পেকুয়া প্রতিনিধি:

আসন্ন ২৮ নভেম্বর ৩য় ধাপে সারাদেশের মত পেকুয়া উপজেলার ৬ ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রার্থীরা তাদের প্রতিক নিয়ে বেশ জোরেশোরে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছে।

তার মধ্যে পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নে ১৩জন প্রার্থী মনোনয়ন ফরম জমা দিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ গ্রহণ করলেও শেষ মূহর্তে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নাজেম উদ্দিন, বর্তমান চেয়ারম্যান মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিম ও ঢোল প্রতীকের প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান ইউনুছ চৌধুরী নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে স্থানীয়রা দাবী করেছেন স্বতন্ত্র দুই প্রার্থীর লড়াইয়ে নৌকা অনেক পিছিয়ে রয়েছে।

স্থানীয়দের সাথে কথা জানা গেছে, মগনামা ইউনিয়ন থেকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নাজেম উদ্দিন দীর্ঘ সময় আ’লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত হয়ে রাজনীতি করে গেছেন। সৎ আর স্বচ্ছ প্রার্থী হিসেবে পরিচিত হলেও আ’লীগের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ না হয়ে নির্বাচনী মাঠে না থাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের চেয়ে অনেকাংশে পিছিয়ে রয়েছেন।

তবে বর্তমান চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী বিগত ৫ বছর ধরে সরকারি সহায়তা ও ব্যক্তিগত সহায়তায় গ্রামীণ অবকাঠামোর ব্যাপক উন্নয়ন করায় এলাকার সাধারণ জনগণের কাছে বিশেষ স্থান করে নিয়েছেন। বিগত সময়ে অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে সরকারি সহায়তা ছাড়াও ব্যক্তিগত তহবিল থেকে অধিকাংশ পরিবারে আর্থিক ও ত্রাণ সহায়তা দেয়ায় মানবিক চেয়ারম্যান হিসেবে পরিচিত লাভ করেছেন।

এছাড়াও মগনামার অসহায় আলেম ওলামাদের জন্য নিজ উদ্যোগে তৈরি করেছেন তহবিল ফান্ড। দান করেছেন প্রতিটি মসজিদ আর মাদ্রাসায়। জমি ক্রয় আর আর্থিক অনুদান দিয়ে মগনামার সুনাম অর্জনকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শাহ রশিদিয়া সিনিয়র মাদ্রাসাকে তৈরি করেছেন আধুনিকতার ছোয়ায়। তৈরি করেছেন আধুনিকমানের হেফজখানা। অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও রেখেছেন প্রশংসীয় সহযোগিতা। আর্থিক ও ত্রাণ সহায়তায় অগ্রভাগে ছিলেন অসহায় আ’লীগের দলীয় নেতাকর্মী থেকে শুরু করে মধ্যবিক্ত পরিবারে পৌঁছে দিয়েছেন সহায়তা।

সবচেয়ে বেশি দৃষ্টি আকর্ষণ হয় বিগত সময়ে করোনা মহামারীর সময় আর্থিক ও ত্রাণ সহায়তা সবার নজর কাটে। সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন আলেম ওলামো, শিক্ষক, সরকারি চাকরিজীবী, মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর প্রতি। এছাড়াও অধিকাংশ বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছেন এই সব সহায়তা।

তিঁনি গ্রাম আদালতের বিচার ব্যবস্থায় আনেন বেশ পরিবর্তন। বিচার ব্যবস্থা বাণিজ্যমুক্ত করতে ইউনিয়ন পরিষদের সকল সদস্যদের মতামতকে দিয়েছেন অধিক প্রধান্য। স্থানীয় বিজ্ঞজনকেও গ্রাম আদালতের বিচার ব্যবস্থা পূর্ণাঙ্গ করতে দিয়েছেন গুরুত্ব। নিজ তহবিলের টাকা খরচ করে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়কে করেছেন আধুনিক মানের। গড়ে তুলেছেন সবুজ প্রকৃতির গ্রীণ পার্ক। বিনোদনের জায়গা হিসেবে এটি জেলার প্রধানস্থান দখল করবে এমন মতামতও দিয়েছেন অনেকে। যার কারণে নির্বাচনের প্রথম দিন থেকে শুরু করে আজ অবধি সর্বস্থরের হাজার হাজার নারী পুরুষ নিজ উদ্যোগে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়ে তাঁকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। বিপুল ভোটে বিজয়ী করতে রাতদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছে তারা। মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী আগামী ২৮ নভেম্বর বিপুল ভোটে বিজয়ী হবেন এমন কথাও বলেছেন অনেকে।

এদিকে মামলার গ্রেফতারী পরোয়ানা থাকায় গ্রেফতার হয়ে কারাগার থেকে বের হয়ে ১৩ নভেম্বর নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ গ্রহণ করেন। বিগত সময়ে এ ইউনিয়ন থেকে তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেও বিগত ৫ বছর সাধারণ জনগণের সাথে কোন ধরণের যোগাযোগ রক্ষা করেনি। মগনামার আলোচিত জয়নাল হত্যায় এক আসামীর স্বীকারোক্তিমতে পরিকল্পাকারী হিসেবে চিহৃিত হয়েছেন। এছাড়াও তিনি চেয়ারম্যান থাকাকালে সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আশরাফুল মজিদকে প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ করে নির্যাতন করার মত অভিযোগসহ বহু অপরাধে মামলা থাকায় সাধারণ জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন। তবে জয়নাল হত্যা মামলার আসামীরা ইউনুছের পক্ষ নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর পাশাপাশি পারিবারিক বিরোধের জের ধরে শাফায়েত আজিজ রাজু ও শহিদুল মোস্তফা গত তিনদিন ধরে ইউনুছের পক্ষ নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিচ্ছে। তাদের অনুসারীর একটি অংশের ভোট ইউনুছের পক্ষ চলে যাওয়ায় বর্তমান চেয়ারম্যানের সাথে কিছুটা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছে এমন মত দিয়েছেন সাধারণ জনগণ।

এবিষয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিম বলেন, মাদক ব্যবসায়ী আর সন্ত্রাসীদের প্রশ্রয় আমি দেয়নি। অপরাধীরা সব সময় আমার বিপক্ষে থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তবে সাধারণ জনগণ উন্নয়ন আর শান্তির পক্ষে মোটরসাইকেল প্রতীকে ভোট বিপ্লব ঘটাবে ইনশাল্লাহ। তবে সব সময় সন্ত্রাসীদের ভয়ে আমি আতংকে থাকি। বিভিন্ন মাধ্যমে আমার প্রাণে হত্যার করার মত পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এছাড়াও কৌশলে ফাঁসানোরও চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। জনগণের ভালবাসা আমার কাছে আছে ইনশাল্লাহ জনগণ তার প্রতিদান আগামী ২৮ নভেম্বর দিবে।