১৯৭১ সালের বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খানের পদত্যাগ দাবি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল ও বাম সংগঠনের নেতারা।

রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে এ দাবি জানানো হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইয়াসিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে সংগঠনের সভাপতি আলাউদ্দিন মহসিন বলেন, “ডিসেম্বর এলেই একটি গোষ্ঠী মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস অস্বীকার করতে উঠে পড়ে লাগে। অধ্যাপক শামীম উদ্দিন খানের বক্তব্য জাতির চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং তাকে অবিলম্বে জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করতে হবে।”

গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সংগঠক ধ্রুব বড়ুয়া বলেন, “বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড কোনো বিতর্কিত বিষয় নয়। রাও ফরমান আলীর ডায়েরিতেই এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ রয়েছে। ইতিহাস অস্বীকার করে ১৯৭১ সালকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে, যা আমরা মেনে নিতে পারি না। এই বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে।”

চাকসুর এজিএস আয়ুবুর রহমান তৌফিক বলেন, “শহীদ বুদ্ধিজীবীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত একটি চেয়ারে বসে এ ধরনের বক্তব্য দেওয়া মুক্তিযুদ্ধের প্রতি চরম অবমাননা। আমরা যেমন ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের চেতনাকে মুছতে দেব না, তেমনি ১৯৭১-কেও মুছতে দেব না। এ বক্তব্য ছিল পুরোপুরি রাজনৈতিক। এজন্য তাকে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে এবং পদত্যাগ করতে হবে।”

অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক। গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর তিনি উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এর আগে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রাজনীতিতে ‘সাদা দল’-এর আহ্বায়ক ছিলেন। বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের পৃথক সংগঠন ‘জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম’-এর দাবি, সাদা দল মূলত জামায়াতপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন হিসেবে পরিচিত।

রোববার দুপুর ১টায় উপাচার্যের দপ্তরে আয়োজিত ‘মুক্তচিন্তা, মুক্তিযুদ্ধ এবং একাত্তরের বুদ্ধিজীবী হত্যা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক শামীম উদ্দিন খান শহীদ বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডকে ‘অবান্তর’ বলে মন্তব্য করেন। তাঁর এই বক্তব্যকে ঘিরেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া ও বিতর্কের সৃষ্টি হয়।
– সমকাল