সিবিএন ডেস্ক:
আগামী বছরের জানুয়ারির শেষ সপ্তাহ বা ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন আয়োজনের দাবিতে ঐকমত্যে পৌঁছেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ ৩০টি ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠন।
গতকাল বুধবার(০৪ ডিসেম্বর) রাতে এক বৈঠক শেষে এ তথ্য জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
বৈঠকের পর ব্রিফিংয়ে হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, “আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে জানুয়ারির শেষ সপ্তাহ বা ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে সারা দেশে ছাত্র সংসদ নির্বাচন শুরু হওয়া উচিত। মার্চ মাসে রমজান থাকায় এর আগেই নির্বাচন আয়োজন জরুরি।”
তিনি আরও বলেন, ২০১৮ সালের (প্রকৃতপক্ষে ২০১৯) ডাকসু নির্বাচন নিয়ন্ত্রিত ছিল। এবার জাতীয় নির্বাচনের আগে স্বতন্ত্র, নিরপেক্ষ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন সব ছাত্র সংগঠন।
বৈঠকে ক্যাম্পাসে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা এবং ছাত্র সংসদভিত্তিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। অতীতের নেতিবাচক ছাত্র রাজনীতি, যেমন হল দখল, সিট বাণিজ্য, শোডাউন পলিটিক্স এবং গেস্ট-গণরুম সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার বিষয়ে আলোচনা হয়।
ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সাহিত্য সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ সিবগা জানান, ছাত্র রাজনীতিতে সংস্কারের জন্য আগামী ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতিটি ছাত্র সংগঠন একটি প্রস্তাবনা দেবে। তিনি বলেন, “আমরা এমন একটি নতুন রাজনীতি চাই যা শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্বকে গুরুত্ব দেবে।”
দেশ, সার্বভৌমত্ব ও অস্তিত্বের প্রশ্নে আমরা সবাই এক: বৈঠকে ঐক্যের বার্তা
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ও কিছু বাম ছাত্র সংগঠন। এ বিষয়ে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির অভিযোগ করেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক জাতীয় ঐক্যের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা হয়নি। তিনি বলেন, “ছাত্রদের যুক্ত করার নামে শুধু একটি পক্ষকেই সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এতে আমাদের নতুন করে ভাবতে হচ্ছে।”
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ছাত্র সংগঠনগুলোর আলোচনার খবর নিয়ে গণমাধ্যমে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ করেন হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, “গতকাল ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকটি কোনো ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে ছিল না। এটি একটি বিশেষ অংশীদারদের নিয়ে আলোচনা ছিল। তবে ভবিষ্যতে তিনি ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গেও আলাদাভাবে বসবেন।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, বৈঠকে প্রায় ৩০টি ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। অনুপস্থিত কিছু সংগঠন পরবর্তীতে এ বিষয়ে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন।
এই বৈঠক ছাত্র রাজনীতির সংস্কার এবং স্বতন্ত্র ছাত্র সংসদ নির্বাচন আয়োজনের দাবিকে কেন্দ্র করে নতুন করে ঐক্যের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
