বলরাম দাশ অনুপম:
দুয়ারে কড়া নাড়ছে দেবী দুর্গার আগমনী বার্তা। আর মাত্র ৩ দিন পরেই অনুষ্ঠিত হবে সনাতনীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ‘দুর্গাপূজা’। এবার জেলার মোট ৩০২টি পূজা মন্ডপে এই দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। শেষ মুহুর্তে দেবী দুর্গাকে রাঙাতে রঙ-তুলিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। এ ব্যস্ততা শুধু প্রতিমা তৈরির নয়, নেপাল ভট্টাচার্য্য ও মিল্টন-বাবুলদের এ ব্যস্ততা করোনার ক্ষত সারানোরও!

সরেজমিন শহরের সরস্বতী বাড়িসহ বেশ কয়েকটি মন্ডপে গিয়ে দেখা গেছে, মৃৎশিল্পীদের ব্যস্ততা। তাদের নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় জীবন্ত হয়ে উঠছে দেবী দুর্গা। একইসঙ্গে চলছে লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক ও গণেশের প্রতিমার ফিনিশিং। নানা রঙে দৃষ্টিনন্দন সাজে সাজিয়ে তোলা হয়েছে প্রতিমা গুলোকে। উৎসুক অনেক দর্শনার্থী ভিড় করছেন এসব প্রতিমা তৈরির কারখানাসহ মন্ডপে।

মৃৎশিল্পীরা জানান, প্রথমে খড় দিয়ে প্রতিমার কাঠামো তৈরি করে দেওয়া হয় মাটির প্রলেপ। তারপর শুকিয়ে করা হয় ফিনিশিং। এরপর দেওয়া হয় সাদা রঙ। সাদা রঙ শুকালে বিভিন্ন রঙে সাজিয়ে তোলা হয় প্রতিমা। মৃৎশিল্পীরা আরও জানান, প্রতিমার ৯০ ভাগ কাজ প্রায় শেষ। বাকি কাজ শেষ হয়ে যাবে। এরপর অর্ডার অনুযায়ী বুঝিয়ে দেওয়া হবে প্রতিমা। গতবছরের করোনার ক্ষতি এবার কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছেন বলে তারা উল্লেখ করেন।

মৃৎশিল্পীরা অভিযোগ করেন, গতবছর করোনার কঠিন সময়ে কেউ তাদের পাশে দাঁড়াননি। ওই সময়টাকে ভীষণ কষ্টে কেটেছে তাদের জীবন। পঞ্জিকা অনুযায়ী, আগামী ৬ অক্টোবর (বুধবার) শুভ মহালয়ার মধ্যে দিয়ে শুরু হয়েছে দেবী পক্ষের। আর এই মহালয়ার দিন থেকে শুরু হয়েছে পূজার ক্ষণগণনা। ১১ অক্টোবর (সোমবার) ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হবে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। ১৫ অক্টোবর (শুক্রবার) দশমীতে বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হবে পাঁচদিন ব্যাপী শারদীয় এই উৎসব।

শহরের সরস্বতী বাড়ির মৃৎশিল্পী মিল্টন ভট্টাচার্য্য বলেন, গতবছরের মতো এবারও শঙ্কা নিয়ে প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু করি। প্রায় ২০ টির মতো প্রতিমার অর্ডার পেয়েছি। প্রতিমার কাজ বলতে গেলে শেষ পর্যায়ে। এখন শুধু প্রতিমাকে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি এডভোকেট রনজিত দাশ ও সাধারণ সম্পাদক ট্রাস্টি বাবুল শর্মা জানান, এবার জেলার মোট ৩০২টি মন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এরমধ্যে ১৪৯টি প্রতিমা ও ১৫৩টি ঘট পূজার মন্ডপ।