বার্তা পরিবেশক:
কক্সবাজার পৌরসভার সড়কগুলোতে সবুজায়ন ও সৌন্দর্যবর্ধনে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজ্ঞাপনী সংস্থার বিজ্ঞাপনী সাইনবোর্ড রাতের আঁধারে ভাংচুর ও কেটে নিয়ে যাচ্ছে শহরের দু’টি স্থানীয় বিজ্ঞাপনী সংস্থার লোকজন। তারা ব্যবসায়িক প্রতিহিংসাবশত কিছুদিন পরপর বারবার একই কান্ড ঘটিয়ে যাচ্ছে। তাদের এই দুর্বৃত্তায়নের কারণে প্রতিষ্ঠানটির ২৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এমন অভিযোগ তুলেছে চট্টগ্রামের বিজ্ঞাপনী সংস্থা ‘কর্পোরেট’। সংস্থাটি কক্সবাজার পৌরসভার প্রশাসককে বিষয়টি লিখিত ভাবে অভিযোগ দিয়েছে।
তাদের অভিযোগ মতে, মাত্র দেড়মাসের ব্যবধানে কক্সবাজার বিভিন্ন সড়ক থেকে তাদের বিজ্ঞাপনী সাইনবোর্ড ৬ দফায় ভাংচুর ও কেটে নিয়ে গেছে ওই দুটি বিজ্ঞাপনী সংস্থার লোকজন। গত ১৭ আগষ্ট, ১৫ সেপ্টেম্বর, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২১ সেপ্টেম্বর ও ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে শহরের বিভিন্ন সড়কে এমন ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ ২২ অক্টোবর বেলা ১১টায় দিনদুপুরে একই কান্ড ঘটিয়েছে তারা।
তাদের লিখিত অভিযোগে বলা হয়, চট্টগ্রামের বিজ্ঞাপনী সংস্থা ‘কর্পোরেট’ কক্সবাজার পৌর এলাকায় সড়কের সৌন্দর্যবর্ধন ও সবুজায়নের জন্য ২০১৮ সালের ১৯ নভেম্বর কক্সবাজার পৌরসভার সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়। নিজেদের অর্থায়নে শহরের প্রধান প্রধান সড়কের মাঝখানের ডিভাইডারে সবুজায়নের পাশাপাশি বিজ্ঞাপনী সাইনবোর্ড লাগানোর শর্তে ১২ বছরের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করে।
তাদের মতে, পৌরসভার পর্যটন এলাকার ডলফিন চত্বর, কলাতলী মিড আইল্যান্ড, সাইমন রোড, সুগন্ধা পয়েন্ট বীচ রোড, প্রাসাদ প্যারাডাইস, সী-গাল, জলতরঙ্গ, রেডিসন ব্লু, হান্ডি, হোটেল কাসুন্দি, লাবণী পয়েন্ট, সী ওয়ার্ল্ড রোড, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, মিড আইল্যান্ড ও কক্সবাজার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে সবুজায়ন ও সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করেছে সংস্থাটি। তারা পৌরসভাকে নিয়মিত বিজ্ঞাপন কর মডেল ট্যাক্সও দিয়ে আসছে।
তাছাড়াও বিগত বছরগুলোতে সৌন্দর্যবর্ধন, বাগান সংরক্ষণ ও বৃক্ষরোপন, বর্জ্য অপসারণ, মাটি ভরাট, এম এস বক্স পাইপ দ্বারা বাগানের বেস্টনি তৈরি, সাব-মারসিবল পাম্প দ্বারা বাগানের জন্য পানির ব্যবস্থা, আলোকসজ্জা, বৈদ্যুতিক সংযোগ, ক্যাবল, বৈদ্যুতিক মিটার, বাগানের গ্রীল ও বাস টার্মিনাল ভবন রংকরণ, বাস টার্মিনানে যাত্রীদের আসন ব্যবস্থার চেয়ার, ব্রেস্ট ফিডিং কর্ণার, অফিস আসবাবপত্র, সিভিল ওয়াক, চুক্তিতে বাধ্যতামূলক না থাকার শর্তেও সামাজিক সৌজন্যমূলক সেবা প্রদান করে আসছে বিজ্ঞাপনী সংস্থা ‘কর্পোরেট’।
তাদের দাবি, বিজ্ঞাপনী সংস্থাটির কাজে ঈর্ষান্বিত হয়ে কক্সবাজারের স্থানীয় দু’টি বিজ্ঞাপনী সংস্থা তাদের পিছু লাগে। কক্স এ্যাড ও ফাহিম এ্যাড নামের ওই দুটি প্রতিষ্ঠানের তিন মালিক ও কর্মচারি শাহআলমসহ ১০/১২ জন মিলে তাদের বিজ্ঞাপনী স্থাপনা ভাংচুর ও লুটপাট করে। হারুন-উর রশিদ, জাহেদুল আনোয়ার ও আবছার উদ্দিনের মালিকানাধীন ওই দুটি প্রতিষ্ঠান একবার নয়, দেড়মাসের ব্যবধানে ৬ বার ‘কর্পোরেটে’র বিজ্ঞাপনী স্থাপনা ভাংচুর ও লুটপাট করেছে। তারা দফায় দফায় পৌরসভা অনুমোদিত বিজ্ঞাপনী ডিসপ্লে, সামাজিক সচেতনতামূলক শ্লোগানসম্বলিত ফেস্টুন, বৈদ্যুতিক তার কেটে নিয়ে গেছে।
বিজ্ঞাপনী সংস্থাটির দাবি, ২০২২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতেও একই প্রতিষ্ঠান দু’টির মালিকরা সুগন্ধা পয়েন্ট মিড আইল্যান্ড থেকে পিকআপ ভর্তি করে তাদের স্ট্রাকচার গুলো চুরি করে নিয়ে গিয়েছিল। ওই সময়ের ছবি ও ভিডিও বিজ্ঞাপনী সংস্থাটির হেফাজতে রয়েছে। পরে চুরি যাওয়া ওই মালামাল সৈকত পাড়ার স্থানীয় জনগণ তাদের হাতেনাতে ধরে ওই মালামাল উদ্ধার করে দিয়েছিলেন।
লিখিত অভিযোগে দাবি করা হয়, স্থানীয় ওই দু’টি বিজ্ঞাপনী সংস্থার লোকজন আবারও হিংসাত্মক সন্ত্রাসি কর্মকান্ড, ভাংচুর, মারামারি করে ‘কর্পোরেটে’র ব্যবসা বন্ধ করে দেয়ার হুমকি-ধমকি দিচ্ছে।
এ ব্যাপারে বিজ্ঞাপনী সংস্থাটি পৌর প্রশাসকের কাছে ওই দু’টি সংস্থার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেছেন।
