সংবাদদাতা :

প্রয়োজনীয় শ্রেণী কক্ষ ও অবশিষ্ট বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ এবং বিদ্যালয়টিতে কর্মরত শিক্ষক- শিক্ষিকাদের মাসিক হারে সম্মানি প্রদানের জন্য মাননীয় পার্বত্য বিষয়ক মন্ত্রী মহোদয় ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মহোদয়ের এর সুদৃষ্টি কামনা করছেন এলাকাবাসী ও অভিভাবক মহল।

শিক্ষকদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও আন্তরিক সহযোগিতায় বান্দরবান পার্বত্য অঞ্চলের লামার দুর্গম পাহাড়ি শিক্ষা বঞ্চিত পিছিয়ে পড়া ধুইল্যাপাড়া নামক গ্রামে শিক্ষা বিস্তারে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে ৪ জন শিক্ষকের হাত ধরে।
কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে যাদের পরিশ্রমে এই দুর্গম এলাকায় শিক্ষার আলো ছড়িয়ে পড়ছে তাদের নেই কোন বেতন-ভাতা বা সম্মানি।

শুধু যে মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষকেরা কষ্টে আছে তা নয় দুর্গম পাহাড়ের ধুইল্যাপাড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই পর্যাপ্ত পরিমান অবকাঠামো,সুপেয় পানির ব্যবস্হা,স্যানিটেশন,পাচ্ছে না ছাত্র ছাত্রীরা উপবৃত্তি ফলে স্কুল পরিচালনা করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে এবং ব্যাহত হচ্ছে শ্রেণি কর্যক্রম।
এমতাবস্থায় সরকারি কিংবা বেসরকারি সহযোগিতা কামনা করেছেন অভিভাবক ও স্হানীয় সচেতন মহল।

বান্দরবান পার্বত্য জেলা লামা উপজেলার অন্তর্গত সরই ইউনিয়নের কেয়াজুপাড়া থেকে অন্তত ৫ কিলোমিটার উত্তরে ১৯৯৮ সালে তৎকালীন ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোহাম্মদ আলী সিকদারের সহযোগিতায় অবহেলিত এলাকার কোমলমতি শিশুদের মাঝে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দেওয়ার প্রত্যয়ে স্হানীয় এক কৃষকের দানকৃত.৪০ শতক জায়গার উপর বিদ্যালয়টি যাত্রা শুরু করেন।

এরই ধারাবাহিকতায় আজ প্রায় ২১ বছর অতিক্রম হচ্ছে এই বিদ্যালয়টি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনসহ ৪ জন শিক্ষক শিক্ষিকাদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় দিন দিন শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ১৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব মোহাম্মদ আলী বলেন, ধুইল্যাপাড়া স্কুলটি বেসরকারিভাবে পরিচালিত হওয়ায় রয়েছে নানা সমস্যা।নেই শিক্ষক শিক্ষিকাদের বেতন, পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানির অভাব,স্যানিটেশন ব্যবস্হার সমস্যা ও বিদ্যুৎ সরবরাহের অভাবে ব্যাহত হচ্ছে শ্রেণি কার্যক্রম।আবার উপবৃত্তির টাকা না পাওয়ায় দুর্গম এলাকার দরিদ্র বাবা মায়ের স্বল্প আয়ে ছেলে মেয়েদের লেখা পড়ার খরচ সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এমতাবস্থায় আমি বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ এর  চেয়ারম্যান  ক্যাশৈহ্লা এর একান্ত সহযোগিতা কামনা করছি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জানান- অত্র বিদ্যালয়ে আমি সহ ৪ জন শিক্ষক দীর্ঘ দিন থেকে সম্পূর্ণ বিনা বেতনে খেয়ে না খেয়ে অতি কষ্ট করে দুর্গম এলাকার কোমলমতি ছেলে মেয়েদেরকে সু- শিক্ষিত করে গড়ে তোলার লক্ষে শিক্ষাকার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।
অথচ গত ৯ জানুয়ারি ২০১৩ সালের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ২৬১৯৩ টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ ঘোষনার আলেকে বিদ্যালয়টি ৩য় ধাপে জাতীয়করণের জন্যে ২০১৩ সালে জেলা- উপজেলার জাতীয়করণ সংক্রান্ত কমিটির পক্ষ থেকে সরেজমিন পরিদর্শন করে অধিদপ্তরে সুপারিশ করা হয়। কিন্তু দুর্ভগ্যবশত বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ থেকে বাদ পড়ে,যার ফলে আমারা বিনাবেতনে খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করেও স্কুল কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।

সরই ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ ফরিদুল আলম বলেন আমার ইউনিয়নের এই ধুইল্যাপাড়া গ্রামের অন্তত ৫ কিলোমিটারে মধ্যে কোন ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকায় অত্র বিদ্যালয়টির গুরুত্ব অপরিসীম। এই স্কুলের শিক্ষক/ শিক্ষিকারা সম্পূর্ণ বিনাবেতন স্কুল ফাঁকি না দিয়ে নিরলসভাবে ছাত্র/ছাত্রীদের মাঝে পাঠদান দিয়ে যাচ্ছেন।

আমি সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যাতে বিদ্যালয়টি সরকারিকরণের আওতায় আসে। এবং সরকারেরও পাশাপাশি দেশের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।

এমতাবস্থায় স্কুল কার্যক্রম যাতে সুচারুভাবে চালিয়ে নিতে পারে সে জন্য একটি ভবন ও শিক্ষকদের মাসিক হারে সম্মানি প্রদানে পার্বত্য বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সম্মানিত চেয়ারম্যান মহোদয় এর সহযোগিতা ও সু-দৃষ্টি কামনা করেন শিক্ষক, এলাকাবাসী ও অভিভাবক মহল।

উল্লেখ্য, ইতিমধ্যে গত ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের  চেয়ারম্যান  ক্যাশৈহ্লা  এর আন্তরিকতায় এবং জেলা পরিষদ সদস্য ফাতেমা পারুল এর প্রচেষ্টায় ৩৩০ ফুট দৈর্ঘ্যের বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করা হয়, এখনো ২৫০ ফুট মত বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ বাকী আছে।