠিত সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ হতে অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী, ২০০১ সালে অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি হতে শাহজাহান চৌধুরী, ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ হতে আবদুর রহমান বদি, ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ বিতর্কিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শাহীন আক্তার পর পর ২ বার এমপি নির্বাচিত হন।

লক্ষী আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীরা :
কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনে ইতিমধ্যে বিএনপি’র ৪ বারের সাবেক সংসদ সদস্য, সাবেক হুইপ ও জেলা বিএনপি’র সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী, জামায়াত ইসলামী থেকে টেকনাফের হোয়াইক্ষ্যং ইউনিয়ন পরিষদের ৪ বারের চেয়ারম্যান ও জেলা জামায়াত ইসলামীর আমীর নুর আহমদ আনোয়ারী, এবি পার্টি থেকে দলের কেন্দ্রীয় শরনার্থী বিষয়ক সম্পাদক, বিশিষ্ট সাংবাদিক শামসুল হক শারেক, এনসিপি থেকে মুহাম্মদ হোসাইন মনোনয়ন পেয়েছেন।