নিজস্ব প্রতিবেদক;
চট্টগ্রাম নগরের চাক্তাই খাল থেকে গত শনিবার উদ্ধার হওয়া এক অজ্ঞাত লাশকে নিজের ছেলে ভেবে দাফন করেছিলেন ভোলার উবায়দুল্লাহ। কিন্তু ঘটনার মোড় ঘুরে যায় ছয় দিন পর, বৃহস্পতিবার—জীবিত অবস্থায় পাওয়া যায় সেই ‘মৃত’ আব্দুর রহিমকে।
গত শনিবার চাক্তাই খাল থেকে এক অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে কোতোয়ালী থানা পুলিশ। পরদিন রোববার ভোলার বাসিন্দা উবায়দুল্লাহ লাশটি দেখে নিজের ছেলে আব্দুর রহিম বলে শনাক্ত করেন এবং লাশ ভোলায় নিয়ে গিয়ে দাফন করেন।
কিন্তু বৃহস্পতিবার রহিমের মোবাইল ফোন নম্বর সচল হলে পিবিআই কর্মকর্তারা সেটির সূত্র ধরে অনুসন্ধান চালান এবং তাকে জীবিত অবস্থায় খুঁজে বের করেন। জানা যায়, পাওনাদারদের ভয়ে মোবাইল বন্ধ রেখে আত্মগোপনে ছিলেন রহিম।
উবায়দুল্লাহ জানান, তার ছেলে চট্টগ্রামে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতেন। ১ মে সকালে একটি ফোন পেয়ে বাসা থেকে বের হওয়ার পর থেকেই তিনি নিখোঁজ ছিলেন। এরপর তিনি ধারণা করেন, অনলাইন জুয়াড়িদের হাতে খুন হয়েছেন তার ছেলে। পুলিশও লাশটি তার কাছে হস্তান্তর করে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের পুলিশ সুপার (পিবিআই) নাইমা সুলতানা জানান, “রহিমের মোবাইল চালু হলে আমরা যোগাযোগ করি এবং তাকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করি। পরে বাবা-ছেলেকে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, রহিম পাওনা টাকা পরিশোধ করতে না পেরে আত্মগোপনে চলে যান।”
তিনি আরও বলেন, “লাশটি বিকৃত অবস্থায় থাকায় শনাক্ত করতে ভুল হয়েছিল। তদন্তে কোনো অসৎ উদ্দেশ্যের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।”
রহিমের ফুফাতো ভাই মো. নোমান জানান, “লাশ শনাক্তের সময় ঘাড় ও পেটের পুরনো কাটা দাগ দেখে আমরা নিশ্চিত হয়েছিলাম যে এটি রহিমেরই লাশ। ২০১৪ সালে নির্মাণস্থলে দুর্ঘটনায় তার পেটে রড ঢুকে গিয়েছিল, যার ফলে অস্ত্রোপচারের পর শরীরে দাগ পড়ে।”
পিবিআই জানায়, “যে অজ্ঞাত ব্যক্তির দাফন হয়েছে, তার ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে সংরক্ষণ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে কেউ দাবিদার হিসেবে সামনে এলে ডিএনএ মিলিয়ে পরিচয় নিশ্চিত করা হবে।”