মো: কাউছার উদ্দীন শরীফ, ঈদগাঁও:

কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলায় শবে বরাতের দিনে দু’মাস বয়সি এক শিশুর জননী ফাতেমা আক্তার নামের গৃহবধূকে ঠান্ডা মাথায় হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। হত্যার ঘটনার তিন দিন পর ঈদগাঁও ইউনিয়নের দরগাহ পাড়া এলাকার ব্রিজ এর নীচ থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

এঘটনায় ১১ মার্চ গৃহবধূর মাতা মোহছেনা বেগম বাদী হয়ে তিনজনকে অভিযুক্ত করে ঈদগাঁও থানায় লিখিত এজাহার দায়ের করা হয়। এজাহারে অভিযুক্তরা হলেন একই ইউনিয়নের দক্ষিণ দরগাহ পাড়া এলাকার মৃত মীর আহমেদের ছেলে মোঃ মিজান, মীর আহমেদের স্ত্রী দিলদার বেগম, আব্দুল্লাহ স্ত্রী আয়েশা বেগম। একই দিন পুলিশের অভিযানে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এজাহারে সূত্রে জানা যায়, গেল ২০২১ সালের শুরুতে ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক মিজানের সাথে ফাতেমা আক্তারের বিবাহ হয়। বিবাহের পর তাহারা কিছুদিন সুখে শান্তিতে ছিল। ২ ও ৩ নাম্বার অভিযুক্তদের প্ররোচনায় ১ অভিযুক্ত মিজান ব্যবসা করার জন্য আমার বাড়ী হইতে ৬০,০০০/- টাকা নিয়ে দেওয়ার জন্য আমার মেয়ের উপর চাপ দিয়ে তাহাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো শুরু করে। ফাতেমা পরিবারকে জানাইলে তার মা অভিযুক্তদের বাড়ীতে হাজির হইয়া তাহাদেরকে বুঝানোর চেষ্টা করিলে তাহারা আমার প্রতি ক্ষেপিয়া যায় এবং বলে যে, তাহারা অন্যস্থান হইতে অনেক টাকা নিয়ে মিজানকে অন্য মেয়ে বিবাহ করাইবে। এসময় অভিযুক্তরা ফাতেমার নিকট হইতে মোহরানার দেড়ভরি স্বর্ন নিয়ে ফেলে।

অভিযুক্ত মিজান পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ার বিষয়টি টের পেয়ে তাকে উক্ত পথ হইতে ফিরে আসার জন্য বললে সে ফাতেমার সাথে দুর্ব্যবহার করা সহ তাহার উপর নির্যাতন চালানো শুরু করে।

স্থানীয়রা জানান, শবে বরাতের দিন হত্যার ঘটনা ঘটিয়েছে বলে ধারণা করা হয়েছে। খাল থেকে ফাতেমা নামের এক নারীর লাশ দেখে পুলিশ কে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছার পর স্বামীর নাটক আর বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। বেরিয়ে আসে স্ত্রীকে হত্যার রহস্য। উদ্ধার করা হয়নি স্বামীর ব্যবহৃত স্ত্রী হত্যার কাজে ব্যবহৃত অস্ত্র।

হত্যা ও এজাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করে ঈদগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: গোলাম কবির জানান, খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছে ব্রিজ এর নিচে খাল থেকে দেহ পড়ে থাকতে দেখি। এ সময় গৃহবধূর শরীরের কাপড় এলোমেলো অবস্থায় পড়ে ছিল। প্রতিবেশী ও নিহত ফাতেমার পরিবারের লোকজনের কাছ থেকে জিজ্ঞাসাবাদের পর গৃহবধূর স্বামীকে সন্দেহ হয়।

স্বামী মিজানসহ তিন জনের বিরুদ্ধে এজাহার পেয়ে পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে দিলদার বেগমকে গ্রেফতার করে। পলাতকদের গ্রেফতারে প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এ হত্যার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের জন্যে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ করেন ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসী।