ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:
নাগরিক ছাত্র ঐক্যের সাংগঠনিক কার্যক্রমকে আরও গতিশীল, শক্তিশালী ও ভবিষ্যতমুখী করার লক্ষ্যে
নাগরিক ছাত্র ঐক্য কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের ৪১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।এই কমিটিতে আহবায়ক মনোনীত হয়েছেন ফজলে রাব্বী এবং সদস্য সচিব হিসেবে মনোনীত হয়েছেন তানভীর ইসলাম স্বাধীন।
জানা গেছে, গতকাল ১৪ ডিসেম্বর (২০২৫) নাগরিক ছাত্র ঐক্যের উদ্যোগে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে “নাগরিক ছাত্র ঐক্যের কেন্দ্রীয় আহবায়ক কমিটি ঘোষণা ও আগামীর ছাত্ররাজনীতি কেমন হওয়া উচিত?” শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।অনুষ্ঠান শেষে নাগরিক ছাত্র ঐক্যের ৪১ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।
ঘোষিত আহবায়ক কমিটি নিম্নরূপ:
আহবায়ক: ফজলে রাব্বী
সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক: গোলাম মোস্তাফা (রেজা)
যুগ্ম আহবায়ক: বদরুল ইসলাম জামিল, আল মুস্তাকিম, মিথুল সিকদার, ইভা ইয়াসমিন, আবু সাইদ শ্রাবণ
সদস্য সচিব: তানভীর ইসলাম স্বাধীন
সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব: মহিবুল্লাহ সিফাত
যুগ্ম সদস্য সচিব: নিহামূল নিহাম, তাওহিদুল ইসলাম নোমান, জামিউল খান দিপ্ত, মোস্তানছিরুল হক চৌধুরী, সাজিয়া সোয়াদ, আসির আনজার
সদস্য:
খাওয়াজা আল কাফি, আল শাহরিয়ার নাফিজ জয়, অর্নব দাস, রিয়াজুল ইসলাম খান, তাইয়্যেবা রুদ, মঈন ইসলাম, সিহাব হোসেন ওসামা, আবু ইসহাক, ইজমাইল হক, আকাশ হোসেন, মোঃ যুবরাজ, রাকিব ইসলাম, মোঃ সাকিব, আহাদ রেজা, মোঃ ইব্রাহীম, আশিক হাসান, তৌফিক আহমেদ, মেহেদী হাসান, দিদার উল্লাহ, তামিম ইকবাল, আল আমিন, রাকিবুল ইসলাম সোনাই, আবু সালেহ, নুরুল ইসলাম শান্ত, মোহাম্মদ ছাব্বির হাসান, শরীফুল ইসলাম শরীফ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ও নাগরিক ছাত্র ঐক্যের মিডিয়া সেলের সদস্য নাফিস হাসান হিমেলের সঞ্চালনায় উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাকসুর সাবেক দুইবারের ভিপি ও চাকসুর জিএস, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি জনাব মাহমুদুর রহমান মান্না। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক জনাব শহীদুল্লাহ কায়সার, প্রেসিডিয়াম সদস্য জনাব দেলয়ার হোসেন রাজা ও জনাব মোফাখখারুল ইসলাম নবাব। এছাড়াও অতিথি হিসেবে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং ছাত্রপ্রতিনিধিবৃন্দ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।প্রোগামে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী ও নাগরিক ছাত্র ঐক্যের সংগঠক মোহাম্মদ ফজলে রাব্বী।
আলোচনা সভায় বক্তারা আগামীর ছাত্ররাজনীতির রূপরেখা, শিক্ষার্থীদের অধিকার, ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিতকরণ এবং কল্যাণরাষ্ট্রভিত্তিক রাজনীতির প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, “ছাত্ররাজনীতি হতে হবে সন্ত্রাস ও লেজুড়বৃত্তি মুক্ত, আদর্শভিত্তিক ও শিক্ষার্থীদের প্রকৃত স্বার্থরক্ষায় নিবেদিত।”
আলোচনা সভায় ছাত্র প্রতিনিধিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সানাউল হক, ছাত্র শিবিরের ছাত্র অধিকার বিষয়ক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন সহ- সভাপতি ইমরান হোসেন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র সেনার সভাপতি আজাদ, রাষ্ট্র সংস্কার ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি লামিয়া ইসলাম, জুলাই ফোর্সের আহবায়ক মোশারাফ হোসেনসহ অন্যান্য সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সানাউল হক
তিনি বলেন, আগামীর ছাত্ররাজনীতি হতে হবে শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের প্ল্যাটফর্ম, যেখানে দলীয় স্বার্থ নয় বরং শিক্ষার্থীদের বাস্তব সমস্যা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধই হবে মুখ্য।
ছাত্র শিবিরের ছাত্র অধিকার বিষয়ক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম
তিনি বলেন, ক্যাম্পাসে ভিন্নমত ও সহাবস্থানের সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনতে হবে এবং ছাত্ররাজনীতিকে সন্ত্রাস ও দখলদারিত্বের রাজনীতি থেকে বের করে নৈতিক ও আদর্শিক ধারায় ফিরিয়ে আনতে হবে।
ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সভাপতি ইমরান হোসেন
তিনি বলেন, ছাত্ররাজনীতি হতে হবে ন্যায়বিচার, মূল্যবোধ ও মানবিকতার ভিত্তিতে গড়ে ওঠা, যেখানে শিক্ষার্থীদের মর্যাদা ও অধিকার সুরক্ষা নিশ্চিত হবে।
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র সেনার সভাপতি আজাদ
তিনি বলেন, শিক্ষাঙ্গনে সুস্থ রাজনৈতিক চর্চা ও নেতৃত্ব বিকাশের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সামাজিক দায়িত্ববোধ জাগ্রত করতে কার্যকর ছাত্ররাজনীতির বিকল্প নেই।
রাষ্ট্র সংস্কার ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি লামিয়া ইসলাম
তিনি বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের সংগ্রামে ছাত্রসমাজকে অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে এবং আগামীর ছাত্ররাজনীতি হতে হবে জবাবদিহিমূলক, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সংস্কারমুখী।
জুলাই ফোর্সের আহবায়ক মোশারাফ হোসেন
তিনি বলেন, ২০২৪ সালের গণআন্দোলনের চেতনা ধারণ করে ছাত্ররাজনীতিকে জনগণের স্বার্থে ও গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের শক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
জকসুর জিএস পদপ্রার্থী জিএমএস আহমেদ রেজা বলেন,
আগামীর ছাত্রসংসদ ও ছাত্ররাজনীতিকে দলীয় প্রভাবমুক্ত, গণতান্ত্রিক ও শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্বশীল প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করতে হবে। জকসু নির্বাচনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের হারানো অধিকার ফিরিয়ে আনার সময় এখনই।
নাগরিক ছাত্র ঐক্যের কেন্দ্রীয় সদস্য রিয়াজুল ইসলাম বলেন,নাগরিক ছাত্র ঐক্য একটি আদর্শভিত্তিক ছাত্র সংগঠন হিসেবে ক্ষমতার রাজনীতি নয়, বরং শিক্ষার্থীদের অধিকার ও কল্যাণকে অগ্রাধিকার দিয়ে রাজপথ ও ক্যাম্পাসে কাজ করবে।
নাগরিক ছাত্র ঐক্যের নবনির্বাচিত আহবায়ক মোহাম্মদ ফজলে রাব্বী বলেন,
নাগরিক ছাত্র ঐক্য আগামীর ছাত্ররাজনীতিতে একটি নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যেখানে সহিংসতা নয় বরং যুক্তি, নৈতিকতা ও জনস্বার্থই হবে রাজনীতির মূল চালিকাশক্তি।
নাগরিক ছাত্র ঐক্যের নবনির্বাচিত সদস্য সচিব তানভীর ইসলাম স্বাধীন বলেন,এই আহবায়ক কমিটি শিক্ষার্থীদের অধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক ছাত্ররাজনীতি প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে এবং সংগঠনকে তৃণমূল থেকে শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করাবে।
সভা শেষে নবগঠিত কমিটিকে শুভেচ্ছা জানানো হয় এবং আগামীর দিনে শিক্ষার্থীদের অধিকার ও গণতান্ত্রিক ছাত্ররাজনীতি প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়।
