আবদুর রশিদ, নাইক্ষ্যংছড়ি;
মাদ্রাসা পড়ুয়া ইয়াছির আরমান (১২) নিখোঁজ হওয়ার পর কেটে গেছে ১৫ দিন। কিন্তু এতদিনেও তার কোনো সন্ধান মেলেনি। দিন গড়াচ্ছে, সপ্তাহ পেরিয়ে যাচ্ছে—তবু ফিরে আসছে না শিশুটি। অপেক্ষার প্রহর দীর্ঘ হতে হতে ভেঙে পড়েছে ইয়াছিরের পরিবার। মা-বাবার বুকফাটা আহাজারি আর আহ্বানে ভারী হয়ে উঠেছে ঘরবাড়ি। শোক ও হতাশার ছায়া নেমে এসেছে পুরো এলাকায়।
ইয়াছির রামু উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর বড়বিল টেইক্কা হাজীরপাড়া গ্রামের কোরবান আলী ও ছালেহা আক্তারের দ্বিতীয় সন্তান। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী আবদুর রহমান ইবনে আউফ রহমানিয়া মাদ্রাসার নূরানী বিভাগের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ইয়াছির পরিবার ও বন্ধুদের কাছে ভীষণ স্নেহের।
গত ৩ আগস্ট (রবিবার) সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাইশারী বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যায় ইয়াছির। নির্ধারিত সময়ে বাড়ি না ফেরায় পরিবার দিশেহারা হয়ে চারপাশে খোঁজ শুরু করে। আত্মীয়স্বজন ও পরিচিতদের খবর দেওয়া হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও প্রচার করা হয়। তবু কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরদিন নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।
নিখোঁজ শিশুর বাবা কোরবান আলী বলেন,
“আমার ছেলেকে কেউ হয়তো আটকে রেখেছে। এতদিনেও কোনো খবর নেই। মুক্তিপণও কেউ দাবি করেনি, কারও কাছ থেকে কোনো ফোনও আসেনি। আমরা দিশেহারা হয়ে পড়েছি।”
মায়ের বুকফাটা কান্না আর ভাইবোনদের নিরন্তর প্রতীক্ষা এখন চারপাশের বাতাসকে ভারী করে তুলেছে। গ্রামের মানুষও গভীর শোক ও উদ্বেগে দিন কাটাচ্ছেন।
এলাকার সাধারণ মানুষ প্রশাসনের কাছে দ্রুত শিশুটিকে উদ্ধারের জোর দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেন, “১৫ দিন হয়ে গেলেও কোনো খবর নেই। শিশুটিকে অক্ষত অবস্থায় পরিবারে ফিরিয়ে আনতে হবে।”
সময় যত গড়াচ্ছে, ইয়াছিরের পরিবারে অজানা আশঙ্কা ততই বাড়ছে। তাদের একটাই আকুতি—“যেভাবেই হোক আমাদের সোনামণিকে ফিরিয়ে দিন।”
