মোহাম্মদ হোসেন, হাটহাজারী:

এক সময়ের খরস্রোতা হাটহাজারী, রাউজান ও ফটিকছড়ি উপজেলার হালদা নদী। এই নদী সংযোগ প্রায় অর্ধশতাধিক শাখা খাল রয়েছে। এ সব খাল এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। উত্তর চট্টগ্রামের এই তিন উপজেলার ভিতর দিয়ে বয়ে যাওয়া সবকটি খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় স্থানীয় ভূমিহীন চাষীরা সেখানে ইরি-বোরো ধান আবাদ করছে। এসব নদীর পলি অপসারণের উদ্যোগ না নেয়ায় প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে নদী তীরবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকা বন্যা কবলিত হয়ে ব্যাপক ফসলহানির ঘটনা ঘটছে। প্রতি বছর বর্ষায় নদীর আশপাশে জমি গুলোতে জলাবদ্ধতার কারনে ফসরের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়। গেল বছর সব চেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ফসলের। অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে হালদার শাখার এ সব খাল। এতে পানি প্রবাহ হ্রাস পেয়েছে। এক সময়ে ঐতিহ্য উল্লেখিত খাল গুলো এখন কেবলই স্মৃতি।

হাটহাজারী পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, এই সব উপজেলার ভেতর দিয়ে বাইনজইনসহ প্রায় অর্ধশতাধিক ছোটখাটো খাল বয়ে গেছে। ৫০ বছর আগেও এসব খাল দিয়ে পাল তোলা নৌকা চলাচল করত। প্রতি বর্ষা মৌসুমে উজান থেকে পানির ঢলের সঙ্গে নেমে আসা বালু জমে খালগুলো ক্রমান্বয়ে ভরাট হয়ে গেছে। জমির উপরিভাগ থেকে এসব নদীর তলদেশের ব্যবধান কোথাও কোথাও মাত্র ৩-৪ ফুট। বছরের পর বছর পলি জমে ভরাট হয়ে যাওয়ায় নদীর পানি ধারণ ক্ষমতা আশঙ্কাজনকভাবে হ্রাস পেয়েছে। হালদার শাখা খাল গুলোর আশপাশে এলাকার খাল এর তীরবর্তী বাসিন্দারা জানান, আমাদের বয়স যখন ১০-১৬ তখন এই হালদা শাখা খাল দিয়ে রঙবেরঙের পাল তোলা নৌকা মাল বোঝাই করে নিয়ে যেতে দেখেছি। ভয়ে এই খাল এ গোসল করতে কেউ নামতো না। আজ দেখছি পলি জমে ভরাট হয়ে যাওয়া পানি শূন্য । এ নদী বুকে কৃষক রোপণ করেছে ইরি-বোরো রোপা। বর্ষায় টানা দু’তিন দিন বর্ষণ হলেই খাল গুলো দিয়ে উপচে দু’ধারের এলাকা ডুবে গিয়ে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। ফাগুন-চৈত মাসে শাখা খালের গর্জনে নদীর পাড়ে ভয়ে কেহ যেতো না। নানা রঙের পাল তোলা নৌকা মাল বোঝাই করিয়া এই নদী দিয়া যাওয়া-আইসা কোরছিলো। কিন্তু আজ সেই দিন কই। বর্তমানে হালদা শাখা খাল গুলো অবস্থা করুণ। খাল ভরাট হয়ে যাওয়ার চরের বালু মাটি গুলোতে এখন সবজি চাষ করছে চাষীরা।