মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

কক্সবাজারের টেকনাফ পাইলট হাইস্কুল মাঠে সারেন্ডার করা ১০১ জন ইয়াবাকারবারীর পক্ষে ২ জন সাফাই সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। সোমবার ১৪ নভেম্বর কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল এর আদালতে এ সাফাই সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।

যারা সাফাই সাক্ষ্য দিয়েছেন তারা হলেন : টেকনাফের বাহারছরার শামলাপুর পুরানপাড়ার মাওলানা নাছির উদ্দিন ও মৃত খালেদা বেগম এর পুত্র বাহারছরা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা আজিজ উদ্দিন এবং টেকনাফ পৌরসভার জালিয়াপাড়ার মৃত মমতাজ উদ্দিনের পুত্র সাংবাদিক গিয়াস উদ্দিন ভুলু।

সাফাই সাক্ষীদ্বয় তাদের সাক্ষ্যতে তৎকালীন সকল বাস্তব পরিস্থিতি আদালতের কাছে অকপটে তুলে ধরেন। সাক্ষীদ্বয় থেকে আসামীদের পক্ষে জবানবন্দি নেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী, সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ, অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী প্রমুখ। পরে রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম ফরিদ সাফাই সাক্ষীদের জেরা করেন।

এরপর রাষ্ট্রপক্ষ মামলাটির যুক্তিতর্ক শেষে করেন। আসামী পক্ষ আংশিক যুক্তিতর্কের পর আদালত চুড়ান্ত যুক্তিতর্কের জন্য মঙ্গলবার ১৫ নভেম্বর দিন ধার্য্য করেন।

২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারী কক্সবাজারের টেকনাফ পাইলট হাইস্কুল মাঠে ১০২ জন ইয়াবাকারবারী আত্মসমর্পণ করে। আত্মসমর্পণকৃত ১০২ জন আসামীর মধ্যে কারাগারে থাকা একজন মৃত্যুবরন করে। কক্সবাজারের তৎকালীন পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বিপিএম (বার) এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ঐদিনের আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এমপি প্রধান অতিথি, তৎকালীন আইজিপি ড. জাবেদ পাটোয়ারী, কক্সবাজারের ৫ জন সংসদ সদস্য, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক সহ উর্ধতন কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

আত্মসমর্পণের পর তাদের কাছ থেকে ৩ লক্ষ ৫০ হাজার পিচ ইয়াবা টেবলেট এবং ৩০ টি দেশীয় তৈরি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে মর্মে উল্লেখ করে আত্মসমর্পণকারীদের বিরুদ্ধে টেকনাফ মডেল থানায় মাদক ও অস্ত্র আইনে ওসি (তদন্ত) এবিএমএস দোহা বাদী হয়ে পৃথক ২ টি মামলা দায়ের করেন। যার মাদক মামলা নম্বর- থানা : ২৭/২০১৯ ইংরেজি, জিআর : ৯৯/২০১৯ ইংরেজী (টেকনাফ)। এসটি : ৩৫৪/২০২০ ইংরেজি। অস্ত্র মামলা নম্বর : থানা : ২৬/২০১৯ ইংরেজি। জিআর : ৯৮/২০১৯ ইংরেজি (টেকনাফ), এসপিটি : ৭৩/২০২০ ইংরেজি। ইয়াবা ও অবৈধ অস্ত্র সমুহ টেকনাফের মহেশখালীয়া পাড়াস্থ বীচ হ্যাচারী নামক একটি পরিত্যক্ত একটি হ্যাচারী থেকে উদ্ধার করা হয় বলে মামলা ২ টির এজাহারে উল্লেখ করা হয়।

মামলায় রাষ্ট্র পক্ষে ২১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ এবং আসামীদের পক্ষে সাক্ষীদের জেরা করা হয়। আলামত প্রদর্শন, রাসায়নিক পরীক্ষা ফলাফল যাচাই, আসামীদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া সহ মামলাটি বিচারিক কার্যক্রম প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। রাষ্ট্র পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম ফরিদ।