দীপন বিশ্বাস, কক্সবাজার:
কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ উপকূলবর্তী ও গভীর সাগরে জলদস্যু আতঙ্ক বিরাজ করছে। জীবনের তাগিদে জেলেরা ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়তই সাগরে মাছ ধরতে যাচ্ছেন। গত কয়েকদিন ধরে সাগরে জলদস্যুদের আক্রমণ ভয়াবহ ভাবে বেড়েছে। দস্যুরা জেলেদের আহরিত মাছ, রশদপাতি, জাল, নগদ টাকাসহ অন্যান্য মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন আক্রমণের শিকার একাধিক ট্রলারের মাঝি। গত ৪ দিনে প্রায় ২৫টি ট্রলার দস্যুদের কবলে পড়ে জেলেরা সর্বস্ব হারিয়েছেন।
সর্বশেষ ২৭ ডিসেম্বর গভীর রাতে জলদস্যুদের আক্রমণের শিকার কক্সবাজারের দরিয়া নগর এলাকার ট্রলার মাঝি রফিক জানান, ২৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় তিনিসহ ৬জন ট্রলার নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে যান। রাত সাড়ে ১২টার দিকে উখিয়ার মলখালী চ্যানেলে জলদস্যুদের কবলে পড়েন। এসময় দস্যুরা ট্রলারের মাঝি কে? জিজ্ঞেস করেন। ভয়ে তিনি মাঝি পালিয়েছে বলে জানান। দস্যুরা এসময় তাদের ট্রলারে থাকা মাছ, রশদপাতি, নগদ টাকা, মোবাইল ফোন, জালসহ ইত্যাদি লুট করে নিয়ে যায়। এসময় তারা তাদের পাশে থাকা দরিয়ানগরের জাফর বদ্দার ও গফুর বদ্দারের ট্রলারেও হানা দিয়ে মাছ, জালসহ ইত্যাদি লুট করে নিয়ে যায়। দস্যুরা এসময় অনেক জেলেকেও মারধর করে এবং ৩/৪ ঘন্টা জিম্মি করে রাখে। পরে তাদের শুন্য হাতে ফেরত পাঠায়। রফিক মাঝি কান্না জড়িত কন্ঠে আরো বলেন, জীবন ফিরে পেয়েছি এটাই বড় কথা।
গত দু’দিন আগে জলদস্যুদের কবলে পড়া মনখালী এলাকার সেলিম মাঝি জানান, জলদস্যুদের অত্যাচারে সাগরে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি। মাছ আহরণের চেয়ে জীবনের মূল্য অনেক বেশি। তারা শুধু মাছ ও অন্যান্য জিনিষপত্র নিয়ে ক্রান্ত হয়না, জেলেদের মারধর ও এমনকি জীবনও শেষ করে দেয়।
দরিয়ানগর এলাকার ট্রলার মালিক জাফর আলম জানান, কোষ্টগার্ডের টহল অব্যাহত আছে। এরপরও দস্যুদের আক্রমণ থেমে নেই। এখন অনেক জেলে ট্রলার নিয়ে সাগরে যেতে চাচ্ছে-না। এ অবস্থায় অনেকের পরিবার আমাদের চালাতে হচ্ছে। তারা মাছ ধরতে না গেলে আমাদের বিপদ আরো বেশি। আমরাও খুবই কষ্টে আছি।