সোয়েব সাঈদ, রামু:
সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি বলেছেন- জীবনের লক্ষ্য অর্জনে দারিদ্রতা কখনো বাঁধা হতে পারেনা। বরং যারা দারিদ্রতার ছোঁয়া পেয়েছে, তারাই জীবনে বেশী সফলতা অর্জন করেছে। তাই বড় হতে হলে বিত্তশালী লোকের সন্তান হতে হয়না। হতে হবে অধ্যবসায়ি, পরিশ্রমী। থাকতে হবে কর্মমূখি শিক্ষা অর্জনের প্রচেষ্টা। পড়াশোনায় মেধাবী না হলে জীবনে সফলতা আসবেনা, এমন ধারনাও ভুল। সৃষ্টিকর্তা সবাইকে মেধাবী করেননি। কিন্তু পড়াশোনায় কম মেধাবী ব্যক্তিরাও চাইলে ব্যবসা, কর্মমুখি শিক্ষার মাধ্যমে মেধাবীদের চেয়েও সফল ব্যক্তিতে পরিনত হতে পারেন। যার অসংখ্য নজির আমাদের সমাজে বিদ্যমান রয়েছে। তাই সকল শিক্ষার্থীদের হতাশা-বিলাসিতা পরিহার করে জীবনের লক্ষ্য পূরণে এগিয়ে যেতে হবে। এটাই হবে সবার জন্য জীবন যুদ্ধ। এ যুদ্ধে জয়ী হতেই হবে।
রামু উপজেলার কাউয়ারখোপ হাকিম রকিমা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা, বিশিষ্ট দানবীর মরহুম ফারুখ আহমদের ২১ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে স্মরণ সভা, বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এমপি সাইমুম সরওয়ার কমল এসব কথা বলেন।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ওসমান সরওয়ার মামুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন- বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক লুৎফুন নাহার। সহকারি শিক্ষক মোস্তফা কামালের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- কক্সবাজার জেলা পরিষদ সদস্য ফরিদুল আলম, জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মুসরাত জাহান মুন্নী, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য নুরুল হক, বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক কিশোর কুমার বড়ুয়া, দাতা সদস্য শহীদুল্লাহ সিকদার, বেসরকারি সংস্থা ডাকভাঙ্গা বাংলাদেশ এর প্রকল্প সমন্বয়কারি জুয়েল তালুকদার ও বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক ওসমান গনি।
অনুষ্ঠানে মরহুম আলহাজ্ব ফারুখ আহমদের কর্মময় জীবনের স্মৃতিচারণ করে বক্তারা বলেন- মরহুম আলহাজ্ব ফারুখ আহমদ একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ি হয়েও শিক্ষার প্রসার ও জনকল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন। রামুর অবহেলিত জনপদ কাউয়ারখোপে তিনি উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে পুরো এলাকা আলোকিত করেছেন। তিনি ছিলেন সত্যিকারের দেশ প্রেমিক। তাঁর অবদান এ জনপদের প্রতিটি মানুষ আজীবন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে যাবে। রামুর কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের কৃতিসন্তান বিশিষ্ট শিল্পপতি মরহুম আলহাজ্ব ফারুখ আহমদ মেঘনা সী ফুডস এর স্বত্ত¡াধিকারি ছিলেন। তিনি ১৯৭৫-৭৬ সনে সর্বাধিক রপ্তানিকারক হিসেবে রাষ্ট্রপতি পদক এবং জাতীয় অর্থনীতিতে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ চারবার সিআইপি নির্বাচিত হন। তিনি একক অনুদানে প্রতিষ্ঠা করেন অনেক শিক্ষা ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। যার মধ্যে কাউয়ারখোপ হাকিম রকিমা উচ্চ বিদ্যালয় উল্লেখযোগ্য। গত ১৪ এপ্রিল ছিলো বরেণ্য ব্যক্তিত্ব আলহাজ্ব ফারুখ আহমদের ২১ তম মৃত্যুবার্ষিকী।
অনুষ্ঠানে গর্জনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলাম, কক্সবাজার জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নুর আল হেলাল, রামু প্রেস ক্লাবের সভাপতি নীতিশ বড়ুয়া, সাবেক সভাপতি খালেদ শহীদ, সহ সভাপতি এম আবদুল্লাহ আল মামুন, সাধারণ সম্পাদক সোয়েব সাঈদ, ছড়াকার ও সাংবাদিক কামাল হোসেন, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য সদস্য দিলীপ ধর, কাউয়ারখোপ ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম নাহিদ, যুবলীগ নেতা ওসমান গনি, সাংবাদিক কপিল উদ্দিন প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে এমপি কমল আরও বলেন- সরকার গ্রামের উন্নয়নে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে। এরপরও করোনা মহামারী এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে এখনো কিছু উন্নয়ন কর্মকান্ড সম্পন্ন হয়নি। অচিরেই তা সম্পন্ন হবে। কাউয়ারখোপ ইউনিয়নে মনিরঝিল সংযোড় সড়কে বাঁকখালী নদীর উপর সহসা জেলার বৃহত্তম সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হবে। এ সেতু নির্মাণে ব্যয় হবে প্রায় ৪৫ কোটি টাকা। এছাড়া অবহেলিত মনিরঝিল গ্রামেও সড়কের কার্পেটিং কাজ শীঘ্র্ই শুরু হবে। তিনি কাউয়ারখোপ হাকিম-রকিমা উচ্চ বিদ্যালয়ে একটি নতুন ভবন বরাদ্ধ দেয়ার পাশাপাশি বিদ্যালয়ের উন্নয়নে সার্বিক সহযোগিতার আশ^াস প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রণব বড়ুয়া, ছৈয়দ আলম, রহিমা বেগম, মো. আবদুল্লাহ, সরওয়ার কামাল, ফেরদৌসি বেগম, দেবাশীষ চত্রবর্তী, আঞ্জুমান আরা এ্যানি, মো. ওবাইদুল্লাহ, মো. নাছির উদ্দিন, জান্নাতুল বকেয়া, হামিদুল হক, আনোয়ারুল হক উপস্থিত ছিলেন। শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন- বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ জায়েদ। আলোচনা সভা শেষে অতিথিবৃন্দ বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিক্ষার্থীদের পুরস্কার বিতরণ করেন।