বার্তা পরিবেশক:
কক্সবাজারের রামুর উত্তর খুনিয়া পালংয়ে আদালতের আদেশ অমান্য করে জমি দখলের পাঁয়তারা ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে চিহ্নিত ভূমিদস্যু ও সাজাপ্রাপ্ত আসামী মোহাম্মদ কালুর ছেলে আবদুর রহমান। একই এলাকার ফকির মোহাম্মদের ছেলে আমান উল্লাহর দীর্ঘদিনের দখলীয় ৩৫ শতক জমি দখলের জন্য সে একের পর এক মিথ্যা মামলা, সন্ত্রাসী হামলা, অপপ্রচার ও হয়রানী করে আসছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, রামুর উত্তর খুনিয়া পালংয়ে ৩৫ শতক জমিতে দীর্ঘদিন ধরে শান্তিপূর্ণ ভোগদখলে আছে ফকির মোহাম্মদের ছেলে আমান উল্লাহর পরিবার। কিন্তু জায়গাটির উপর লুলোপ দৃষ্টি পড়ে মোহাম্মদ কালুর ছেলে আবদুর রহমানের। যার অংশ হিসেবে সে তথ্য গোপন করে নিজেকে ভূমিহীন দাবি করে ওই জমির খতিয়ান করে। ২০/২০০৯—২০১০ বন্দোবস্তি মামলা নম্বর মূলে দলিল সৃষ্টি করে ৩৯৪। যার সৃজিত খতিয়ান নম্বর ৩২৭। কিন্তু আবদুর রহমান প্রকৃতপক্ষে ভূমিহীন নয়। তার নামে রেজিস্ট্রিকৃত জমি আছে। যার সৃজিত খতিয়ান নম্বর ৩২০। অথচ সে নিজেকে বার বার ভূমিহীন ও আওয়ামী লীগের আস্থাভাজন লোক দাবি করে মুজিববর্ষের ঘর এবং জমিও বন্দোবস্তি নেয়। আমান উল্লাহর দখলীয় জমি তাদের অজান্তে বন্দোবস্তি করে নেয়। বিষয়টি জানতে পেরে জমির দখলীয় মালিক আমান উল্লাহ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে আপত্তিপত্র দেন। যার প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে আরডিসি (রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর) সরেজমিনে জমিটি পরিদর্শন করে তিনি জানতে পারেন, প্রকৃতপক্ষে জমিটি আমান উল্লাহর দখলে। তাই তার পক্ষে তদন্ত রিপোর্ট দেন তিনি। তদন্ত রিপোর্টে সহকারি কমিশনার (ভূমি) রামুকে তথ্য গোপন করে করা আবদুর রহমানের বন্দোবস্তি বাতিলের নির্দেশ প্রদান করা হয়। এদিকে আবদুর রহমানের বিপক্ষে তদন্ত রিপোর্ট দেওয়ায় সে চালাকি করে পরবর্তীতে বিভাগীয় কমিশানর কার্যালয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়েও আমান উল্লাহর পক্ষে ডিগ্রী প্রদান করেন। পরে সচতুর মামলাবাজ আবদুর রহমান মামলাটি ভূমি আপীল বোর্ডে নিয়ে যায়। সেখানেও তথ্য গোপন করে রামু সহকারি জজ আদালতে অপর ১০/২০১২ মামলা দায়ের করে একতরফা নিষেধাজ্ঞা ডিগ্রী দেখিয়ে ডিগ্রী নেয়। প্রদত্ত ডিগ্রীর বিরুদ্ধে আমান উল্লাহ রামু সহকারি জজ আদালতে মিচ মামলা ১৩/২০১৫ করেন। এই মামলায় দুই পক্ষের উপস্থিতিতে শুনানি হয়। শুনানিতে আবদুর রহমানে একতরফা নিষেধাজ্ঞার ডিগ্রীর বিরুদ্ধে আমান উল্লাহর পক্ষে ডিগ্রী দেওয়া হয়। তাছাড়াও হাইকোর্ট ১৩১৮১/২০১৬ রিট পিটিশন দায়ের করেন। আবদুর রহমানের বন্দোবস্তিকৃত খতিয়ানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয় হাইকোর্ট। যা বর্তমানেও নিষেধাজ্ঞা বিরাজমান। এছাড়াও তার বন্দোবস্তিকৃত খতিয়ানের বিরুদ্ধে রামু সহকারি জজ আদালতে আরেকটি অপর ৩৭/২০১৬ মামলা দায়ের করেন আমান উল্লাহ। যার প্রেক্ষিতে বর্তমানেও বন্দোবস্তিকৃত খতিয়ানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। যা এখনো বহাল আছে।
অভিযোগে আরও জানা যায়, জায়গাটি জোরপূর্বক দখলে নিতে আবদুর রহমানের নেতৃত্বে বিগত ২০১১ সালে ৩ মে আমান উল্লাহর পরিবারের উপর হামলা চালানো হয়। যার প্রেক্ষিতে আমান উল্লাহর পরিবার হামলাকারী আবদুর রহমান গংয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং— জিআর ৩০৮/২০১১। এই মামলায় পুলিশ আবদুর রহমানকে গ্রেপ্তারও করেছিল। ওই সময় আবদুর রহমান একটি হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা দায়ের করেন আমান উল্লাহ গংয়ের বিরুদ্ধে। যার জিআর নং—৩২০/১১। মামলাটি তদন্ত করে মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় খারিজ করে দেয় আদালত। জমির প্রতি লোভ সামলাতে না পেরে বিগত ২০২১ সালের ৩ মে করোনাকালীন হাইকোর্ট ও জজকোর্টের নিষেধাজ্ঞা অবমাননা করে আবারও আমান উল্লাহ গংয়ের উপর হামলা চালিয়ে ঘরবাড়ি ভাংচুর—ঘেরাবেড়া ও চারা গাছে আগুন ধরিয়ে দেয়। এসময় আমান উল্লাহ হামলাকারী আবদুর রহমান গংয়ের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নম্বর—সি, আর ১২৯/২০২১। মামলার রায়ে হামলার ঘটনা সত্য প্রমাণিত হওয়ায় ভূমিদস্যু আবদুর রহমানকে ২ বছর সাজা প্রদান করেন আদালত। আবার আমান উল্লাহর করা ১২৯/১১ মামলার বিরুদ্ধে আবদুর রহমান জজ কোর্টে মিচ ৭৭/২০২৪ মামলা করে জামিনে মুক্ত হন। মিথ্যা বন্দোবস্তিকে সত্য প্রমাণিত করতে এবং আমান উল্লাহর দখলে থাকা জমি নিজের দখলে প্রমাণ করার জন্য এমআর ১৫৯৪/২০২১ একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলাটি মিথ্যা হওয়ায় মামলার নথি জজ কোর্ট তলব করে নিয়ে যায়। এছাড়া বর্তমানে ২০২৪ সালের ৩০ আগস্ট মিথ্যা ঘটনার নাটক সাজিয়ে মামলা দায়ের করেন আবদুর রহমান। যার মামলা নং— সিআর ৪৯২। হাইকোর্ট ও জজকোর্টে চলমান মামলার তথ্য গোপন করে রামু জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করেন তিনি। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। এই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারে আবদুর রহমানে বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নিতে প্রশাসনের সুনজর কামনা করেছেন প্রকৃত জমির দখলীয় মালিক আমান উল্লাহ।
ভুক্তভোগী আমান উল্লাহ জানান, আবদুর রহমান একজন মামলাবাজ ও চিহ্নিত ভূমিদস্যু। সে আমার দখলীয় জমিটি গ্রাস করতে দীর্ঘদিন ধরে আমাকে মামলা ও হামলা করে হয়রানি করে আসছে। বতর্মানেও সে নানা ষড়যন্ত্র ও অনলাইনে অপপ্রচার এবং মানহানি করে আমাদের জিম্মি করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাই আমি ও আমার পরিবার দখলবাজ আবদুর রহমান গংয়ের কালো থাবা থেকে রক্ষা পেতে চাই।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।