প্রেস বিজ্ঞপ্তি:
পরিবেশ, জলবায়ু, মানবাধিকার ও টেকসই উন্নয়ন বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ❝সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্ট, হিউম্যানরাইটস এন্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরাম (সিইএইচআরডিএফ)❞এর তৃণমূল ইউনিট কুতুবদিয়া সার্কেল কর্তৃক গত ২১,২২ ও ২৩ অক্টোবর ৩ দিন ব্যাপী কুতুবদিয়ার ৬ টি ইউনিয়ন এবং ৩ টি ক্যাম্পাসে সর্বমোট ১৬ টি জলবায়ু প্রচারাভিযান কর্মসূচি সম্পন্ন করা হয়। কুতুবদিয়া সার্কেল এর ডেপুটি কো-অর্ডিনেটর জনাব আবু সালেহ’র সভাপতিত্বে এসব কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিইএইচআরডিএফ এর সম্মানিত প্রধান নির্বাহী জনাব ইলিয়াস মিয়া এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিইএইচআরডিএফ এর সম্মানিত পরিচালক ও সমন্বয় বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়ক জনাব আব্দুল মান্নান রানা। আরো উপস্থিত ছিলেন সিইএইচআরডিএফ এর ফাইন্যান্স সেক্রেটারি জনাব ইলিয়াস রিয়াদ, শরনার্থী ও অভিবাসন সম্পাদক জায়েদ ইকবাল রাকিব। এছাড়াও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ সচেতন নাগরিকগণ উপস্থিত ছিলেন। ২১,২২ ও ২৩ অক্টোবর মোট ৩ দিনে কুতুবদিয়ার ৬ টি ইউনিয়নে ১২টি এবং ৩ টি ক্যাম্পাসে ৪ টি সহ মোট ১৬ টি জলবায়ু প্রচারাভিযান শীর্ষক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়।সিইএইচআরডিএফ কুতুবদিয়া সার্কেল কর্তৃক আয়োজিত ৩ দিন ব্যাপী উক্ত জলবায়ু প্রচারাভিযান কর্মসূচির মাধ্যমে কুতুবদিয়ার অন্তত ২৫০০ সাধারণ মানুষে এবং ৫০০ শিক্ষার্থীর মাঝে জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে ধারণা দেওয়া সম্ভব হয়েছে। এছাড়া নতুন করে ২০০ জলবায়ু কর্মী সিইএইচআরডিএফ এর সাথে সংযুক্ত করতে সক্ষম হয়েছে সিইএইচআরডিএফ কুতুবদিয়া সার্কেল।

এসব কর্মসূচিতে স্থানীয় বাসিন্দাগণ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কুতুবদিয়ার বেশকিছু সংকট তুলে ধরেছেন। কুতুবদিয়ার সর্বদক্ষিণের গ্রাম তাবালের চর এবং সর্বোত্তরের গ্রাম আকবরবলি পাড়ার সাধারণ মানুষ প্রতি বছর তাদের কৃষি জমি,বসত বাড়ি,পুকুরের মাছ,ও হাস-মুরগীসহ বহু সম্পদ বঙ্গোপসাগরে জোয়ারের পানিতে হারিতে হয় বলে জানান। এছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে পানির সংকট তিব্র আকার ধারণ করেছে বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দাগণ। যার ফলে শিশু, গর্ভবতী মা সহ অনেকেই নানান ধরনের চর্ম রোগে আক্রান্ত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এছাড়াও বসত বাড়ি হারিয়ে অনেকেই কর্মসংস্থান শূন্য হয়ে পড়াতে তাদের সন্তানের শিক্ষার উপর প্রভাব পড়ছে বলে জানান উত্তর ধুরুং,দক্ষিণ ধুরুং ও কৈয়ারবিল ইউনিয়নের প্রান্তিক নাগরিকগণ।এদিকে সিইএইচআরডিএফ এর একটি প্রতিনিধিদল সরজমিনে গিয়ে লেমশীখালী ও কৈয়ারবিল ইউনিয়নের এর মাঝামাঝি অঞ্চলের বেশ বড় একটি এলাকা ঘিরে খাওয়ার পানির চরম সংকট দেখতে পান।যেখানে টিউবওয়েলে পানির লেয়ার না পাওয়ার কারণে দীর্ঘ ৫/৬ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে দৈনিক প্রচুর অর্থ ব্যয়ের মাধ্যমে বড়ঘোপ ইউনিয়ন থেকে খাবার পানি সংগ্রহ করেন বলে জানান ভুক্তভোগীরা। এছাড়াও মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ এবং বাঁশখালি গণ্ডামারার কয়লা বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র থেকে যে পরিমাণ বিষাক্ত গ্যাস বাতাসে ছড়াবে তাতে কুতুবদিয়া উপজেলা অতিশীঘ্রই জনশূন্য দ্বীপে পরিণত হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দাগণ।

পরবর্তীতে কুতুবদিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, কুতুবদিয়া সরকারি কলেজ, কৈয়ারবিল আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ও ধুরুং আদর্শ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে সিইএইচআরডিএফ “জলবায়ু সংলাপ” কর্মসূচি সম্পন্ন করেন। এতে আগামীর কুতুবদিয়া কতটা ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে চলছে এবং তা প্রশমণ করতে শিক্ষার্থীদের করণীয় কি হতে পারে সে সম্পর্কে সম্যক ধারণা প্রদান করেন সিইএইচআরডিএফ এর পরিবেশবিদ গণ।