আব্দুস সালাম,টেকনাফ:
কক্সবাজারের টেকনাফ-সেন্টমার্টিন ও উপকূলের এলাকাসহ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৫ ঘন্টা ব্যাপী প্রবল ঘুর্ণিঝড় মোখার আঘাতে প্রায় ৩ শতাধিক বসত-বাড়ি,বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভেঙ্গে পড়ছে। এবং পানের বরজ,ফসলি খেত নষ্ট হয়েছে। গাছপালা ও বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে পড়েছে। তবে সেন্টমার্টিনদ্বীপসহ উপকূলীয় এলাকায় ঘুর্ণিঝড় মোখার প্রভাব কমে গেছে হালকা বাতাস ও গুটি গুটি বৃষ্টি হচ্ছে।

রবিবার(১৪ মে) দুপুর ১ টার দিকে প্রচন্ড আকারে সেন্টমার্টিনদ্বীপ- টেকনাফসহ রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও উপকূলে ঘুর্ণিঝড় মোখা তাণ্ডব চালায়।বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে বলে জানা গেছে।

সেন্টমার্টিনদ্বীপের বাসিন্দা রুহুল আমিন বলেন,ঘুর্ণিঝড় মোখার ভয়াবহতায় আমাদের ঘরবাড়ি টিন উড়ে গেছে,গাছপালা পড়ে যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়ছে।আমরা ঘরবাড়ি ছেড়ে এখন সাইক্লোন সেন্টারে আশ্রয় নিয়েছি।এখনো হালকা বাতাস আর বৃষ্টি হচ্ছে।

সেন্টমার্টিনদ্বীপের বাসিন্দা তৌহিদ বিন সেলিম বলেন,ভাগ্যভাল মোখা’র তান্ডব চলাকালীন সময়ে জোয়ার ছিলনা।
সমুদ্রের বুকে মাতৃভূমি সেন্টমার্টিনদ্বীপটি দাঁড়িয়ে আছে। আলহামদুলিল্লাহ। সেন্টমার্টিনদ্বীপে প্রায় ৯০% মানুষের বাড়ি ঘরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। দ্বীপের ছোট বড় হাজারখানেক গাছ ভেঙে পড়েছে। গাছ ভেঙে পড়ে আহত হয়েছে ১১ জন।

বাহারছড়া উপকূলীয় ইউনিয়নের জালাল উদ্দীন বলেন,ঘুর্ণিঝড় মোখায় দ্রুতগতিতে আমাদের উপর দিয়ে ভয়ে গেলেও আল্লাহর রহমতে আমরা বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পেয়েছি।তবে আমাদের এখানে রাস্তায় গাছপালা ভেঙে পড়ছে, বাড়িতে গাছ পড়ছে,বৈদ্যুতিক কুটি ভেঙে পড়ছে।এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মাঝি নুরুল আমিন বলেন, বাতাস শুরু হওয়ার সাথে সাথে ক্যাম্পের বসতির উপরের চাউনি উপড়ে পড়ছে।পরিবারে লোকজনদেরকে আমরা নিরাপদে সরিয়ে রাখার কারনে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির থেকে রক্ষা পেয়েছি।এখন এখানে শতশত বসতি লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়ছে।

হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আহমদ আনোয়ারী বলেন,ঘুর্ণিঝড় মোখার কারনে রাস্তা ঘাটের ভেঙে পড়ছে গাছপালা, ভেঙে শতাধিকের উপরে ঘরবাড়ি সহ স্কুল- মাদ্রাসা ভেঙে পড়ছে।এখনো ঘুর্ণিঝড় মোখার প্রভাব কমে গেছে।হালকা বৃষ্টি হচ্ছে।যারা ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে তাদের সহযোগিতা করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি।

টেকনাফ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান বলেন,আবহাওয়া অফিস সুত্রে জানা গেছে সেন্টমার্টিন ও টেকনাফ হয়ে ঘুর্ণিঝড় মোখার মিয়ানমারের দিকে অতিক্রম করে গেছে।সেন্টমার্টিন-টেকনাফ ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ উপকূলের অনেক ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে,পাশাপাশি রাস্তায় গাছপালা সহ বৈদ্যুতিক খুঁটি পড়ে গেছে। আমরা সব খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছি। এ সময় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণও বিতরণ করা হয়।