হাছান মাহমুদ সুজন, কুতুবদিয়া:

দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ায় সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের জনগুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম আজম সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে রাস্তার দু’পাশ দখল করে যত্রতত্র রাখা হচ্ছে বস্তাভর্তি লবণ । এতে লবণাক্ত পানি ছড়িয়ে দু’পাশের মাটি ক্ষয়ে সড়কটির বেশ কিছু অংশ দিন দিন সংকীর্ণ হয়ে আসছে । বিশেষ করে ধুরুং বাজার থেকে আকবর বলী পাড়া জেটি ঘাট পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার সড়কের খুবই দুরবস্থা । সংকীর্ণ ওই স্থান সমূহে পথচারীদের ভোগান্তি তো বাড়ছেই ! যানবাহন চলাচলেও নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিসহ প্রত্যহ ঘটছে আকস্মিক দূর্ঘটনা ।

জানা যায়, বিগত কয়েক বছর সাগরের পানির স্রোতে জনগুরুত্বপূর্ণ এ আজম সড়কের উত্তরাংশে ব্যাপক ভাঙ্গন হয়েছে । সে সাথে প্রতিনিয়ত লবণাক্ত পানি ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাস্তার দু’পাশ ভেঙ্গে ক্রমেই ছোট হয়ে আসছে। দীর্ঘদিন পথচারী ও যান চলাচলে চরম ব্যাঘাত হলেও তেমন কোনো ধরণের সংস্কার কাজ দৃশ্যমান হয়নি । এদিকে অপ্রত্যাশিত যে কোনো দূর্ঘটনা এড়াতে দ্রুত সড়ক পুনঃসংষ্কার পূর্বক প্রশস্ত করণ ও যত্রতত্র বস্তাভর্তি লবণ স্তুপাকারে রাখার বিষয়ে লবণ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া না হলে সড়ক দূর্ঘটনা ও জনভোগান্তির মাত্রা আরো বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন দ্বীপের সচেতন মহল ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার উত্তর ধুরুং দশ পরিবার রাস্তার মাথা থেকে উত্তরণ বিদ্যানিকেতন ও ফুলতলা পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার সড়কের দু’পাশ যেন লবণ ব্যবসায়ীদের দখলে । স্থানীয় প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে জেদ করে রাস্তার উপর লবণের বস্তা স্তুপাকারে রেখে দু’পাশের মাটি বিনষ্ট করছে । এতে রাস্তার দু”পাশ সংকীর্ণ হওয়ায় ভাঙ্গা অংশজুড়ে যাত্রীবাহী জীপ, সিএনজি ও অটোরিকশা মুখোমুখি পাশ কেটে চলাচল বা একটার সাথে আরেকটা ক্রস হতে পারে না । সড়ক সংকীর্ণতায় যাত্রীবাহী পরিবহন দু’লেইনে চলাচল বা ক্রসিং এর সময় বিভিন্ন বাধাবিঘ্নের সম্মুখীনসহ দীর্ঘক্ষণ ধরে রাস্তায় আটকে থাকতে হয় । এসব কারণে প্রত্যন্ত এ গ্রামেও রোজ তৈরি হয় যানজট । এতে যাতায়াতে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে গাড়ি চালক, যাত্রী ও পথচারীদের ।

জীপ চালক মোঃ জিয়া উদ্দিন বলেন, ধুরুং বাজার থেকে উত্তর দিকে আজম সড়ক এক সময় বেশ প্রশস্ত ছিল। তবে দু’পাশে এলোপাতাড়ি লবণের বস্তা রাখায লবণাক্ত পানিতে সড়কের দু’পাশ ভেঙ্গে ছোট হয়ে গেছে। সড়কের দু’পাশ সংকীর্ণতায় বর্তমানে উত্তর ধুরুং এর বেশ কিছু অংশে যাত্রীবাহী গাড়ি নিয়ে ছোট গাড়ি তথা রিকশা ও সিএনজিকে ক্রস করে গন্তব্য স্থানে যাওয়ার পথে প্রতিনিয়ত দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়তে হচ্ছে ।

স্থানীয় বেশ কিছু অটো-রিকশা ও সিএনজি চালক কক্সবাজার নিউজ ডট কম (সিবিএন) কে বলেন, রাস্তার দু’পাশে ভাঙ্গা অংশ বরাবর স্বাভাবিকভাবে বড় যানবাহনের সাথে ছোট ছোট গাড়ি গুলো ঠিকমতো ক্রসিং করতে পারে না । পাশ কেটে চলাচল বা ক্রসিং করতে গিয়ে মালামালবাহী মাহিন্দ্রা/ট্রলি ও জীপগাড়ির ধাক্কায় খাদে পড়ে ছোট-বড় দূর্ঘটনার ঘটনাও কম ঘটেনি ! মাঝেমধ্যে চালকে চালকে বাকবিতণ্ডাও হয় ।তাই এমন দুর্দশা থেকে পরিত্রাণ পেতে সত্বর সড়ক পুনঃসংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্টের নিকট জোর দাবী জানান তারা।

স্থানীয় বাসিন্দা ও পথচারীরা বলেন, রাস্তার দু’পাশ ভেঙ্গে ক্রমে ছোট হওয়ায় এখন ঝুঁকি নিয়ে হাঁটা বা চলাফেরা করতে হয় । মাঝেমাঝে ছোট বড় দূর্ঘটনাও ঘটে । তাই এ দূর্ভোগ থেকে রেহাই পেতে দ্রুত সড়ক সংস্কারের দাবী জানান তারা ।

এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের চকরিয়া সড়ক উপ-বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ দিদারুল ইসলাম বলেন, কুতুবদিয়া আজম সড়কের উত্তর ধুরুং ও বড়ঘোপ বাজারের পরে কিছু কিছু ঝুঁকিপূর্ণ অংশ সংস্কারের জন্য দু’টা টেন্ডার প্রক্রিয়ার মধ্যে একটা সম্পন্ন হয়েছে । আগামী এক মাসের মধ্যে ওই ঝুঁকিপূর্ণ অংশ সমূহে দ্রুত সংস্কার কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি।