মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

৪২ কোটি মূল্যের এক সাথে ১৪ লক্ষ ইয়াবা টেবলেট উদ্ধার এবং ইয়াবা বিক্রির ১ কোটি ৭০ লক্ষ ৬৮ হাজার ৫০০ নগদ টাকা উদ্ধারের মামলার বিচার শুরু হয়েছে। রোববার ২২ জানুয়ারি কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল এর আদালতে মামলাটির চার্জ (অভিযোগ) গঠনের মাধ্যমে বিচারকাজ শুরু হয়। একইসাথে আগামী ৫-৭ ফেব্রুয়ারী পর পর ৪ দিন মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আদালতে দিন ধার্য্য করা হয়েছে। পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম চার্জ গঠনের সময় আদালতকে সহায়তা করেন।

একই আদালতের নাজির বেদারুল আলম এ তথ্য জানিয়েছেন।

ইতিহাসের সর্ববৃহৎ ইয়াবা ও নগদ টাকা উদ্ধারের এ মামলায় ৫ জন আসামীর বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়েছে। তারমধ্যে, ৪ জন আসামী চার্জ গঠনের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তারা হলো : নজরুল ইসলাম এর পুত্র জহুরুল ইসলাম প্রকাশ ফারুক (৩৪), মোজাফফর আহমদ এর পুত্র নুরুল আমিন প্রকাশ বাবু (৪০), আবুল হোসেনের পুত্র আবুল কালাম (৪৮) এবং আবুল কালাম এর পুত্র শেখ আবদুল্লাহ (১৯)। একজন আসামী পলাতক রয়েছে। উপস্থিত আসামীদের সকালের বাড়ি কক্সবাজার পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর নুনিয়াছটায়। পলাতক আসামী ছৈয়দ আলম কক্সবাজারের মোছনী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের শরনার্থী।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ :
২০২১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারী বেলা ২ টার দিকে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ (গোয়েন্দা বিভাগ) এর একটি টিম কক্সবাজার সদর উপজেলার চৌফলদন্ডী-খুরুস্কুল সংযোগ সেতুর উত্তরে ভারুয়াখালী খালে একটি কাঠের তৈরি বোট আটক করে। বোট থেকে জহুরুল ইসলাম প্রকাশ ফারুক ও নুরুল আমিন প্রকাশ বাবুকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং রোহিঙ্গা সৈয়দ আলম পালিয়ে যায়। ধৃত আসামীদের দেখানো মতে উক্ত বোট তল্লাশি করে ৪২ কোটি টাকা মূল্যের ১৪ লক্ষ পিচ ইয়াবা টেবলেট উদ্ধার করা হয়।

পরে আসামীদ্বয়ের স্বীকারোক্তি মতে, ২০২১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারী ৫ টা ৩৫ মিনিটের দিকে কক্সবাজার শহরের উত্তর নুনিয়া ছটার আাসমী জহুরুল ইসলাম প্রকাশ ফারুক ও তার আত্মীয়ের বাড়ি থেকে ইয়াবা বিক্রির ২টি বস্তাভর্তি নগদ ১ কোটি ৭০ লক্ষ ৬৮ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। সেখান থেকে আসামী আবুল কালাম এবং আবুল কালাম এর পুত্র শেখ আবদুল্লাহ কে গ্রেপ্তার করা হয়।

এ ঘটনায় কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ (গোয়েন্দা বিভাগ) এর ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর থানায় ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে জহুরুল ইসলাম প্রকাশ ফারুক, নুরুল আমিন প্রকাশ বাবু, আবুল কালাম ও শেখ আবদুল্লাহ এবং অজ্ঞাত আরো ৭/৮ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করা হয়। যার কক্সবাজার সদর থানা মামলা নম্বর : ২৯/৯০।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) কক্সবাজার সদর থানার এসআই এস.এম শাকিল হাসান ২০২২ সালের ১২ ডিসেম্বর ৩২ জনকে সাক্ষী করে আমলী আদালতে মামলাটির চার্জশীট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন। আদালতে চার্জশীট দাখিলের মাত্র একমাস পর মামলাটি বিচারের জন্য কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল এর আদালতে রোববার চার্জ গঠন (অভিযোগ) করা হয়।