অনলাইন ডেস্ক: নোয়াখালীর ভাসানচরের রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে দালালের মাধ্যমে পালাতে গিয়ে সেতারা বেগম (৩০) নামে এক রোহিঙ্গা নারীর মৃত্যু হয়েছে।

রোববার বিকেলে সুবর্ণচর উপজেলার চর মোজ্জামেল গ্রামে তার মৃত্যু হয়।

এই ঘটনায় ওই নারীর মা নুর বাহার বেগম (৫০)-কে আটক করেছে পুলিশ।

চরজব্বার থানার ওসি জিয়াউল হক দ্য ডেইলি স্টারকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য রাত ৮টার দিকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

চরজব্বর থানার উপপুলিশ পরিদর্শক (এসআই) ইমরান সাজ্জাদ বলেন, ‘নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ১০ নম্বর ক্লাস্টারের এ/১৩ নম্বর কক্ষের বাসিন্দা নুর মোহাম্মদের স্ত্রী নুর বাহার বেগম তার মেয়ে সেতারা বেগমকে নিয়ে স্থানীয় এক দালালের মাধ্যমে পালিয়ে কক্সবাজারের টেকনাফ-উখিয়া আশ্রয় শিবিরে যাওয়ার জন্য গত ৩ দিন আগে নৌকায় উঠেন।’

নুর বাহার বেগমের বরাত দিয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘নৌকায় উঠার পর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তায় নিয়োজিত কোস্টগার্ড, নৌ বাহিনী ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতার কারণে তারা সুবর্ণচরের ঘাটে নামতে পারেননি। ওই তিন দিন তারা নৌকার মধ্যেই ছিলেন। এ সময় তাদের কোন খাবার দেওয়া হয়নি। তীব্রশীতে মা মেয়ে অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। রোববার ভোর ৫টার দিকে দালালরা মা-মেয়েকে সুবর্ণচর উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চর মোজাম্মেল গ্রামে নদীর পাড়ে নামিয়ে দিয়ে পালিয়ে যান। সকালে স্থানীয় লোকজন মা-মেয়েকে দেখে তাদের সঙ্গে কথা বলে বুঝতে পারেন তারা ভাসানচর থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা। এরপর স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে খবর দিলে তিনি চৌকিদার পাঠিয়ে বেলা ২টার দিকে হাসপাতাল নেওয়ার পথে মেয়ের মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় ওই নারীর মাকে চরজব্বর থানা পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে।’

মোহাম্মদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহি উদ্দিন চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘তিনি মেয়েটির মায়ের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা ৮ জন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ভাসানচর থেকে পালিয়ে এসেছিলেন। তারা ৩ দিন নদীতে অভুক্ত অবস্থায় থেকে নদীর লবণাক্ত পানি পান করেছিলেন। এতে মা-মেয়ে অসুস্থ্য হয়ে পড়লে দালালরা তাদের নদীর পাড়ে নামিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়।’

চরজব্বার থানার ওসি মো. জিয়াউল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘লাশ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। ময়না তদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে। ময়না তদন্তের রিপোট হাতে পাওয়ার পর বোঝা যাবে সে কীভাবে মারা গেছে।’
– দ্য ডেইলি স্টার