কাবুলের কূটনৈতিক এলাকায় সংঘটিত হামলাটিকে ‘আত্মঘাতী’ বলে মনে করা হচ্ছে। নিজস্ব সূত্রের বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, বিস্ফোরকভর্তি ট্রাক ব্যবহার করে ওই হামলা হয়।

পুলিশ এবং হাসপাতাল সূত্রে আলজাজিরা জানিয়েছে, হামলায় অন্তত ৮০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৩০০ জন। সূত্রের বরাত দিয়ে তারা জানিয়েছে, আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের কেন্দ্রস্থল জানবাক স্কয়ারের ওই বিস্ফোরণকে ‘ইতিহাসের অন্যতম বড় হামলা’ বলে মনে করা হচ্ছে।

নিহতদের অধিকাংশই বেসামরিক বলে পুলিশ ও হাসপাতালসূত্রে জানা গেছে। বেনামি সূত্রের বরাত দিয়ে আলজাজিরা বলছে, বিস্ফোরকভর্তি ট্রাকে করে ওই হামলা চালানো হয়েছে; এমন প্রাথমিক ধারণা নিয়েই তদন্তে নেমেছে পুলিশ।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, জার্মান দূতাবাসের খুব কাছাকাছই এ বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এতে বহু মানুষ হতাহত হয়েছেন। আফগানিস্তানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াহিদ মাজরুহ জানান অনেকে গুরুতর আহত। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানান তিনি।স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাজিব দানিস জানান, বিস্ফোরণ এতোটাই বড় ছিল যে, এতে ৩০টিরও বেশি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের ‘সবচেয়ে নিরাপদ’ এলাকা বলে পরিচিত ওয়াজির আকবর খান ডিসট্রিক্ট-এ ওই হামলা হয়।সেখানকার জানবাক স্কয়ারে বিভিন্ন  রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন ধরনের দোকান রয়েছে। একইসঙ্গে সরকারি দফতর আর বিদেশি দূতাবাসের কার্যালয়ের অবস্থানও আশপাশে। প্রায় ১০ ফিট উঁচু বিস্ফোরণ-প্রতিরোধী প্রাচীর দিয়ে ঘেরা সেই ভবনগুলি৷

ফ্রান্সের ইউরোপীয় বিষয়ের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী মারিয়েল দ্য সারনে বলেছেন, বিস্ফোরণে ফরাসি ও জার্মান দূতাবাসের ক্ষতি হয়েছে৷ তবে দূতাবাসর কর্মীদের অবস্থা সম্পর্কে এখনো কোনো খবর পাওয়া যায় নি৷সেখানে প্রেসিডেন্টের প্রাসাদসহ আফগান সরকারের কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের ভবনও রয়েছে৷

সবচেয়ে ‘নিরাপদ’ এলাকা হিসেবে পরিচিত ভারত যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের দূতাবাসও কাছাকাছি অবস্থিত৷ ন্যাটো মিশনও একই এলাকায়৷ ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ এক টুইটার পোস্টে জানিয়েছেন, ভারতীয় দূতাবাসের কর্মীদের কোনো ক্ষতি হয়নি৷

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে ঘটনাস্থলের পাশে বহু যানবাহন ধ্বংস হয়ে পড়ে থাকতে এবং সেখান থেকে কালো ধোঁয়া উঠতে দেখা যায়। বিস্ফোরণের তীব্রতায় ঘটনাস্থল থেকে কয়েকশ’ মিটার দূরের ঘরবাড়ির দরজা-জানালাও ভেঙে পড়ে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

এখনও কোনও জঙ্গিগোষ্ঠীর পক্ষে এই হামলার দায় স্বীকার করা হয়নি। তবে সম্প্রতি কাবুলে তালেবান এবং আইএস-এর নামে বেশকিছু হামলা সংঘটিত হয়েছে। চলতি মাসের প্রথমদিকে আইএস জঙ্গিরা ন্যাটো জোটের একটি সামরিক বহরে এক আত্মঘাতী বিস্ফোরণে অন্তত আটজন বেসামরিক নিহত হন।