জালাল আহমদ,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:

ছাত্ররা অপরাধ করলে শিক্ষকরা ছাত্রদেরকে দাঁড় করিয়ে রাখে। এটাই জগতের স্বাভাবিক নিয়ম। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসিন হলে অভিযুক্ত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উল্টো দায়িত্ব পালন করতে আসা দুই জন আবাসিক শিক্ষককে প্রায় ৪০ মিনিট দাঁড় করিয়ে রেখেছে। এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকরা বিব্রত বোধ করছে।

জানা যায়,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে সংযুক্ত গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ফারহান সাইফুল নামে বৈধ এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে রুম থেকে বের করে দিয়ে রুমটি দখলে নেয় ছাত্রলীগের কতিপয় নেতাকর্মীরা। গত ১৩ অক্টোবর (২০২২) বৃহস্পতিবার রাতে হলের ৫৬২ নম্বর রুমে এই ঘটনা ঘটে। পরে হলের দুই জন আবাসিক শিক্ষক অধ্যাপক আইনুল ইসলাম ও মোঃ ইমাউল হক সরকার (টিটু) ওই রুমের সামনে এসে দরজা খুলতে বললে‌‌ হলের বড় ভাইয়ের নির্দেশ ছাড়া দরজা খুলবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন তারা। ছাত্রলীগের কর্মীরা এ সময় রুমের লাইট বন্ধ করে দেন। পরে হলের আবাসিক শিক্ষক আইনুল ইসলাম হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে প্রায় ৪০ মিনিট পর দরজা খুলেন অভিযুক্ত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
পরে শিক্ষকরা অবৈধ ভাবে রুম দখল করা ছাত্রলীগের কর্মীদের বের করে দিয়ে রুমটি তালাবদ্ধ করে দেয়৷

এ সময় রুমের ভেতরে ছাত্রলীগের ছয় জন কর্মী অবস্থান করছিলেন। তারা হলেন ইংলিশ ফর স্পিকার অফ আদার লেংগুয়েজের আরাফাত হোসেন মাহিন, সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের এনামুল হক পলাশ, ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি বিভাগের মারুফ, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শরীফুল ইসলাম, শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের শিবলী সাদিক, ইসলামিক স্টাডিজের মুনতাসির হোসেন৷ এরা সকলেই ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী।

এরা সবাই হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হোসেনের অনুসারী। তিনি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের অনুসারী।

এবিষয়ে আবাসিক শিক্ষক ও কক্ষ বরাদ্দ বিষয়ক কমিটির আহবায়ক আইনুল ইসলাম বলেন, নিঃসন্দেহে শিক্ষকদের বাহিরে দাঁড় করিয়ে রাখা একটি অপরাধ। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডিকে জানানো হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিশ্চয় ব্যবস্থা নিবো।

এবিষয়ে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মাসুদুর রহমান বলেন, আমি বিষয়টি প্রক্টরকে জানিয়েছি।এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। রিপোর্ট প্রাপ্তির পর দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।