মোঃ মিজানুর রহমান কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) প্রতিনিধিঃ দেশের বাজারে আগাম আলু উপহার দেয়া অঞ্চল হিসেবে খ্যাত নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলা। কিন্তু চলতি বছর আশ্বিনা বৈরী আবহাওয়ায় বিপাকে পড়েন এ এলাকার আগাম আলু চাষিরা। সেই ক্ষত কাটিয়ে নতুন উদ্যমে শুরু করেন এর চাষাবাদ। সেই রোপণকৃত আলু পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক।
এ বছর উপজেলায় ৬হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ শুরু হয়েছে। শীত পড়তে শুরু করায় আলুর বাম্পার ফলন হবে বলে এমনটাই আশা কৃষকের। উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে মাঠের পর মাঠ জুড়ে এখন আলু গাছের সবুজ পাতার রঙে মুখরিত ফসলের মাঠ। প্রতিটি মাঠে এখন শুধু সবুজ রঙের চোখ ধাঁধাঁলো বর্ণীল সমারোহ। ভোরের বিন্দু-বিন্দু শিশির আর সকালের মিষ্টি রোদ ছুঁয়ে যায় সেই সবুজ পাতাগুলোকে। অপরুপ প্রকৃতির দৃশ্যের মিতালিতে কৃষাণ-কৃষাণীর ব্যস্ততা সত্যিই যেন মনোমগ্ধকর।
কৃষি বিভাগ ও কৃষকরা জানায়,অগ্রহায়ণ পৌষ মাস জুড়ে চলবে দ্বিতীয় ধাপে আলু রোপণ। এ কর্মব্যস্ততার থাকবে পৌষ মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত।
গতকাল রবিবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকরা কেউ কেউ আগাছা পরিষ্কার,রাষায়নিক সার প্রয়োগ, সেচ, ছত্রাক, রোগ-বালাইয়ের হাত থেকে ফসল বাঁচাতে কীটনাশক স্প্রেসহ টপ ড্রেসিং (আলু গাছের সারিতে মাটি তুলে দেয়া ও সরিয়ে দেয়ার কাজ) করছেন। কৃষকরা জানায়, বিগত বছরের সফলতার ধারাবাহিকতায় এবারো আগাম আলুর বাজার ধরার আশায় আশ্বিন মাসে প্রথম সপ্তাহ থেকে আলু রোপণে মাঠে কোমর বেঁধে নেমে পড়েন। কিন্তু আশ্বিনা বৃষ্টিপাত সে স্বপ্ন ভঙ্গ করে দেয়। পরে দ্বিতীয়- তৃতীয় দফায় আলু রোপণ করার পর শীত কম পড়ায় ও কুয়াশা না থাকায় আলু গাছে বাম্পার ফলন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এতে কৃষকের মুখে ফুটে উঠেছে পরিতৃপ্তির হাসি। তবে বাজার দর ঠিক থাকলে এ ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব। উপজেলার নিতাই গাংবের আলুচাষি আশেক উদ-দৌলা, পুটিমারী কালিকাপুরের আতিকুল, দুরাকুটি পশ্চিম পাড়ার শামীম হোসেন বাবু, কিশোরগঞ্জ সদর যদুমণী গ্রামের কৃষক মোস্তফা বলেন, এ বছর আগাম আলু চাষ করতে গিয়ে বিড়ম্বনার পড়তে হয়েছে। বৃষ্টিতে আলু পচে যাওয়ায় দ্বিতীয়বার জমিতে আলু রোপণ করতে ধকলসহ খরচও হয়েছে দিগুণ। প্রতি বিঘা জমিতে ব্যয় হয়েছে ২৫ থেকে ৩০হাজার টাকা। তারা কেউবা ১০বিঘা থেকে ২৫বিঘা করে জমির আলু পরিচর্যা করছে। বাম্পার ফলন ও সঠিক বাজার মূল্য না পেলে লোকশানের মুখে পড়বেন বলে তারা জানান।
উপজেলা কৃষি অফিসার হাবিবুর রহমান বলেন,বৈরী আবহাওয়ায় আগাম আলু প্রাথমিক ভাবে কিছুটা ক্ষতি হলেও পুণরায় আলু রোপণ করে বাম্পার ফলন ও সঠিক বাজার মূল্য পেয়ে লাভবান হবেন। আর কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের যথাযথ পরামর্শ ও পরিচর্যার বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে।