গৃহবধূ হাসিনা বেগমকে হত্যা করে শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করা মামলায় পলাতক স্বামী আশরাফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ। সোমবার (১০ মার্চ) দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেন লালমনিরহাটের পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম।

রোববার দুপুরে লালমনিরহাটের খুটামারা এলাকার পিংকির মোড় থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আশরাফুল ইসলাম (পেশায় ভ্যানচালক) লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের কুটিবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা।

পুলিশ সুপার জানান, আশরাফুলের দুই স্ত্রী ছিলেন। প্রথম স্ত্রী মেহরন বেগমের সাথে বনিবনা করতে না পেরে দ্বিতীয় স্ত্রী হাসিনা বেগম তাকে ছেড়ে অন্যত্র বিয়ে করেন। পরে আবার আশরাফুলকে বিয়ে করলে দুই সতীনের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। প্রথম স্ত্রীকে খুশি করতেই আশরাফুল দ্বিতীয় স্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

৫ মার্চ আশরাফুল ও তার প্রথম স্ত্রী মেহরনের সহযোগিতায় হাসিনাকে ঘুরতে নিয়ে যান। একপর্যায়ে কুলাঘাট বাজার থেকে একটি হাসুয়া কেনেন। পরে হাসিনাকে পান-সঙ্গে চেতনা নাশক খাইয়ে অচেতন করেন। রাত ৯টার দিকে মোগলহাট ইউনিয়নের ফুলগাছ এলাকার ভুট্টাক্ষেতে নিয়ে গিয়ে তাকে গলা কেটে হত্যা করেন। পরে পরিচয় লুকাতে তার মাথা বিচ্ছিন্ন করে প্রথম স্ত্রী মেহরনকে দেখান এবং তা সীমান্তের কাছে পুঁতে রাখেন।

তদন্তে পুলিশ নিহতের বিচ্ছিন্ন মাথা, হত্যার কাজে ব্যবহৃত হাসুয়া, রক্তমাখা কাপড়, কাঠের বাক্স এবং তাদের ব্যবহৃত ভ্যান উদ্ধার করেছে। এর আগে মেহরনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ঘাতক স্বামী আশরাফুলকে রিমান্ডে নিয়ে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে আবেদন করবে পুলিশ।

নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে সোমবার বিকেলে কন্যা চায়না বেগমের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।

গত বুধবার লালমনিরহাটের ফুলগাছ এলাকার ভুট্টাক্ষেত থেকে হাসিনার মাথাবিহীন মরদেহ উদ্ধার হয়। আঙুলের ছাপের মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিত করে পুলিশ। পরে প্রথম স্ত্রী মেহরনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার নিহতের মাথা উদ্ধার করা হয়। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় রবিবার ঘাতক স্বামী আশরাফুলকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।