মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

কক্সবাজারের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) আবদুল্লাহ আল মামুন ভারতে ১১ দিনের প্রশিক্ষণে যাচ্ছেন।

গত রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) আইন ও বিচার বিভাগের বিচার শাখা-৩ এর উপসচিব (প্রশিক্ষণ) মো: শামসুদ্দীন মাসুম স্বাক্ষরিত এক আদেশে কক্সবাজারের সিজেএম আবদুল্লাহ আল মামুন সহ ৫০ জন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাকে ভারতে প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়ার জন্য সুপ্রীম কোর্টের পরামর্শক্রমে অনুমতি দেওয়া হয়।

প্রশিক্ষণের জন্য মনোনীত বিজ্ঞ বিচারকগণ আগামী ৯ অক্টোবর থেকে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত ভারতের ভূপালে অবস্থিত ন্যাশনাল জুডিসিয়াল একাডেমী এবং ভারতের একটি স্টেট জুডিসিয়াল একাডেমিতে আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ নেবেন। গুরুত্বপূর্ণ এ প্রশিক্ষণের যাবতীয় ব্যয়ভার ভারত সরকার বহন করবেন বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিচারক আবদুল্লাহ আল মামুনের আদি নিবাস চট্টগ্রামের মিররসরাই উপজেলায়। একজন মেধাবী বিচারক হিসাবে বিভিন্ন কর্মস্থলে দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করা বিচারক আবদুল্লাহ আল মামুন চট্টগ্রাম শহরের মেহের-আফজাল হাইস্কুল থেকে এসএসসি, চট্টগ্রাম নৌবাহিনী কলেজ থেকে এইসএসসি এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সাথে এলএলবি (অনার্স), এলএলএম করেছেন ১০ম ব্যাচে।

বিচারক আবদুল্লাহ আল মামুন বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশন (বিজেএসসি) এর তৃতীয় ব্যাচের পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হয়ে ২০০৮ সালে বিচার বিভাগের একজন সদস্য হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। যোগ দেন বিচার বিভাগের একজন নবীন কর্মকর্তা হিসাবে।

বিচারক আবদুল্লাহ আল মামুন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হিসাবে খাগড়াছড়ি ও ফেনী জেলার ম্যাজিস্ট্রেসীতে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি এসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর (প্রশাসন) হিসাবে জুডিসিয়াল এডমিনিস্ট্রেশন ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হিসাবে বান্দরবান এবং যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ পদে বরগুনা জেলা জজশীপে দায়িত্ব পালন করেছেন। সর্বশেষ তিনি কক্সবাজার জেলা জজশীপ এর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক পদে দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় কক্সবাজারের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) পদে তাঁকে নিয়োগ দেওয়া হয়। চলতি বছরের ৪ জানুয়ারী তিনি কক্সবাজারের চীফ জুডিসিয়াল মাজিস্ট্রেট পদে যোগ দেন।

বিচারক আবদুল্লাহ আল মামুন কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পদে দায়িত্ব পালনকালে মাদক মামলায় আসামীকে প্রথম মৃত্যুদন্ডের রায় দেন। যা দেশের বিচার বিভাগের জন্য একটা ইতিহাস। একই পদে থাকাবস্থায় পরিশ্রমী বিচারক হিসাবে পরিচিত আবদুল্লাহ আল মামুন ১৯৯০ সালে কক্সবাজারের মহেশখালীতে সংঘটিত চাঞ্চল্যকর খাইরুল আমিন হত্যা মামলার রায় দিয়েছেন ঘটনার ৩২ বছর পর।

কক্সবাজার বিচার বিভাগের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসীর শীর্ষ পদে দায়িত্ব পালনরত বিচারক আবদুল্লাহ আল মামুন কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক এর দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে বেশ কিছু আলোচিত হত্যা মামলা, মাদক ও অস্ত্র মামলার রায় দিয়ে প্রশংসিত হয়েছেন বিচার অঙ্গনে।

এর আগেও বিচারক আবদুল্লাহ আল মামুন আরো বিভিন্ন আন্তর্জাতিকমানের প্রশিক্ষণ, বাংলাদেশ বিচার প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউটে বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ, প্রতিরক্ষা বিভাগের প্রশিক্ষণ সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।