হাফেজ মুহাম্মদ আবুল মঞ্জুর:
বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির আমীর, দেশের শীর্ষ আলেমেদ্বীন আল্লামা সরওয়ার কামাল আজিজী বলেছেন, আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়ার মরহুম প্রধান পরিচালক ও শায়খুল হাদীস, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির উপদেষ্টা আল্লামা মুফতি আব্দুল হালিম বোখারী রহ. ছিলেন তাফসির, হাদীস, ফিকহ, দর্শনসহ বিভিন্ন শাস্ত্রে অসাধারণ পাণ্ডিত্যের অধিকারী। তিনি ছিলেন, বাংলার আল্লামা তকী ওসমানী। বহুমুখী প্রতিভাধর এমন বিচক্ষণ আলিম, প্রাজ্ঞ হাদিস বিশারদ ও বিজ্ঞ ফকীহ খুবই বিরল। তিনি বর্তমান প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণাদায়ক এক কীর্তিমান ব্যক্তিত্ব।
তিনি ২৮ জুলাই ( বৃহস্পতিবার) বিকেলে চট্টগ্রামে “আল্লামা মুফতি আব্দুল হালিম বুখারী রহ. এর কর্মময় জীবন ও অবদান” শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন।

বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা শাখার উদ্যোগে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় আল্লামা আজিজী আরও বলেন, আল্লামা বোখারী রহ. ইসলামী রাজনৈতিক অঙ্গনেও ছিলেন, আকাবিরে আসলাফের নমুনা। তিনি তদানিন্তন পাকিস্তান আমলে জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে খতিবে আযম রহ. এর নির্বাচনী চৌকস সচিব ছিলেন। দীর্ঘ একযুগ নেজামে ইসলাম পার্টির সহ-সভাপতি এবং আমৃত্যু পার্টির উপদেষ্টা পদে অভিষিক্ত ছিলেন। নেজামে ইসলাম পার্টর মনোনীত প্রার্থী হিসেবে তিনি ১৯৯৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনে মিনার প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। রাজনৈতিক আলোচনায় তিনি পার্টির ঐতিহ্যকে স্মরণ করে বলতেন, “আমি এবং আমার পরিবার রক্ত-মাংসে নেজামে ইসলাম। আহলে হকের সত্যিকারের রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি; বাকী সব সংগঠন কোন না কোন ঘটনা প্রবাহে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে।
দেশবরেণ্য, চৌকস এ আলেমেদ্বীনের ইন্তেকালে আমরা ইলমী অঙ্গনের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র এবং একজন অকৃত্রিম অভিভাবককে চিরতরে হারিয়েছি।

এ আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আমীর মাওলানা মুহাম্মদ আলী কাসেমী, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা মঞ্জুরুল কাদের চৌধুরী, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আমীর, শায়খুল হাদীস আল্লামা জিয়াউল হোছাইন, কৈগ্রাম হেমায়েতুল ইসলাম মাদ্রাসার মুহতামিম আল্লামা আতাউল্লাহ আল-হোছাইনী, পার্টির সমাজ কল্যাণ সচিব মাওলানা এরশাদ বিন জালাল, সহ- আন্তর্জাতিক বিষয়ক সচিব মাওলানা মাহমুদুল হক, ছাত্র ও যুবসচিব অধ্যাপক নজরুল ইসলাম চৌধুরী, সংগঠন সচিব(চট্টগ্রাম বিভাগ) ইনআমুল হক কুতুবী, চট্টগ্রাম ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডশনের চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, সৌদিআরব রিয়াদ শাখার আমীর বুরহান উদ্দিন আল-রাজী, আরব আমিরাত কেন্দ্রীয় কমিটির নায়েবে আমীর মাওলানা এরফান বিন হালিম, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা নজির আহমদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা শোয়াইব সোলাইমানী।

অনুষ্ঠানে নেতৃবৃন্দ বলেন, তীক্ষ্ণ মেধা-প্রতিভার অধিকারী, আদর্শ উস্তায বোখারী সাহেব হুজুর রহ. শিক্ষকতা জীবনে হাজার হাজার আলেম তৈরি করার পাশাপাশি বহু ক্বওমি মাদ্রাসা পরিচালনার ক্ষেত্রে অনুসরণীয় অবদান রেখেছেন। আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিস (ক্বওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড) এর দীর্ঘকালের সেক্রেটারী জেনারেল থেকে ক্বওমি শিক্ষাধারার মানোন্নয়নে আমানতের সাথে সমুন্নত রেখে জাতির কর্ণধার তৈরির পথ সুগম করেছেন।

চট্টগ্রাম মহানগর আমীর মাওলানা ক্বারী ফজলুল করিম জিহাদীর সভাপতিত্বে, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আনোয়ার হোছাইন রব্বানীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, চট্টগ্রাম মহানগর নায়েবে আমীর মাওলানা হাফেজ মুহাম্মদ আলম, মাওলানা জয়নাল আবেদীন কুতুবী, দক্ষিণ জেলা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা হাবিবুল্লাহ কাসেমী, উত্তর জেলা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা দিদারুল আলম, লোহাগাড়া আমীর মাওলানা শোয়াইব, হাটহাজারী উপজেলা আমীর মাওলানা ক্বারী মুহাম্মদ ঈসা, ইসলামী ছাত্রসমাজ নেতা তারেকুল ইসলাম ও অলি উল্লাহ আরজু প্রমুখ ।

আলোচনা সভায় বক্তাগণ মজলুম আলেমদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দাবী করে বলেন, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী পার্টির যুগ্ম মহাসচিব, ইসলামী ছাত্রসমাজের সাবেক সফল কেন্দ্রীয় সভাপতি। তিনি কারা প্রকোষ্ঠে জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। রাজপথের এরকম বহু লড়াকু আলেম-ওলামাকে রিমান্ডসহ কারাগারে শারীরিক ও মানসিক টর্চারের মাধ্যমে জীবন শঙ্কার মুখে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। অবিলম্বে জুলুম-নির্যাতন বন্ধ করে সেই মজলুম আলেমদের মুক্তি দিতে হবে।

সভাশেষে মজলুম ওলামায়েকেরামের কারা ও রোগমুক্তি, অসুস্থ আলেমদের সুস্থতা ও মরহুম আকাবিরীনসহ আল্লামা মুফতি আব্দুল হালিম বোখারী রহ. এর মাগফিরাত কামনায় বিশেষ মুনাজাত করেন, আল্লামা মুফতি মুহাম্মদ আলী কাসেমী।