আব্দুস সালাম,টেকনাফ (কক্সবাজার) :
কক্সবাজারের টেকনাফের কেরুণতলী প্রত্যাবাসন সেন্টার (ঘাট) পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এর নেতৃত্ব সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে সম্ভাব্য প্রত্যাবাসনকে সামনে রেখে তারা এ সফর করেন।

শনিবার (২০ মে) দুপুরে চীনা রাষ্ট্রদূতের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল কেরুণতলী প্রত্যাবাসন সেন্টারের কক্ষগুলো ঘুরে দেখে। এ সময় অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার খালিদ হোসেন, নয়াপাড়া নিবন্ধিত ক্যাম্প ২৫ এর ক্যাম্প ইনচার্জ আব্দুল হান্নানসহ অন্য কর্মকর্তারা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ছিলেন।

চীনা রাষ্ট্রদূতের সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করলেও এ নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে রাজি হননি এ সময় অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার খালিদ হোসেন।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টেকনাফের এক রোহিঙ্গা নেতা বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে সম্ভাব্য প্রত্যাবাসনকে সামনে রেখে চীনা রাষ্ট্রদূতসহ একটি প্রতিনিধি দল কেরুণতলী প্রত্যাবাসন সেন্টার (ঘাট) পরিদর্শনে আসেন। পরে তারা ঘাটের কক্ষগুলো ঘুরে দেখেন। কিন্তু কারও সঙ্গে কথা বলেননি।’

এদিকে, রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলোচনা করতে চলতি মাসে মিয়ানমার প্রতিনিধি দলের বাংলাদেশে আসার কথা ছিল। তবে সাইক্লোন ‘মোখা’র কারণে আলোচনা পিছিয়ে দিয়েছে মিয়ানমার। যদিও এর আগে গত ৫ মে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি এবং রোহিঙ্গা প্রতিনিধিরা রাখাইন সফর করেছিলেন। নিজেদের দেশে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে রোহিঙ্গাদের মনোবল বৃদ্ধির জন্য এ মাসেই মিয়ানমার তাদের প্রতিনিধি দল পাঠানোর কথা বলেছিল।’

নয়াপাড়া নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প-২৫ এর ক্যাম্প ইনচার্জ (সিআইসি) আব্দুল হান্নান এসব তথ্য নিশ্চিত করে
বলেন, চীনা রাষ্ট্রদূতের একটি পদল টেকনাফ কেরুনতলী প্রত্যাবাসন সেন্টার পরিদর্শন করেন। এবং প্রত্যাবাসন সেন্টার পরিদর্শন শেষে প্রতিনিধি দল কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে
টেকনাফ ত্যাগ করেন।

উল্লেখ্য, রাখাইন থেকে রোহিঙ্গা বিতাড়নের তিন মাসের মাথায় ২০১৭ সালের নভেম্বরে প্রত্যাবাসন বিষয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশ চুক্তি সই করেছিল। এ চুক্তির নেপথ্যে ছিল চীন। কিন্তু গত প্রায় ছয় বছরে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কোনও অগ্রগতি হয়নি। ২০১৮ সালে এক দফা প্রত্যাবাসন শুরুর চেষ্টা ব্যর্থ হয়। পরে চীনের মধ্যস্থতায় ২০১৯ সালে আবার প্রত্যাবাসন শুরুর চেষ্টা হয়েছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত কিছুই হয়নি। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। এ ঘটনার পর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত আলোচনা কার্যত মুখ থুবড়ে পড়ে।