আবদুর রশিদ, নাইক্ষ্যংছড়ি;
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার দায়িত্ব গ্রহণের পর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় দৃশ্যমান পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দীর্ঘদিনের স্থবিরতা কাটিয়ে রোগীসেবা, শৃঙ্খলা ও তদারকিতে নতুন গতি এসেছে বলে জানিয়েছেন সেবাগ্রহীতা ও সংশ্লিষ্টরা।
হাসপাতালে নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়া, ওয়ার্ড ও হাসপাতাল পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখা, জরুরি বিভাগে দ্রুত সাড়া দেওয়া এবং রোগীদের সঙ্গে দায়িত্বপ্রাপ্তদের আচরণে আগের তুলনায় স্পষ্ট উন্নতি দেখা যাচ্ছে। এতে স্থানীয় মানুষের আস্থাও ধীরে ধীরে ফিরে আসছে বলে জানান রোগী ও স্বজনরা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, প্রয়োজনের তুলনায় নার্সিং জনবল মোটামুটি পর্যাপ্ত থাকলেও চিকিৎসক সংকট এখনো বড় চ্যালেঞ্জ। অনুমোদিত পদ থাকলেও সব পদে চিকিৎসক নিয়োগ না থাকায় বহির্বিভাগ ও অন্তর্বিভাগ উভয় সেবায় চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবুল মনজুর বলেন, “চিকিৎসক সংকট একটি বাস্তব সমস্যা হলেও এটি দীর্ঘস্থায়ী হবে না। সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। দ্রুত শূন্য পদগুলোতে চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হবে বলে আশ্বাস পাওয়া গেছে। জনবল পূর্ণতা পেলে স্বাস্থ্যসেবার মান আরও উন্নত হবে।”
তিনি আরও জানান, ওষুধ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্যসেবা ও পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। জরুরি বিভাগের ২৪ ঘণ্টার সেবা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি দুর্গম গ্রামাঞ্চলের জন্য আউটরিচ কার্যক্রম সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, উপজেলা প্রশাসন স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নে আন্তরিকভাবে কাজ করছে। চিকিৎসক সংকট নিরসনে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় অব্যাহত রয়েছে এবং জনগণকে সর্বোচ্চ সেবা দেওয়াই প্রশাসনের অগ্রাধিকার।
স্থানীয় রোগী ও স্বজনদের প্রত্যাশা—দ্রুত চিকিৎসক সংকট কাটিয়ে উঠতে পারলে পার্বত্য এই দুর্গম অঞ্চলের মানুষের প্রধান ভরসা হয়ে উঠবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। সচেতন মহলের মতে, নিয়মিত তদারকি ও সময়মতো জনবল নিয়োগ নিশ্চিত হলে নাইক্ষ্যংছড়িতে একটি টেকসই ও মানসম্মত স্বাস্থ্যব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব।
