ধর্ষিত আমি

প্রকাশ: ২৭ মে, ২০১৮ ০৩:০৮

পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে


প্রতীকী ছবি

–  ইমরান গোনেন মুন্না

আমার সারা শরীর কাঁপছে।
সারা গায়ে চিতা বাঘের থাবা ধর্ষনের দাগ।থমকে দাঁড়ানোর ক্ষমতা আমার নেই।
আমার সুন্দর দেহ হিংস্র পশু ভক্ষণ করেছে। আজ ক্ষত বিক্ষত,শুয়োরের মত নখের দাগ,কামড়ে বসানো দাতের চিহ্ন,পা গড়িয়ে পড়ছে রক্ত,আমার শরীর আজ খুব বিশ্রীভাবে রক্তাক্ত।

আজ আমি লজ্জায় কাতর হয়ে গেছি।দুচোখ কঠিন হয়ে গেছে।কিন্তু মনটা ভেঙে চুরমার হয়ে যাচ্ছে।যতবার তাকাচ্ছি নিজের দিকে ততবার ই ডুকরে কেঁদে উঠছে আমার ভিতর টা। শরীর জ্বালা করছে,কিছু কিছু জায়গায় ব্যাথায় টনটন করছে,নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে।
আমি শতবার চিৎকার করতে চেয়েছি কিন্তু তা হলো না সুটাম দেহের পুরুষ টা তার শার্টটা আমার মুখে পুরে দিয়েছে। রুমে আমার আত্ন চিৎকার দেয়াল টপকিয়ে বেরুচ্ছে না। আমার

আত্নচিৎকার দোয়ালের সাথে ধাক্কা খায়। আমার মনের সুদর্শন পুরুষ আমাকে ধর্ষন করে চলে গেলো।তারপর আসlলে মনে হয় তমাল, কি আত্নচিৎকার করে তার কাছে ক্ষমা চাইলাম সে হি হি করে হাসে তার মেদে ভরা দেহ আমার শরীর যেন পিশিয়ে দিচ্ছে, আমার স্তন টা যেন সে ছিড়ে খেয়েছে।রক্ত গড়িয়ে চাদর ভিজে লাল বর্ণ হলো, আমার ওটে দাঁড়ানোর ক্ষমতা নেই, আমার যৌনাঙ্গ যে বিষে ভরপুর কি বিশ্রী ভাবে আমায় ধর্ষন করলো আমার মনের সুদর্শন মানুষ টা একটু মায়া

বোধহয় হলো না তার একের পর একজন আমার শরীর কাবলে রক্তাক্ত করছে।
আচ্ছা আমার মা কি জানে তার বাচ্চা মেয়েটা কোনো এক রাস্তায় পড়ে গড়াগড়ি করছে ব্যথায় কাতর হয়ে পড়ে আছে আছে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন,রক্তাক্ত হয়ে? মা কি জানে তার মিষ্টি মেয়েটা আজ আর পবিত্র নেই,এখন সে নষ্ট, তার শরীর বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে নষ্ট রক্ত।মা যদি জানতে পারে তাহলে তো কষ্টে মরে যাবে।মা আমার কষ্ট সহ্য করতে পারেনা।কিন্তু আজ যে আমার ভীষন কষ্ট হচ্ছে।আমার ফর্সা শরীরে আজ দাত ও নখের হিংস্র চিহ্ন।

আচ্ছা,আমার বাবা তো আমার দিকে কখনো বাজে ভাবে তাকায় নি,আমি অসুস্থ হলে আব্বু কাঁদত, সেবা করত আমার।কাউকে কিছু বলতে দিত না।তাহলে অন্য পুরুষ রা কেন আমার শরীরটা নোংরা করে দিলো? সবাই কেন আমার আব্বুর মত হলোনা? আমার সম্মান নষ্ট করে দিলো কেন? আমি তাদের মেয়ে কিংবা বোন নই বলে?
আমি কি ক্ষতি করেছি তাদের? আমিতো বেগম রোকেয়ার মত নারী আন্দোলন করিনি,অন্য মেয়ের মত নিজের শরীর টা প্রেমিকের কাছে উজার করে দেইনি।তাহলে আমি কি অপরাধ করেছিলাম? আমার শরীর টা ওরা কুকুরের মত ছিরে খেল।

আমি বোরকা পড়িনি বলে? ওরে আমাদের স্কুলে বোরকা পড়ে যাওয়া যায় না।কিন্তু আমিতো যথেষ্ট শালীনতা বজায় রেখে চলতাম। তবুও রেহাই পেলাম না।
আর পর্দার দোষ দিয়েই বা কি হবে? এই কুকুরদের রুচি এতটাই নিম্ন যে,আজ যদি আমি পাগল হয়ে যাই, যদি রাস্তায় রাস্তায় ঘুরি তাহলে ওরা গভীর রাতে ছিরে খাবে রাস্তার এই পাগলীর শরীর টা। বর্ধিত হতে থাকবে পাগলী টার তলপেট। পুরুষ নামক এই প্রজাতির কুকুর গুলা রাস্তার পাগলি কেও ছাড় দেবেনা।

এ আর্তনাদ কে শুনবে? আমার যে বাকশক্তি হারিয়ে গেছে। আর শুনলেই বা কি,আইন ওদের কিচ্ছু করতে পারবে না।জেলে পুরে কয়েকদিন রাখবে,তারপর তাদের টাকাওয়ালা বাপরা গিয়ে ছাড়িয়ে আনবে। কিংবা ওদের ফাসিই হলো,তাতে কি আমি আমার সম্মান ফিরে পাবো? কখনোই পাবো না।পারব না আর কোনোদিনও মন খুলে হাসতে।
আচ্ছা এখন আমি কোথায় যাবো? উঠার শক্তি আমার নেই।গায়ে প্রচুর ব্যাথা।শরীরে রক্তের গন্ধ।

এখানেই ঘুমিয়ে যাবো। যদি পাগল হয়ে যাই,পুরুষ নামক কিছু শয়তানের ভোগ্যপন্যে পরিনত হবো।আর যদি বেচে থাকি,ভোর হতে না হতেই মিডিয়া এসে সারা বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দেবে,তোমরা দ্যাখো এই মেয়েটা ধর্ষনের শিকার।স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে এক দল ছেলে তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেছে।এর চেয়ে মজার সংবাদ আর কি হতে পারে?

আচ্ছা ওই কুকুরগুলা তো আমার নগ্ন শরীর ভিডিও করেছে।ওটা হয়ত প্রচার করেও দিয়েছে।ওদের মত আরেক দল কুকুর সেটা দেখে হস্তমৈথুন করবে।
কিছু সুশীল পুরুষরা রাতে বউয়ের সাথে দেখবে কিন্তু মেয়ে নামের সে মাগীটাও বুঝবে না অন্য একটা নারীর ধর্ষনের আর্তনাদ, ছিঃ আমি এখন বেশ্যা। সুবোধ গুলার আর শাস্তি হবে না, আমার জীবনের শাস্তি হয়ে গেলো কেবল।