ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সত্যতা পেয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তরের টিম

বার্তা পরিবেশক:

কক্সবাজার সদর উপজেলার পেছনে দক্ষিণ ডিককুল এলাকায় চলছে পাহাড় কাটার মহোৎসব। সরকারি পাহাড় কেটে সমতল ভুমিতে পরিনত করে বেশি দামে বিক্রির জন্য শ্রমিক দিয়ে দিন-রাত পাহাড় কটছে পাহাড় খেকো সোনামিয়া, জয়নাল, জাহাঙ্গীর, জাকারিয়ার নেতৃত্বে।
পাশাপাশি মাটি বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ টাকা। স্থানিয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় কাউকে পরোয়া করছেনা এ চক্রটি। পাহাড় কাটার খবর পেয়ে সোমবার বিকালে পরিবেশ অধিদপ্তরের একটি টিম ঘটনাস্থলে যান।এসময় মাটি কাটা রত ৮/১০ জন শ্রমিক দ্রুত পালিয়ে যায়।

গত রবিবার সরজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, দক্ষিণ ডিককুল এলাকায় গিয়ে পাহাড় কাটার দৃশ্য পরিলক্ষিত হয়। পাহাড় কেটে সমতল করতে কাজ করছে ৮/১০ জন শ্রমিক। সাংবাদিকদের দেখে মাটি কাটার সরঞ্জাম রেখে পালিয়ে যায় শ্রমিকরা। ইতিমধ্যে পাহাড়ের বিশাল অংশ কেটে মাটি সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

এলাকাবাসীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সদর উপজেলার দক্ষিণ ডিককুলের বাসিন্দা ৩ভাই সোনামিয়া, জয়নাল ও জাহাঙ্গীর এবং তাদের ভগ্নিপতি জাকারিয়ার নেতৃত্বে চলছে দিন-রাত পাহাড় কাটা। পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করে হাতিয়ে নিয়েছে কয়েক লাখ টাকা। এই পাহাড় খেকোদের বিরুদ্ধে রয়েছে বেশ কয়েকটি মামলাও।
স্থানীয়রা জানান, এই চার জনের সিন্ডিকেট দ্বীর্ঘদিন ধরে পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি, সমতল ভুমিতে পরিনত করে বেশি দামে বিক্রি সহ নানা অপকর্ম করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় দক্ষিণ ডিককুল এলাকায় তারা সরকারি পাহাড়ি জায়গায় বসবাসের পাশাপাশি পাহাড়ি জায়গা বেশি দামে বিক্রি জন্য শ্রমিক দিয়ে পাহাড় কাটছে। পাহাড় কেটে রাস্তায় মাটি ফেলার কারণে গেল বর্ষায় বৃষ্টির পানি অনেকের বাড়িতে ঢুকে পড়ে। বর্ষায় মাটি এসে পানি চলাচলের নালা ভরে যাচ্ছে। ফলে পানি চলাচল করতে না পেরে বর্ষাকালে রাস্তায় পানি জমে থাকত। যা নিয়ে প্রতিদিনই জগড়া-বিবাদ লেগে থাকে। কেউ বাধা প্রদান করলে অকথ্য ভাষায় তাদের গালিগালাজ করে হুমকি ধমকি দিয়ে আসছে।

স্থানীয় লোকজন আরও জানান, তারা এভাবে পাহাড় ধ্বংস করতে থাকলে যোকোন সময় পাহাড় ধসে প্রাণহানি ঘটতে পারে। আবার পাহাড়ের উপরে বসবাসরত পরিবারগুলোও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে। অতিশীঘই যদি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অভিযান পরিচালানা করে এই ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় কাটা বন্ধ না করে তাহলে যেকোন সময় বড় ধরনের
দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে জানান স্থানীয় লোকজন।

স্থানিয়রা আরো জানান, বনবিভাগ এ সবের তেমন খবর রাখেন না। তবে পাহাড় কাটার খবর পেয়ে সোমবার বিকালে পরিবেশ অধিদপ্তরের একটি টিম ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেছেন। এর পরেও যদি এসব পাহাড় কাটা বন্ধ না হয়, পাহাড় খেকোদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া না হয়, তাহলে তারা আরো বেপরোয়া হয়ে পড়বে। পাহাড় কাটা বন্ধে দ্রুত আইনী ব্যবস্থা
নেয়ার দাবী জানান স্থানীয়রা।

কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি দীপক শর্মা দীপু বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্যি যে এখন পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হয়না। পরিবেশ অধিদপ্তরের নিরব ভূমিকার কারণে পাহাড় কাটাসহ পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছ। তিনি পরিবেশ অধিদপ্তর, বনবিভাগসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সুদৃষ্টি কামনা করেন কক্সবাজারের পরিবেশ সুরক্ষায়।

এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের উপ-পরিচালক নুরুল আমিন জানান, দক্ষিণ ডিককুল এলাকায় পাহাড় কাটার সংবাদ পেয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পাহাড় কাটার বিষয়ে সত্যতা পাওয়া গেছে। কারা জড়িত তা যাচাই-বাছাই করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।